বায়ুমণ্ডলীয় চাপ

testwiki থেকে
imported>InternetArchiveBot কর্তৃক ০৪:২৬, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (১টি উৎস উদ্ধার করা হল ও ০টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল।) #IABot (v2.0.9.5)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন

বায়ুমন্ডলীয় চাপ (ব্যারোমিটারের নামানুসারে ব্যারোমেট্রিক চাপ ও বলা হয়), বলতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অভ্যন্তরীণ চাপকে বোঝায়। আদর্শ অবস্থায় বায়ুমণ্ডলের চাপ ১০১৩.২৫ মিলিবার (১০১,৩২৫ প্যাসকেল) বা ৭৬০ পারদ মিমি (টর), ২৯.৯২ পারদ ইঞ্চি বা ১৪.৬৯৬ পাউন্ড/ইঞ্চি[] এটিএম (atm) এককটি পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় বায়ুমণ্ডলীয় চাপের সমতুল্য অর্থাৎ, পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের বায়ুমণ্ডলীয় চাপ প্রায় ১ এটিএম।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে, কোন বিন্দুতে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সেই বিন্দুর উপরে অবস্থিত বায়ুর ওজনের ফলে সৃষ্ট স্থিতিশীল চাপের প্রায় সমান হয়। উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে, উপরিতলের বায়ুমণ্ডলের ভর কমতে থাকে, ফলে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে হ্রাস পায়। চাপ বলতে, প্রতি একক ক্ষেত্রফলে সৃষ্ট বল বোঝায়, যার এসআই একক হল প্যাস্কেল (১ প্যাস্কেল = ১ নিউটন প্রতি বর্গমিটার)। গড়ে পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলের শীর্ষ পর্যন্ত, ১ বর্গ সেন্টিমিটার প্রস্থছেদের একটি বায়ুর কলামের ভর ১.০৩ কিলোগ্রাম, এবং এটি ১০.১ নিউটন বল বা ওজন প্রয়োগ করে। যার ফলে ১০.১নিউটন/সেমি বা ১০১ কিলোনিউটন/মিটার (১০১ কিলোপ্যাস্কেল, কেপিএ) চাপের সৃষ্টি হয়। ১ ইঞ্চি প্রস্থচ্ছেদের এর একটি বায়ু একটি কলামের ওজন হবে প্রায় ১৪.৭ পাউন্ড, ফলে চাপের পরিমাণ হবে ১৪.৭ পাউন্ড/ইঞ্চি

সংজ্ঞা প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ

বায়ুমণ্ডল তার ওজনের জন্য ভূপৃষ্ঠে প্রতি একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করে তাকে ঐ স্থানের বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বলে।

ক্রিয়াকৌশল

পৃষ্ঠের উপরিভাগের বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের উপর গ্রহের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সৃষ্টি হয়। এটি নির্ভর করে গ্রহের ভর, পৃষ্ঠের ব্যাসার্ধ, বায়ুমণ্ডলের গ্যাসের গঠন ও পরিমাণ এবং তাদের উল্লম্ব বণ্টনের উপর। [][] গ্রহের ঘূর্ণন এবং স্থানীয় প্রভাব যেমন বায়ুর বেগ তাপমাত্রার ফলে ঘনত্ব এবং উপাদানের মিশ্রণের পরিবর্তনের কারণেও বায়ুমন্ডলীয় চাপ প্রভাবিত হয়। []

গড় সমুদ্রপৃষ্ঠীয় চাপ

মানচিত্রে মিলিবার অথবা hPa এককে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ দেখানো হচ্ছে
১৫ বছরের গড় সমুদ্র-স্তরের বায়ুচাপ। জুন, জুলাই, এবং আগস্ট (শীর্ষ) এবং ডিসেম্বর, জানুয়ারী, এবং ফেব্রুয়ারির (নিচে)। ইআরএ পুনঃবিশ্লেষণ।
কোলসম্যান জাতীয় ব্যারোমেট্রিক বিমানের উচ্চতামাপক যন্ত্র (উত্তর আমেরিকার হিসাবে ব্যবহৃত) টেমপ্লেট:রূপান্তর উচ্চতা প্রদর্শন করছে।

গড় সমুদ্রপৃষ্ঠীয় চাপ (এমএসএলপি) হচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় বায়ুমণ্ডলীয় চাপ। রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র বা ইন্টারনেটের আবহাওয়ার প্রতিবেদনগুলিতে সাধারণত এই বায়ুমণ্ডলীয় চাপই উল্লেখ করা হয়। ঘরে ব্যবহৃত ব্যারোমিটারগুলি স্থানীয় আবহাওয়ার প্রতিবেদনের সাথে মিল রেখে স্থির করলে সেগুলো স্থানীয় বায়ুমণ্ডলীয় চাপ না দেখিয়ে সমুদ্র পৃষ্ঠের চাপ পরিমাপ করে।

বিমানের উচ্চতামাপক যন্ত্র বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে।

গড় সমুদ্রপৃষ্ঠীয় চাপের মান ১,০১৩.২৫ মিলিবার (১০১.৩২৫ কিলোপ্যাসকেল; ২.৯২১ পারদ ইঞ্চি; ৭৬০ পারদ মিমি)। বিশ্বব্যাপী, বিমানের আবহাওয়া রিপোর্ট (এমইটিএআর, METAR) মিলিবার বা হেক্টোপ্যাসকেল (১ হেক্টোপ্যাসকেল = ১ মিলিবার) এককে প্রেরণ করা হয়, তবে এর ব্যতিক্রমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং কলম্বিয়াতে পারদ ইঞ্চি একক (দুই দশমিক স্থান পর্যন্ত) ব্যবহার করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা গড় সমুদ্রপৃষ্ঠীয় চাপের (এসএলপি) প্রতিবেদন তৈরি করে, যা হেক্টোপ্যাসকেল বা মিলিবার এককে না হওয়ায়, প্রতিবেদনের মন্তব্য বিভাগে, একটি পৃথক পদ্ধতির সাহায্যে আন্তর্জাতিক রীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়।[] যাইহোক, কানাডার গণ আবহাওয়া প্রতিবেদনে সমুদ্রতলের চাপের একক হিসেবে কিলোপ্যাসকেল ব্যবহার করা হয়।[]

মার্কিন আবহাওয়া বিধি অনুসারে, বায়ুমণ্ডলের চাপ নির্দেশ করতে তিনটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে দশমিক সংখ্যা এবং একটি বা দুইটি সাধারণ সংখ্যা বাদ দেওয়া হয়। যেমন, ১,০১৩.২ মিলিবার (১০১.৩২ কিলোপ্যাসকেল) কে ১৩২ লেখা হয়; ১,০০০ মিলিবার (১০০.০০ কিলোপ্যাসকেল) কে ০০০ লেখা হয়; ৯৯৮.৭ মিলিবারকে ৯৮৭ লেখা হয় প্রভৃতি। সমুদ্রপৃষ্ঠের সাপেক্ষে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ চাপ পাওয়া যায় সাইবেরিয়াতে, যেখানে সাইবেরিয়ান হাই এ প্রায়শই টেমপ্লেট:রূপান্তর এর উপর সমুদ্র-স্তরীয় চাপ তৈরি হয়। চ্চ রেকর্ড ১০৮৫ মিলিবার (১০৮.৫ কিলোপ্যাসকেল, ৩২.০ পারদ ইঞ্চি)। সর্বনিম্ন পরিমাপযোগ্য সমুদ্র স্তরের চাপ ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়টর্নেডোগুলির কেন্দ্রে পাওয়া যায়, যার রেকর্ড ৮৭০ মিলিবার (৮৭ কিলো প্যাসকেল; ২৬ পারদ ইঞ্চি) এর চেয়েও কম। (দেখুন, বায়ুমণ্ডলীয় চাপের রেকর্ড)।

পৃষ্ঠচাপ

পৃষ্ঠচাপ বলতে পৃথিবী পৃষ্ঠের কোন অবস্থানের (ভূখণ্ড এবং মহাসাগর) বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বোঝায়। এর মান ওই স্থানের সরাসরি উপরের বাতাসের ভরের সমানুপাতিক।

সংখ্যাজনিত কারণে, জেনারেল সারকুলেশন মডেল (জিসিএম) এর মত বায়ুমণ্ডলীয় মডেলগুলো সাধারণত পৃষ্ঠচাপের এককবিহীন লগারিদমিক পূর্বাভাস দেয়।

পৃথিবীতে পৃষ্ঠ চাপের গড় মান ৯৮৫ হেক্টোপ্যাসকেল (এইচপিএ)।[] এর মান সমুদ্রপৃষ্ঠীয় চাপের থেকে আলাদা, কারণ সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে বা নিচে অবস্থানের জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠীয় চাপকে বহির্পাতন করে এর মান নির্ণয় করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড এ্যাটমস্ফিয়ারে (আইএসএ) গড় সমুদ্রপৃষ্ঠীয়(এমএসএল) বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ১০১৩.২৫ এইচপিএ বা ১ (এটিএম) বা ২৯.৯২ পারদ ইঞ্চি।

চাপ (P), ভর (m), এবং মহাকর্ষীয় ত্বরণ (g), এর মধ্যকার সম্পর্ক P = F / A = (m * g) / A সূত্র দ্বারা নির্ণয় করা যায়, যেখানে A পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল। অতএব, কোন অবস্থানে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ওই অবস্থানের প্রতি একক ক্ষেত্রফলের উপরের বায়ুমণ্ডলের ভরের সমানুপাতিক।

উচ্চতা পার্থক্য

স্নেফেলজজকুলের উপরে একটি স্থানীয় ঝড়, অরোগ্রাফিক লিফট দ্বারা পাহাড়ে গঠিত মেঘ দেখানো হয়েছে
উচ্চতার সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পরিবর্তন, ১৫°C এবং ০% আপেক্ষিক আর্দ্রতার জন্য পরিমাপকৃত।
এই প্লাস্টিকের বোতলটি প্রায় টেমপ্লেট:রূপান্তর উচ্চতায় বদ্ধ করা হয়, এবং সমুদ্রতলের দিকে আসার সময় বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বৃদ্ধির ফলে কুঁচকে যায়। টেমপ্লেট:রূপান্তর এবং টেমপ্লেট:রূপান্তর উচ্চতার ছবি

পৃথিবীর উপর বায়ুমণ্ডলের চাপ পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে পরিবর্তিত হয়; তাই পর্বতের উপর বায়ু চাপ সাধারণত সমুদ্রতল এর বায়ু চাপ এর চেয়ে কম হয়। পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে মেসোস্ফিয়ারের পর্যন্ত চাপ সুষমভাবে পরিবর্তিত হয়। আবহাওয়ার সঙ্গে চাপের পরিবর্তন হলেও, নাসা পৃথিবীর সমস্ত অংশের জন্য সারা বছরের পরিবেশের অবস্থার গড় নির্ধারণ করেছে। উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস পায়। কোন প্রদত্ত উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলীয় চাপ নির্ণয় করা যায়।[] তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতাও বায়ুমণ্ডলীয় চাপকে প্রভাবিত করে তাই সঠিক অবস্থা হিসাব করার জন্য এটি জানা প্রয়োজন। ডানদিকের লেখচিত্রটি ১৫° সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ০% আপেক্ষিক আর্দ্রতার জন্য তৈরি।

সমুদ্রতল থেকে কম উচ্চতায়, প্রতি ১০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রায় ১.২ কিলোপ্যাসকেল চাপ হ্রাস পায়। ট্রপোস্ফিয়ারের মধ্যে অধিক উচ্চতায় জন্য নিম্নলিখিত সমীকরণটি (ব্যারোমেট্রিক সূত্র) উচ্চতা h ও বায়ুমন্ডলীয় চাপ p এর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে -

p=p0(1LhT0)gMR0L=p0(1ghcpT0)cpMR0p0exp(ghMT0R0)

এখানে ধ্রুবকের মান নিচের তালিকায় দেয়া হল:

ধ্রুবক বিবরণ মান
p0 সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রমাণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ১০১৩২৫ প্যাস্কেল
L তাপমাত্রা পরিবর্তনের হার = শুষ্ক বায়ুর জন্য g/cp ~ ০.০০৯৭৬ কেলভিন/মি
cp স্থিরচাপ আপেক্ষিক তাপ ১০০৪.৬৮৫০৬ জুল / (কেজি · কেলভিন)
T0 সমুদ্র পৃষ্ঠের প্রমাণ তাপমাত্রা ২৮৮.১৬ কেলভিন
g পৃথিবীর মহাকর্ষীয় ত্বরণ ৯.৮০৬৬৫ মি / সে
M শুষ্ক বায়ুর আণবিক ভর ০.০২৮৯৬৯৬৮ কেজি / মোল
R0 গ্যাস ধ্রুবক ৮.৩১৪৪৬২৬১৮ জুল /(মোল · কেলভিন)

স্থানীয় পার্থক্য

হারিকেন উইলমা, ১৯ অক্টোবর, ২০০৫ তারিখে; ঝড়ের কেন্দ্রে চাপ ৮৮২ এইচপিএ (১২.৭৯ পিএসআই)

পৃথিবীতে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয় এবং এই পরিবর্তন আবহাওয়া এবং জলবায়ু অধ্যয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আবহাওয়া উপর বায়ু চাপের প্রভাবগুলির জন্য দেখুন চাপীয় সিস্টেম।

বিশ্বব্যাপী বায়ুমণ্ডলীয় চাপ বায়ুমণ্ডলীয় জোয়ার দ্বারা সৃষ্ট একটি দৈনিক অথবা অর্ধ-দৈনিক (দৈনিক দুইবার) চক্র দেখায়। এই প্রভাবটি ক্রান্তীয় অঞ্চলে সবচেয়ে শক্তিশালী আর মেরু অঞ্চলের প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। এই পরিবর্তনের দুটি চক্র রয়েছে, একটি দৈনিক (২৪ ঘণ্টা) চক্র এবং অন্যটি অর্ধ-দৈনিক (১২ ঘণ্টা) চক্র।

রেকর্ডসমূহ

পৃথিবীতে সমুদ্রের স্তরের সাপেক্ষে রেকর্ডকৃত (৭৫০ মিটারের বেশি ) সর্বোচ্চ চাপ ১০৮৪.৮ এইচপিএ (৩২.০৩ পারদ ইঞ্চি), যা ১৯ ডিসেম্বর, ২০০১ সাালে টসোন্টসেঙ্গেল, মঙ্গোলিয়ায় পরিমাপ করা হয়।[] আর ৭৫০ মিটারের নিচে সমুদ্রপৃষ্ঠের সাপেক্ষে সর্বোচ্চ চাপ রেকর্ড করা হয়েছে রাশিয়ার এভেঙ্ক অটোনোমাস ওক্রাগের আগাটায় (৬৬° ৫৩' উত্তর, ৯৩° ২৮' পূর্ব, উচ্চতা: টেমপ্লেট:রূপান্তর) ১০৮৩.৮ এইচপিএ (৩২.০০৫ পারদ ইঞ্চি), ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৬৮ তারিখে। এই পার্থক্যের কারণ হল উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সমুদ্রপৃষ্ঠের চাপের হ্রাস সংক্রান্ত অনুমানগুলোর ত্রুটি (পরিবর্তনের হারকে ধ্রুবক হিসেবে ধরে নেয়া)।

মৃত সাগরে, যা সমুদ্রতলের টেমপ্লেট:রূপান্তর নিচে ভূপৃষ্ঠের সর্বনিম্ন স্থান, আদর্শ ক্রান্তীয় বায়ুমণ্ডলীয় চাপের চেয়ে তুলনামূলক বেশি চাপ রয়েছে (১০৬৫ এইচপিএ)। []

টর্নেডো ব্যতীত পরিমাপকৃত সর্বনিম্ন বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ৮৭০ এইচপিএ (০.৮৫৮ এটিএম; ২৫.৬৯ পারদ ইঞ্চি), ১২ অক্টোবর ১৯৭৯ তারিখে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের টাইফুন টিপের সময় পাওয়া যায়। এটি একটি নিরীক্ষণকারী বিমান থেকে একটি যান্ত্রিক পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে পরিমাপ করা হয়েছিল। [১০]

