বীজগণিতীয় ভগ্নাংশ
টেমপ্লেট:সম্পর্কে আমরা দৈনন্দিন জীবনে একটি সম্পূর্ণ জিনিসের সাথে এর অংশও ব্যবহার করি। এই বিভিন্ন অংশ এক-একটি ভগ্নাংশ; যার প্রকৃত অর্থ– ‘ভাঙা অংশ’। বীজগণিতীয় ভগ্নাংশ অনেকটাই পাটিগণিতীয় ভগ্নাংশের মতো (লব এবং হর দ্বারা গঠিত কিন্তু বীজগণিতীয় চলক দ্বারা প্রকাশিত)।

বীজগণিতীয় ভগ্নাংশ
বীজগণিতীয় ভগ্নাংশ কাকে বলে
যদি ও দুইটি বীজগণিতীয় রাশি হয়, তবে একটি বীজগণিতীয় ভগ্নাংশ, যেখানে । এখানে ভগ্নাংশটির কে লব (যা ভগ্নাংশের উপরে থাকে) এবং কে হর (যা ভগ্নাংশের নিচে থাকে) বলা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, , , , , , , , , ইত্যাদি বীজগণিতীয় ভগ্নাংশ।[১]
সাধারণ ভগ্নাংশ
সাধারণ ভগ্নাংশ তিন প্রকার[২], যথা–
- প্রকৃত ভগ্নাংশ
- অপ্রকৃত ভগ্নাংশ ও
- মিশ্র ভগ্নাংশ
প্রকৃত ভগ্নাংশ
একটি সাধারণ ভগ্নাংশ। এই ভগ্নাংশের লব , হর । এখানে লব, হর থেকে ছোট। এটি একটি প্রকৃত ভগ্নাংশ।
অপ্রকৃত ভগ্নাংশ
একটি সাধারণ ভগ্নাংশ। এই ভগ্নাংশের লব , হর থেকে বড়। এটি একটি অপ্রকৃত ভগ্নাংশ।
- অপ্রকৃত ভগ্নাংশকে রূপান্তরিত করলে একটি মিশ্র ভগ্নাংশ পাওয়া যায়।
- যেমন:
উদাহরণ এখানে, - সুতরাং,
- পূর্ণ সংখ্যা = ভগফল =
- অপ্রকৃত ভগ্নাংশের লব = ভগশেষ =
- অপ্রকৃত ভগ্নাংশের হর = ভাজক =
-
মিশ্র ভগ্নাংশ
সংখ্যাটিতে একটি পূর্ণ অংশ এবং অপর অংশটি প্রকৃত ভগ্নাংশে আছে। (বা ) একটি মিশ্র ভগ্নাংশ।
- পূর্ণ অংশ + প্রকৃত ভগ্নাংশ = মিশ্র ভগ্নাংশ।
- মিশ্র ভগ্নাংশে একটি পূর্ণ অংশের সাথে একটি প্রকৃত ভগ্নাংশ যুক্ত আকারে থাকে।
- মিশ্র ভগ্নাংশ থেকে সাধারণ ভগ্নাংশ (বা অপ্রকৃত ভগ্নাংশ) রূপান্তর করার নিয়ম:–
- যেমন: ;
- অথবা,
- মিশ্র ভগ্নাংশকে রূপান্তরিত করলে (বা ভাঙলে) একটি অপ্রকৃত ভগ্নাংশ পাওয়া যায়। যেমন: যা অপ্রকৃত ভগ্নাংশ।
বীজগণিতের সাধারণ নিয়মসূমহ
, , , , এবং হলে, , , , , এবং এর যেকোনো মানের জন্য—
নিয়ম ১
- যোগ বা বিয়োগ চিহ্নিত অংশ (বা সংখ্যা) তাদের স্ব স্ব চিহ্নসহ তাদের অবস্থান যেকোনো স্থানে পরিবর্তন করতে পারে। তবে, এদের মাঝে যদি গুণ বা ভাগ বা 'এর' (চিহ্নিত অংশ) অথবা যেকোনোটি অথবা যেকোনো দু'টি অথবা সবগুলিই থাকে তবে তাদের [মধ্যে সর্বপ্রথম 'এর' -এর সমাধান, তারপর ভাগ এবং তারপর গুণ -এর] সমাধান আগে করে নিতে হয়।
- যেমন:
- ↑ প্রথমে ভাগের () সমাধান করা হলো। [যেহেতু, এর (গুণের () আরেক রূপ) নেই।]
- ↑ তারপর গুণের () সমাধান করা হলো।
- ↑ স্ব স্ব চিহ্ন অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন করা হলো।
- [নিয়ম ১০ অনুসারে।]
নিয়ম ২
- আবার অনেক সময় অনুপাত দিয়েও ভগ্নাংশ প্রকাশ করা হয়।
- যেমন:
নিয়ম ৩
- যেমন:
- ,
- কিন্তু অঙ্কে বা সংখ্যায় প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়মটি ব্যবহার করা হয় না (বীজগণিতে প্রকাশের সময় নিয়মটি ব্যবহার করা হয়), বরং অন্য দু'টি নিয়ম ব্যবহার করা হয়। তবে (অঙ্কে বা সংখ্যায় প্রকাশের ক্ষেত্রে এ নিয়মটি) ব্যবহার করতে চাইলে প্রথম বন্ধনী () ব্যবহার করতে হয়।
- যেমন: 12
- গুণের নিয়মের ক্ষেত্রে–
- সঠিক : , ,
সঠিক নয়: , ,
নিয়ম ৪
- ধরন ০১:
- ধরন ০২:
- ধরন ০৩:
নিয়ম ৫
- ধরন ০১:
- ধরন ০২:
- ধরন ০৩:
ব্যাখ্যা:
- একটি রাশির সাথে অন্য একটি রাশি ভাগ অবস্থায় থাকলে, দ্বিতীয় রাশির লব হরে এবং হর লবে পরিণত করে, সেটিকে প্রথম রাশির সাথে গুণ করতে হয়।
নিয়ম ৬
ব্যাখ্যা:
- গুণের ক্ষেত্রে সংখ্যার স্থান পরিবর্তন (বা অদল-বদল) করা যায়।
- যেমন:
- আবার,
- সুতরাং,
নিয়ম ৭
- [নিয়ম ২ অনুসারে।]
- [নিয়ম ৪ (ধরন ০১) অনুসারে।]
- [নিয়ম ৩ অনুসারে।]
নিয়ম ৮
ব্যাখ্যা:
- এখানে প্রথম বন্ধনীর ভেতর দু'টি পদ রয়েছে। আর তা -এর সাথে গুণ অবস্থায় আছে। যেহেতু এখানে গুণ্য -এর সাথে দু'টি পদ গুণ অবস্থায় আছে সেহেতু গুণ্য দ্বারা উভয় পদকেই (অর্থাৎ, গুণক '' কে) আলাদা আলাদা ভাবে গুণ করতে হবে।
- যেমন:
- অথবা,
- (দ্রষ্টব্য: এটি প্রচলিত নিয়ম।)
নিয়ম ৯
- [নিয়ম ৮ অনুসারে।]
- অথবা,
- [নিয়ম ৮ অনুসারে।]
- [নিয়ম ১ অনুসারে।]
- [নিয়ম ৬ অনুসারে।]
- যেমন:
নিয়ম ১০
- ধরন ০১:
- ধরন ০২:
ব্যাখ্যা:
- বন্ধনীর (Bracket) আগে বিয়োগ () চিহ্ন থাকলে, বন্ধনী তুলে দিলে ভেতরের পদসূমহের প্রক্রিয়া চিহ্নসূমহ (গুণ এবং ভাগ বাদে) তথা যোগ এবং বিয়োগ পরিবর্তিত হয় (ধরন ০১)। কিন্তু, (বন্ধনীর আগে) যোগ () চিহ্ন থাকলে, বন্ধনী তুলে দিলে তা (ভেতরের পদসূমহের বা চিহ্ন পরিবর্তিত) হয় না (ধরন ০২)।
- যেমন:
ধরণ উদাহরণ উদাহরণ ২ ০১. এর - এর
০২. - এর
নিয়ম ১১
ব্যাখ্যা:
- কোনো (বীজগণিতীয় বা পাটিগণিতীয়) রাশির পূর্বে কোনো (প্রক্রিয়া) চিহ্ন না থাকলে, সেখানে যোগ চিহ্ন ধরে নিতে হয়। কিন্তু এই যোগ চিহ্ন সাধারণত না লেখাই শ্রেয়।
নিয়ম ১২
- গুণের ক্ষেত্রে এবং চিহ্নের ব্যবহার:
চিহ্ন চিহ্ন ফলাফল উদাহরণ ব্যাখ্যা
ব্যাখ্যা:
- একই চিহ্নযুক্ত [যথা– অথবা ] রাশির গুণের ক্ষেত্রে প্লাস () হয়। আর বিপরীত চিহ্নযুক্ত [যথা– অথবা ] রাশির গুণের ক্ষেত্রে মাইনাস্ () হয়।
নিয়ম ১৩
- যোগের ক্ষেত্রে এবং চিহ্নের ব্যবহার:
চিহ্ন চিহ্ন ফলাফল উদাহরণ ব্যাখ্যা
নিয়ম ১৪
ব্যাখ্যা:
- যেকোনো অখন্ডায়ীত ধণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সাথে হর হিসেবে যুক্ত থাকে। কিন্তু এই না লেখাই শ্রেয়।
- যেমন:
- , , , , ,
নিয়ম ১৫
- বন্ধনীর (Brackets) আগে কিংবা পরে কোনো প্রক্রিয়া চিহ্ন না থাকলে সেখানে ' এর (গুণ) ' ধরে নিতে হয়। এ সময় সবার আগে 'এর' এর কাজ করে নিতে হয়।
- যেমন:
- এর
- ()
- এর
- ()
নিয়ম ১৬
ব্যাখ্যা:
- (বেশি সংখ্যক বিয়োগ চিহ্নিত পদকে) বিয়োগ () করার সুবিধার্থে এখানে মাইনাস কমন নেওয়া হয়েছে। যার কারণে ভেতরের পদসূমহের চিহ্ন পরিবর্তিত হয়েছে। বন্ধনী তুলে দিলে আবার তা পূর্বাবস্থায় () ফিরে যবে।
- যেমন:
নিয়ম ১৭
ব্যাখ্যা:
- যেকোনো সংখ্যা বা পদের সাথে (শূন্য) গুণ অবস্থায় থাকলে, তার মান সবসময় (শূন্য) হয়।
- যেমন:
- [পদের সাথে।]
- অথবা,
- [সংখ্যার সাথে।]
বীজগণিতীয় সূত্রাবলি
বীজগণিতীয় প্রতীক দ্বারা প্রকাশিত যেকোনো সাধারণ নিয়ম বা সিদ্ধান্তকে বীজগণিতীয় সূত্র বা সংক্ষেপে সূত্র বলা হয়। নানাবিধ গাণিতিক...