ফিল্টার (সংকেত প্রক্রিয়াজাতকরণ)

সংকেত প্রক্রিয়াজাতকরণে সংকেত থেকে অবাঞ্ছিত উপাদান তথা অপসংকেত দূর করার যন্ত্র বা প্রক্রিয়াকে ফিল্টার (ছাঁকনি) বলে। ফিল্টারিং বা ছাঁকন সংকেত প্রক্রিয়াজাতকরণ গবেষণা ক্ষেত্রের একটি শাখা যেখানে সংকেতের কিছু বৈশিষ্ট্য আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে দূর করার প্রক্রিয়া আলোচিত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংকেত থেকে কিছু কম্পাংক বা কম্পাংকের ফালিকে (ব্যান্ড) বাদ দেয়া হয়। তবে ফিল্টার শুধু কম্পাংক ক্ষেত্র (ফ্রিকোয়েন্সি ডোমেইন) নিয়েই কাজ করে না, বিশেষ করে চিত্র প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে অন্যান্য উপাদান নিয়েও ফিল্টার কাজ করে। কম্পাংক ক্ষেত্র নিয়ে সরাসরি কাজ না করেও পারস্পরিক সঙ্গতি ব্যবহার করে পরোক্ষভাবে কিছু কম্পাংক দূর করা যায়। ইলেকট্রন বিজ্ঞান এবং টেলিযোগাযোগে, বিশেষ করে বেতার, টেলিভিশন, শ্রাব্যবস্তু যন্ত্রে ধারণ (অডিও রেকর্ডিং), রাডার, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, সঙ্গীত সংশ্লেষণ, চিত্র প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্স ক্ষেত্রে এর ব্যবহার রয়েছে।
ফিল্টারকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে শ্রেণীগুলির মধ্যে উপরিপাতন ঘটে। ফলে এক্ষেত্রে কোনও সুনির্দিষ্টভাবে বিন্যস্ত শ্রেণিবিন্যাস নেই।
ফিল্টার অনেক ধরনের হতে পারে। যেমন:
- রৈখিক বা অরৈখিক
- সময় নির্ভরশীল বা সময় অনির্ভরশীল যা সরণ অনির্ভরশীলতা নামেও পরিচিত। ফিল্টার যদি স্থানিক ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে, তাহলে তাকে স্থান অনির্ভরশীলও বলে।
- কার্যকারণিক বা অ-কার্যকারণিক: ফিল্টারের বহির্গত উৎপাদ (আউটপুট) যদি ভবিষ্যৎ প্রবিষ্ট উপাত্তের (ইনপুট) উপর নির্ভর করে তাহলে তাকে আ-কার্যকারণিক বলে। বাস্তব সময় নিয়ে কাজ করলে ফিল্টারকে কার্যকারণিক হতে হবে। স্থানিক ক্ষেত্রের সংকেত বা বিলম্বিত সময় সংকেতের উপরে কাজ করা ফিল্টারের ক্ষেত্রে এ ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই।
- এনালগ বা ডিজিটাল
- বিযুক্ত সময় ফিল্টার বা সংযুক্ত সময় ফিল্টার
- সক্রিয় বা নিস্ক্রিয় বিযুক্ত সময় ফিল্টার
- বিযুক্ত সময় বা ডিজিটার ফিল্টারের ক্ষেত্রে অসীম ইম্পাস উত্তর ফিল্টার বা সসীম ইম্পাল্জ উত্তর ফিল্টার
রৈখিক সংযুক্ত-সময় ফিল্টার
সিগনাল প্রসেসিংয়ে রৈখিক সংযুক্ত-সময় ফিল্টার বর্তনী সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় এবং অন্যভাবে উল্লেখ না করলে ফিল্টার বলতে এ ধরনের ফিল্টারই ধরে নেয়া হয়। এই বর্তনী নির্দিষ্ট কিছু কম্পাঙ্ক বাদ দেয় এবং অন্য কম্পাঙ্কগুলোকে অতিক্রম করতে দেয়। এ ধরনের বর্তনী সাধারণত রৈখিক হয়। বর্তনীতে কোন প্রকার অরৈখিকতা থাকলে আউটপুটে এমন ধরনের কম্পাঙ্ক পাওয়া যাবে যা ইনপুটে ছিল না।
বর্তমান রৈখিক সংযুক্ত-সময় ফিল্টার ডিজাইনের জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় তাকে বলা হয় নেটওয়ার্ক সংশ্লেষণ। এ পদ্ধতিতে ডিজাইন করা কিছু ফিল্টার নিম্নরুপঃ
- চেবিশেভ ফিল্টার, যেকোন বিশেষায়িত ক্রম এবং রিপলযুক্ত প্রায় আদর্শ রেসপন্স দেয়।
- বাটারওয়ার্থ ফিল্টার, প্রায় সমতলীয় ফ্রিকোয়েন্সি রেস্পন্সযুক্ত।
- বেশেল ফিল্টার, প্রায় সমতলীয় রেসপন্সযুক্ত(দশা বিলম্ব থাকে)
- উপবৃত্তাকার ফিল্টার, বিশেষায়িত ক্রম ও রিপলযুক্ত তীক্ষ্ণ ধারবিশিষ্ট ফিল্টার।
এদের মধ্যে পার্থক্য হল আদর্শ ফিল্টারের রেসপন্স তৈরি করতে এরা যে বহুপদী সমীকরণ অনুসরণ করে সেটা ভিন্ন ভিন্ন। এদের প্রত্যেকের আলাদা ট্রান্সফার ফাংশন রয়েছে।
ইমেজ প্যারামিটার পদ্ধতি হল আরেকটি পুরোনো এবং কম-ব্যবহৃত পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ডিজাইন করা ফিল্টারকে অনেক সময় "তরঙ্গ ফিল্টার" বলা হয়ে থাকে। এ ধরনের কিছু ফিল্টার হলঃ
- ধ্রুব k ফিল্টার, তরঙ্গ ফিল্টারের আসল এবং সরল রূপ।
- m-উপপাদিত ফিল্টার, ধ্রুব k ফিল্টারের পরিবর্তিত রূপ, যা তীক্ষ্ণ ধারবিশিষ্ট এবং উন্নত ইম্পিডেন্স ম্যাচিংযুক্ত।
পরিভাষা
রৈখিক ফিল্টার বর্ণনায় ব্যবহৃত কিছু পদ নিম্নরূপঃ

- কোন ধরনের কম্পাঙ্ক ব্যান্ডকে অতিক্রম করতে দিবে তার উপর নির্ভর করে ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্সকে কয়েক প্রকারে ভাগ করা যায়।
- লো-পাস ফিল্টার ফিল্টার – নিম্ন কম্পাঙ্কের ব্যান্ডকে যেতে দিবে।
- হাই-পাস ফিল্টার – শুধু উচ্চ কম্পাঙ্কের ব্যান্ডকে যেতে দিবে, নিম্ন কম্পাঙ্ক ব্যান্ডকে দুর্বল করে দিবে।
- ব্যান্ড-পাস ফিল্টার – শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্ক ব্যান্ডকে যেতে দিবে।
- ব্যান্ড-স্টপ ফিল্টার – শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্ক ব্যান্ডকে যেতে বাধা দিবে।
- নচ ফিল্টার – শুধুমাত্র একটি কম্পাঙ্ককে বাধা দিবে, খুবই চিকন ব্যান্ড-অনতিক্রান্ত ফিল্টার।
- চিরুনি ফিল্টার – অনেকগুলো নিয়মিত অতিক্রান্ত ব্যান্ড আছে, দেখতে চিরুনির মত।
- অল-পাস ফিল্টার – সকল কম্পাঙ্ক যেতে দিবে, দশা পরিবর্তন হতে পারে।
- কর্তক কম্পাঙ্ক হল সেই কম্পাঙ্ক যার পরের কোন কম্পাঙ্ক ফিল্টার দিয়ে যেতে পারবে না। সাধারণত ৩ dB অ্যাটেনুয়েশনকে ধরা হয়।
- রোল-অফ – কর্তক কম্পাঙ্কের পরে যে হারে অ্যাটেনুয়েশন ঘটে
- রিপল অতিক্রান্ত ব্যান্ডে ফিল্টারের যে সন্নিবেশ লস হয়।
- ফিল্টারের ক্রম বলতে ফিল্টার যে বহুপদী মেনে চলে তার ঘাতকে বোঝায়। নিস্ক্রিয় ফিল্টারের ক্ষেত্রে যতগুলো উপাদান ফিল্টার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় সেই সংখ্যাকে ওই ফিল্টারের ক্রম বলে। ক্রম যত বেশি হয় তত রোল-অফ বাড়ে এবং ফিল্টার, আদর্শ ফিল্টার রেসপন্স এর কাছাকাছি রেসপন্স দেয়।
টেলিযোগাযোগে ফিল্টারের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ রয়েছে। অনেক টেলিযোগাযোগ সিস্টেমে ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং ব্যবহৃত হয়, যেখানে সিস্টেম ডিজাইনাররা একটি প্রশস্ত কম্পাঙ্ক ব্যান্ডকে স্লট ও চ্যানেল নামে অনেকগুলো ভাগে ভাগ করেন এবং প্রত্যেকটি চ্যানেল আলাদা আলাদা তথ্য প্রবাহের জন্য সংরক্ষিত থাকে।
ট্রান্সমিটার ও রিসিভার যারা ডিজাইন করেন তারা চেষ্টা করেন যাতে কম খরচে এবং কম নয়েজে ও কম ব্যতিচারে কাঙ্ক্ষিত সিগনালকে যতটা সম্ভব নিখুঁতভাবে আনা নেওয়া করা যায়।
বহুস্তরীয় এবং বহুদশাযুক্ত ডিজিটাল মড্যুলেশন সিস্টেমে রৈখিক দশা বিলম্ব যুক্ত ফিল্টার দরকার হয় যাতে সময় ডোমেইনে পালস সমন্বয় করা যায়।[১] ফলে অন্য ফিল্টারের চেয়ে ব্যতিচার কম ঘটে।
অন্যদিকে, অ্যানালগ শ্রাব্য সিস্টেমে অ্যানালগ হস্তান্তর দশা বিলম্বে অনেক বেশি রিপল সহ্য করতে পারে। ফলে ডিজাইনাররা এক্ষেত্রে কম খরচ,কম বিস্তার রিপল এবং ব্যান্ড অনতিক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের দিকে জোর দেয়।
প্রযুক্তি
অনেক ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফিল্টার তৈরি করা যায়। বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে একই গাণিতিক বৈশিষ্ট্য এবং ট্রান্সফার ফাংশনযুক্ত ফিল্টার তৈরি করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত উপাদানগুলিও দেখতে হুবহু একই রকম এবং একই ধরনের কাজ করে। যেমন- ইলেকট্রনিক্সের রোধক, আবেশক ও ধারক মেকানিক্স এর ড্যাম্পার, ভর ও স্প্রিং এর সাথে মিলে যায়।
- ইলেকট্রনিক ফিল্টারগুলি নিস্ক্রিয় উপাদান যেমন রোধক, আবেশক ও ধারক দিয়ে গঠিত। সক্রিয় প্রযুক্তি ফিল্টার ডিজাইনকে সহজ করে এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ফিল্টার তৈরি সহজে করা যায়।
- ডিজিটাল ফিল্টার, ডিজিটাল সিগনাল নিয়ে কাজ করে। ডিজিটাল ফিল্টার এর সুবিধা হল প্রোগ্রামিং ও মাইক্রোকোড এর মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ট্রান্সফার ফাংশন তৈরির গাণিতিক এলগরিদম সরাসরি প্রয়োগ করা যায়।
- মেকানিকাল ফিল্টার, মেকানিকাল উপাদান দিয়ে বানানো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলোকে ইলেকট্রনিক সিগনাল প্রক্রিয়াজাতে ব্যবহার করা হয় এবং ট্রান্সডুসার দিয়ে এই সিগনালকে মেকানিকাল কম্পনে পরিণত করা যায়। যাহোক, মেকানিকাল ডোমেইন নিয়ে কাজ করে এমন ফিল্টারও পাওয়া যায়।
- বণ্টিত উপাদান ফিল্টার, হস্তান্তর লাইনের ছোট ছোট অংশ দিয়ে বানানো হয়। ইলেকট্রনিক ফিল্টারকে সামষ্টীকরণ করেও এ ধরনের স্ট্রাকচার তৈরি করা হয়। অন্যগুলোর স্বকীয় বৈশিষ্ট্য আছে।
- ওয়েভগাইড ফিল্টার, ওয়েভগাইডের উপাদান দিয়ে বানানো হয়। হস্তান্তর লাইনের একটা শ্রেনী হল ওয়েভগাইড এবং বণ্টিত উপাদান ফিল্টারেরও শ্রেণী এটা। ইলেকট্রনিক স্টাবও ওয়েভগাইড দিয়ে বানানো যায়।
- ক্রিস্টাল ফিল্টার, কোয়ার্জ যেমন রেজোনেটর এবং অন্যান্য পাইযোইলেকট্রিক উপাদান দিয়ে বানানো হয়।
- অ্যাকাউস্টিক ফিল্টার
- অপটিক্যাল ফিল্টার, আলোক এবং ফটোগ্রাফি সিগনাল প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়। অপটিক্যাল ফাইবার প্রযুক্তির বৃদ্ধির সাথে সাথে সিগনাল প্রসেসিং এ বিভিন্ন অপটিক্যাল ফিল্টারের ব্যবহার বেড়ে চলেছে। যেমনঃ লংপাস এবং শর্টপাস
ট্রান্সফার ফাংশন
টেমপ্লেট:প্রধান ট্রান্সফার ফাংশন বেশিরভাগ সময় জটিল ডোমেইনে সংজ্ঞায়িত করা হয়। ল্যাপ্লাস রুপান্তর এর মাধ্যমে এই ডোমেইনে যাওয়া যায়। ইনপুট সিগনালকে বিপরীত ল্যাপ্লাস রূপান্তরের মাধ্যমে সময় ডোমেইনে নিয়ে আসা যায়।
ট্রাস্নফার ফাংশন, কে আউটপুট সিগনাল, এবং ইনপুট সিগনাল, এর অনুপাতরূপে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
যেখানে .
সব রৈখিক সময়-অনির্ভরশীল ফিল্টারের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে।
- বিযুক্ত উপকরণ দিয়ে তৈরি ফিল্টারের ট্রান্সফার ফাংশন ডোমেইনে প্রকাশিত দুটি বহুপদীর অনুপাত অর্থাৎ মুলদ ফাংশন হবে। লব ও হরে এর সর্বোচ্চ ঘাত ট্রান্সফার ফাংশনের ক্রম হবে।
- ফিল্টার স্থিতিশীল হবে ধরে নেওয়ায়, সকল পোলের বাস্তব অংশ ঋনাত্মক হতে হবে। অর্থাৎ তারা জটিল ফ্রিকোয়েন্সি রেখে বামতলে অবস্থান করবে।
বণ্টিত উপাদান ফিল্টার অবশ্য মুলদ ফাংশন তৈরি করে না, অনেক সময় কাছাকাছি ধরে নেয়া হয়।
ল্যাপ্লাস রূপান্তর এর মাধ্যমে ট্রান্সফার ফাংশন গঠন করা হয় এবং প্রাথমিক অবস্থা শূন্য ধরা হয়।
f(0)=0 হলে আমরা ধ্রুবক বাদ দিতে পারি।
ট্রান্সফার ফাংশনের বিকল্প হচ্ছে ফিল্টারের আচরণকে কনভল্যুশন আকারে ধরে নেয়া। কনভল্যুশন তত্ত্ব লাপ্লাস রুপান্তরের সমতুল্য ট্রান্সফার ফাংশন দেয়।
শ্রেণিবিন্যাস
অতিক্রান্ত ব্যান্ডের আকার এবং গোত্র অনুযায়ী ফিল্টারকে উল্লেখ করা হয়। ফিল্টারটি তার ট্রান্সফার ফাংশন গঠনের জন্য কোন বহুপদী সমীকরণ ব্যবহার করছে তার উপর নির্ভর করে তার গোত্র নির্ণয় করা হয়। নিচে এরকম কিছু গোত্র দেয়া হল।
- বাটারওয়ার্থ ফিল্টার-১ম ধরন – কোন বর্ধনশীল রিপল থাকে না এবং কর্তন অনেক ধীরে হয়।
- চেবিশেভ ফিল্টার-২য় ধরন – অতিক্রান্ত ব্যান্ডে কোন বর্ধনশীল রিপল থাকে না, মধ্যম ধরনের কর্তন বিশিষ্ট।
- বেসেল ফিল্টার – কোন গ্রুপ বিলম্ব রিপল, বর্ধনশীল রিপল থাকে না, কর্তন অনেক ধীরে হয়।
- উপবৃত্তাকার ফিল্টার – অতিক্রান্ত ও অনতিক্রান্ত ব্যান্ডে বর্ধনশীল রিপল থাকে, দ্রুত কর্তন হয়।
- অপটিমাম "L" ফিল্টার
- গাউসিয়ান ফিল্টার – স্টেপ ফাংশনের রেসপন্সে কোন রিপল থাকে না।
- আওয়ারগ্লাস ফিল্টার
- বর্ধিত-কোসাইন ফিল্টার
ফিল্টারের প্রত্যেক গোত্রের ক্রম উল্লেখ থাকে। ক্রম যত বেশি হয়, ফিল্টারের আচরণ তত আদর্শের কাছাকাছি হয়। আবার ইমপাল্স রেসপন্স দীর্ঘ হলে সুপ্তাবস্থাও বেশি হয়। আদর্শ ফিল্টারে অতিক্রান্ত ব্যান্ডের পুরোটাই কোন বাধা ছাড়া যেতে পারে, অনতিক্রান্ত ব্যান্ড সম্পূর্ণই বাধা পায়, দুই ব্যান্ডের মধ্যে দ্রুত উঠানামা হয়। কিন্তু এ ধরনের ফিল্টারের ক্রম ও সুপ্তাবস্থা অসীম হয় (এর ফুরিয়ার রূপান্তর অসীম সময় পর্যন্ত থাকে)।
ছবিতে বাটারওয়ার্থ, চেবিশেভ ও উপবৃত্তাকার ফিল্টারের তুলনা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি পঞ্চম ক্রমের নিম্ন-অতিক্রান্ত ফিল্টার। অ্যানালগ বা ডিজিটাল হোক, আর নিস্ক্রিয় বা সক্রিয় যে উপাদান দিয়েই বানানো হোক না কেন তাদের আউটপুট একই হবে।

ছবিতে যেমন দেখা যাচ্ছে, উপবৃত্তাকার ফিল্টার অনেক তীক্ষ্ণ হয়, তবে তাদের রিপল বেশি থাকে।
কোন ধরনের কম্পাঙ্ক ব্যান্ড যেতে দেয়া হবে তার জন্য যেকোন গোত্রের ফিল্টার ব্যবহার করা যাবে, যেখানে অন্যান্য কম্পাঙ্কগুলোর কম বা বেশি অ্যাটেনুয়েশন ঘটবে। রৈখিক ফিল্টারের বৈশিষ্ট্য এর ট্রান্সফার ফাংশনের উপর নির্ভর করে, কোন প্রযুক্তিতে তা বানানো হবে তার উপর নয়। অন্যকথায় অনেকভাবে একই বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ফিল্টার তৈরি করা যায়। একটি নির্দিষ্ট ব্যান্ড আকারযুক্ত ফিল্টারকে ঐ গোত্রের প্রোটোটাইপ ফিল্টার এর রূপান্তরের মাধ্যমে তৈরি করা যায়।
ইম্পিডেন্স ম্যাচিং
ইম্পিডেন্স ম্যাচিং স্ট্রাকচার ফিল্টারের মতই শক্তি শোষণ করে না এমন উপাদানের নেটওয়ার্ক। নিষ্ক্রিয় ইলেকট্রনিক্স বর্তনী বাস্তবায়নের সময় এটা আবেশক ও ধারকের মই টপোলজি ধারণ করে। নেটওয়ার্ক ম্যাচিং ও ডিজাইনের কাজটির সাথে ফিল্টারের অনেক মিল রয়েছে। যদিও ফিল্টারিং করা নেটওয়ার্ক ম্যাচিং এর কাজ নয়, তবুও অনেক সময় একই বর্তনীতে এই দুই কাজ করা হয়। সিগনাল ডিজিটাল ডোমেইনে থাকলে ইম্পিডেন্স ম্যাচিং এর দরকার হয় না।
ক্ষমতা বিভাজক এবং দিকমুখী সংযোজকের ক্ষেত্রে একই ধরনের মন্তব্য করা যায়। যখন বণ্টিত উপাদানের আকারে বাস্তবায়ন করা হয়, তখন এগুলো বণ্টিত উপাদান ফিল্টারের আকার ধারণ করে। ম্যাচিংয়ের জন্য চারটি পোর্ট থাকে এবং ব্যান্ডউইথ বর্ধনের জন্য ফিল্টারের মত স্ট্রাকচারের দরকার হয়। উল্টোটাও সত্য, অনেক সময় বণ্টিত উপাদান ফিল্টার সংযোজক লাইনের আকার ধারণ করে।
বিশেষ কাজের জন্য ব্যবহৃত কিছু ফিল্টার
- অডিও ফিল্টার
- লাইন ফিল্টার
- স্কেলড অনুবন্ধী, উচ্চ- অতিক্রান্ত ফিল্টার যা পারস্পরিক সংগতি নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়
- টেক্সটার ফিল্টারিং
ডাটা থেকে নয়েজ দূরীকরণ ফিল্টার
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- Miroslav D. Lutovac, Dejan V. Tošić, Brian Lawrence Evans, Filter Design for Signal Processing Using MATLAB and Mathematica, Miroslav Lutovac, 2001 টেমপ্লেট:ISBN.
- B. A. Shenoi, Introduction to Digital Signal Processing and Filter Design, John Wiley & Sons, 2005 টেমপ্লেট:ISBN.
- L. D. Paarmann, Design and Analysis of Analog Filters: A Signal Processing Perspective, Springer, 2001 টেমপ্লেট:ISBN.
- J.S.Chitode, Digital Signal Processing, Technical Publications, 2009 টেমপ্লেট:ISBN.
- Leland B. Jackson, Digital Filters and Signal Processing, Springer, 1996 টেমপ্লেট:ISBN.
- ↑ Richard Markell. '"Better than Bessel" Linear Phase Filters for Data Communications'. 1994. p. 3.