চন্দ্র দেব
চন্দ্র (টেমপ্লেট:Lang-sa, অর্থ "জ্বলজ্বলে" বা "চাঁদ") হলেন[১]টেমপ্লেট:Refn একজন হিন্দু দেবতা, চাঁদের অধিপতি। তিনি সুদর্শন, সুপুরুষ, দ্বি-বাহুযুক্ত ও তার এক হাতে অস্ত্র ও অন্য হাতে পদ্ম রয়েছে।[২] তিনি তার দশটি শ্বেত ঘোড়ার রথে চড়ে রাত্রে আকাশে উদিত হন৷ [৩] তিনি আরও অনেক নামে পরিচিত, যেমন: সোম, ইন্দু (উজ্জ্বল বিন্দু), অত্রিসুত (অত্রির পুত্র), শচীন, তারাধিপতি (নক্ষত্রের প্রভু),বজ্রজ্বালাপতি(অরুণাসূরের অসুরা বোনের স্বামী) ও নিশাকর (রাত নির্মাণকারী)।[৪] তার নামানুসারে সপ্তাহের একটি দিন হল সোমবার।
পরিচিতি

হিন্দু পুরাণ অনুসারে চন্দ্র অত্রির পুত্র ও সপ্তবিংশতী নক্ষত্রের ও বজ্রজ্বালা নামক অসুরার স্বামী॥ দক্ষের ২৭টি কন্যা ও অরুণাসূরের অসুরা বোনকে ইনি বিবাহ করেন। এর মধ্যে রোহিণী ছিলেন তাঁর প্রিয়তমা পত্নী। এই কারণে দক্ষের অন্যান্য কন্যারা দক্ষের কাছে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। দক্ষ প্রথমে চন্দ্রকে এরূপ পক্ষপাতিত্ব থেকে বিরত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরে ব্যর্থ হয়ে- চন্দ্রকে পুত্রকন্যাহীন ও যক্ষ্মারোগাগ্রস্ত হওয়ার অভিশাপ দেন। এই অভিশাপে ভীত হয়ে কন্যারা পিতাকে অভিশাপ ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করলে- দক্ষ বলেন যে,- চন্দ্র একপক্ষে ক্ষয়প্রাপ্ত হবেন এবং অন্য পক্ষে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে আগের রূপ পাবেন। চাঁদের এই দুই পক্ষ কৃষ্ণ ও শুক্ল নামে পরিচিত। মধ্যযুগীয় পুরাণ মতে, রাজসূয় যজ্ঞ করে চন্দ্র অত্যন্ত অহংকারী ও কামাসক্ত হয়ে পড়েন। ইনি দেবগুরু বৃহস্পতির স্ত্রী তারাকে অপহরণ ও ধর্ষণ করেন। এই কারণে এক যুদ্ধের সূচনা হয়। চন্দ্রে পক্ষে ছিলেন- দৈত্য, দানবাসুর ও দেবাসুর শত্রুরা। অন্যদিকে বৃহস্পতির পক্ষ নেন ইন্দ্রসহ অন্যান্য দেবতা। শেষ পর্যন্ত ব্রহ্মা এই যুদ্ধ নিবৃত্ত করেন। পরে তারাকে তাঁর স্বামী বৃহস্পতির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই সময় তারা অন্তঃসত্বা ছিলেন। বৃহস্পতির আদেশে তারা গর্ভত্যাগ করেন। ফলে যে পুত্র জন্মে- তার নাম রাখা হয় বুধ। ব্রহ্মা এই পুত্রের পিতা কে জিজ্ঞাসা করলে- তারা পুত্রের জনক হিসাবে চন্দ্রের নাম উল্লেখ করেন। পরে চন্দ্র পুত্রকে গ্রহণ করে তাঁকে আকাশে স্থাপন করেন। এই পুত্রই হলো বুধ গ্রহ।[৫]
মূর্তিতত্ত্ব
হিন্দু গ্রন্থে সোমের মূর্তি পরিবর্তিত হয়। সবচেয়ে সাধারণ হল যেখানে তিনি একজন সাদা রঙের দেবতা, তার হাতে একটি গদা রয়েছে, তিনটি চাকা এবং তিনটি বা ততোধিক সাদা ঘোড়া (দশ পর্যন্ত) সহ একটি রথে চড়েছেন।টেমপ্লেট:Sfn তার অন্য নাম গুলো হলো: অত্রিজ, অত্রিজাত, অত্রিনেত্রজে, অত্রিনেত্রপ্রসূত, অত্রিনেত্রপ্রভব, অত্রিনেত্রভব, অত্রিনেত্রভূ, অব্জ, অব্জদেব, অব্দিজ, অভিরূপ, অম্ভোজ, অর্ণবোদ্ভব, চন্দ্র, চন্দ্রদেব, চন্দ্রদেবতা।[৬]
চন্দ্র-দেবতা হিসেবে সোমকে বৌদ্ধধর্ম,[৭] এবং জৈনধর্মেও পাওয়া যায় ।[৮]
রাশিচক্র এবং ক্যালেন্ডার
হিন্দু ক্যালেন্ডারে সোমবার শব্দের মূল হল সোম।টেমপ্লেট:Sfn গ্রিকো-রোমান এবং অন্যান্য ইন্দো-ইউরোপীয় ক্যালেন্ডারে "সোমবার" শব্দটিও চাঁদকে উৎসর্গ করা হয়েছে।[৯] সোম হল হিন্দু রাশিচক্র ব্যবস্থার নবগ্রহের অংশ । নবগ্রহের ভূমিকা ও গুরুত্ব সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন প্রভাবে বিকশিত হয়। চাঁদের দেবতা এবং এর জ্যোতিষশাস্ত্রীয় তাত্পর্য বৈদিক যুগের প্রথম দিকে ঘটেছিল এবং বেদে লিপিবদ্ধ হয়েছিল । ভারতে নথিভুক্ত জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রাচীনতম কাজ হল বেদাঙ্গ জ্যোতিষ যা খ্রিস্টপূর্ব ১৪ শতকে সংকলিত হতে শুরু করে। চাঁদ এবং বিভিন্ন ধ্রুপদী গ্রহ প্রায় ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অথর্ববেদে উল্লেখ করা হয়েছে ।