পানির গভীরতার উপর ভিত্তি করে পরিমাপ

১০.৩ মিটার (৩৩.৮ ফুট) গভীর জলের একটি কলামের ওজন দ্বারা সৃষ্ট চাপ প্রায় এক বায়ুমণ্ডলীয় (১০১.৩২৫ কেপিএ বা ১৪.৭ পিএসআই) চাপের সমান। সুতরাং, একজন ডুবুরি ১০.৩ মি পানির নিচে ২ বায়ুমন্ডলীয় চাপের (এটিএম) সমান চাপ অনুভব করে (১ এটিএম বাতাস আর ১ এটিএম পানির চাপ)। বিপরীতভাবে, বায়ুমণ্ডলীয় চাপে পানি সর্বোচ্চ ১০.৩ মি পর্যন্ত শোষণ করে টেনে তোলা যায়।

প্রাকৃতিক গ্যাস লাইনের মতো নিম্ন চাপ কখনও কখনও জল ইঞ্চি এককে নির্দেশ করা হয়, যা সাধারণত ডব্লিউ.সি. গেজ (ওয়াটার কলাম) বা ডব্লিউ.জি. গেজ (ইঞ্চি ওয়াটার) হিসাবে লেখা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোন গ্যাস ব্যবহারকারী সাধারণ আবাসিক যন্ত্র সর্বাধিক ১৪ ডব্লিউ.জি. এর জন্য সীমাবদ্ধ, যা প্রায় ১০৪৮.৩৭ এইচপিএ এর সমতুল্য। সাধারণত, মিলিমিটার, সেন্টিমিটার বা মিটারের উপর ভিত্তি করে প্রায় একই রকম নাম এবং প্রতীকসহ বিভিন্ন ধরনের মেট্রিক একক এখন কম ব্যবহৃত হয়।

পানির স্ফুটনাংক

ফুটন্ত পানি

পৃথিবীর আদর্শ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে বিশুদ্ধ পানি টেমপ্লেট:রূপান্তর এ ফোটে। স্ফুটনাংক হচ্ছে এমন একটি তাপমাত্রা যে তাপমাত্রায় তরল পদার্থের বাষ্প চাপ বায়ুমণ্ডলীয় চাপের প্রায় সমান হয়।[১১] এ কারণে, পানির স্ফুটনাংক নিম্ন চাপে কম এবং উচ্চ চাপে বেশি হয়। তাই অধিক উচ্চতায় রান্নার সময়, রন্ধনপ্রণালীর পরিবর্তন বা প্রেশার কুকিং করা প্রয়োজন।[১২] পানির স্ফুটনাংক থেকে উচ্চতা সম্পর্কে আনুমানিক কিছুটা ধারণা করা যায়; উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এই পদ্ধতিই অভিযাত্রীদের দ্বারা ব্যবহৃত হত।[১৩]

পরিমাপ এবং মানচিত্র

বায়ুমণ্ডলীয় চাপ উচ্চতার সাথে সরাসরি পরিবর্তিত হয্‌ এই নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ হল পাহাড় ও পর্বতের উচ্চতা নির্ধারণ, যা নির্ভরযোগ্য চাপ পরিমাপক যন্ত্রের প্রাপ্যতার কারণে সম্ভব হচ্ছে। ১৭৭৪ সালে, মাস্কেলিন স্কটল্যান্ডের শিহালিয়নে সরল দোলকের বিচ্যুতির সাহায্যে, নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্বের সত্যতা নিশ্চিত করছিলেন এবং সঠিকভাবে উচ্চতা পরিমাপ করেছিলেন। পরে উইলিয়াম রয় বায়ুমণ্ডলীয় চাপের সাহায্যে উচ্চতা নির্ণয় করে মাস্কেলিনের নির্ণীত উচ্চতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হন, যার মান মাস্কেলিনের নির্ণীত উচ্চতার এক মিটারের (৩.২৮ ফুট) মধ্যে ছিল। এই পদ্ধতিটি জরিপ কাজ এবং মানচিত্র তৈরির জন্য অব্যাহতভাবে জরুরি হয়ে ওঠে। বিজ্ঞানের এই প্রাথমিক প্রয়োগটি সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানকে কীভাবে সহজেই ব্যবহারিকভাবে প্রয়োগ করা যায় তার ধারণার জন্ম দেয়। [১৪]

আরও দেখুন

টেমপ্লেট:Div col

টেমপ্লেট:Div col end

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

বহিঃসংযোগ

পরীক্ষাসমূহ

টেমপ্লেট:কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