নবগ্রহকে পশ্চিম এশিয়ার অতিরিক্ত অবদানের মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে জরথুস্ট্রিয়ান এবং হেলেনিস্টিক প্রভাব রয়েছে। যবনজাতক, বা 'যবনদের বিজ্ঞান ', পশ্চিম ক্ষত্রপ রাজা রুদ্রকর্মণ প্রথমের শাসনে " যবনেশ্বর " ("গ্রীকদের প্রভু") নামে ইন্দো-গ্রীক দ্বারা লেখা হয়েছিল । নবগ্রহ আরও বিকশিত হবে এবং শাক যুগে সাকা বা সিথিয়ান জনগণের সাথে সমাপ্ত হবে। উপরন্তু সাকা জনগণের অবদান ভারতীয় জাতীয় ক্যালেন্ডারের ভিত্তি হবে, যাকে সাকা ক্যালেন্ডারও বলা হয়।
হিন্দু ক্যালেন্ডার একটি লুনিসোলার ক্যালেন্ডার যা চন্দ্র এবং সৌর চক্র উভয়ই রেকর্ড করে। নবগ্রহের মতো এটিও বিকশিত হয়েছিল বিভিন্ন কাজের ধারাবাহিক অবদানে।
জ্যোতির্বিদ্যা
হিন্দু জ্যোতির্বিজ্ঞানের গ্রন্থে সোমকে একটি গ্রহ বলে মনে করা হয়।[১০] এটি প্রায়শই বিভিন্ন সংস্কৃত জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত গ্রন্থে আলোচনা করা হয়, যেমন আর্যভট্টের ৫ম শতাব্দীর আর্যভটিয়া, লতাদেবের ৬ষ্ঠ শতাব্দীর রোমাক এবং বরাহমিহিরার পঞ্চ সিদ্ধান্তিক, ব্রহ্মগুপ্তের ৭ম শতাব্দীর খন্ডখ্যাদ্যক এবং ৮ম শতাব্দীর লাস্যাধিভল্লার দ্বারা।[১১] সূর্যসিদ্ধান্তের মতো অন্যান্য গ্রন্থগুলি ৫ম শতাব্দী থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে সম্পূর্ণ হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[১১] যাইহোক, তারা দেখায় যে হিন্দু পণ্ডিতরা উপবৃত্তাকার কক্ষপথ সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং পাঠ্যগুলিতে এর অতীত এবং ভবিষ্যতের অবস্থানগুলি গণনা করার জন্য অত্যাধুনিক সূত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:[১২]
- চাঁদের দ্রাঘিমাংশ =
- – সূর্য সিদ্ধান্ত II.39.43[১২]
- যেখানে m হল চাঁদের গড় দ্রাঘিমাংশ, a হল apogee-এ দ্রাঘিমাংশ, P হল apsis-এর epicycle, R=3438'।
চন্দ্র মন্দির
নবগ্রহ মন্দিরে উপাসনার পাশাপাশি, নিম্নলিখিত মন্দিরগুলিতেও চন্দ্রের পূজা করা হয় (দয়া করে এই আংশিক তালিকাটি প্রসারিত করতে সাহায্য করুন)
- পরিমালা রঙ্গনাথ পেরুমল মন্দির : চন্দ্রের মন্দির সহ বিষ্ণু মন্দির
- কৈলাসনাথর মন্দির, থিঙ্গালুর : চন্দ্রের সাথে যুক্ত নবগ্রহ মন্দির ; প্রধান দেবতা শিব
- চন্দ্রমৌলিশ্বর মন্দির, অরিচন্দ্রপুরম : চন্দ্রের মন্দির সহ শিব মন্দির
- তিরুভরাগুনামাঙ্গাই পেরুমাল মন্দির : চন্দ্রের সাথে যুক্ত নব তিরুপথি বিষ্ণু মন্দির
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
টীকা
গ্রন্থপঞ্জি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
টেমপ্লেট:কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ টেমপ্লেট:ঋগ্বেদ
- ↑ Graha Sutras By Ernst Wilhelm, Published by Kala Occult Publishers টেমপ্লেট:ISBN p.51
- ↑ Mythology of the Hindus By Charles Coleman p.131
- ↑ Mythology of the Hindus By Charles Coleman p.132
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ ১১.০ ১১.১ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ ১২.০ ১২.১ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি