বহিঃজ শিলা

testwiki থেকে
imported>InternetArchiveBot কর্তৃক ২২:২৭, ২৬ জুন ২০২২ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (যাচাইযোগ্যতার জন্য ১টি বই যোগ করা হল (20220626)) #IABot (v2.0.8.8) (GreenC bot)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
বহিঃজ এবং অন্তঃজ আগ্নেয় শিলার গঠনে পার্থ্যক্য
আই.ইউ.জি.এস. (International Union of Geological Sciences) কর্তৃক ক্ষারীয় উপাদান (NaA2O+KA2O) ও সিলিকা'র (SiOA2) তুলনামূলক ওজনভিত্তিক অ্যাফানাইটিক বহিঃজ আগ্নেয় শিলার শ্রেণিবিন্যাস। ক্ষারীয় শিলারাজি মোটামুটি নীল অঞ্চলজুড়ে, উপক্ষারীয় শিলারাজি হলুদ অঞ্চলজুড়ে অবস্থান করে। Original source: *টেমপ্লেট:Aut (ed.); ১৯৮৯: A classification of igneous rocks and glossary of terms, Blackwell Science, Oxford।
ইতালিতে প্রাপ্ত তুলনামূলকভাবে বৃহৎ একটি ষড়ভুজাকৃতি ফেনোক্রিস্ট -বিশিষ্ট (প্রায় ১ মি.মি. ব্যাস) আগ্নেয় শিলা, যার চারপাশ সূক্ষ্ম-দানার ভিত্তিভর দ্বারা পরিবেষ্টিত (পেট্রোগ্রাফিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা দেখা পাতলা একটি খণ্ড)

বহিঃজ শিলা বলতে আগ্নেয়গিরি হতে উদ্ভূত সেই সব আগ্নেয় শিলাকে নির্দেশ করে, যেগুলো ভূগর্ভস্থ গলিত ম্যাগমা, লাভা হিসেবে ভূ–পৃষ্ঠে প্রবাহিত (বহির্গত) হয়ে, অথবা প্রবল বিস্ফোরণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে নিক্ষিপ্ত হয়ে পরবর্তীকালে ভূ–পৃষ্ঠে পাইরোক্লাস্টিক শিলা (pyroclastics; আক্ষরিক বাংলা: আগুনের খণ্ড) অথবা টাফ[] (tuff; আগ্নেয়ভস্মজাত হালকা, ছিদ্রযুক্ত শিলাবিশেষ) হিসেবে জমা হয়। অন্যদিকে, গলিত ম্যাগমা ভূ–অভ্যন্তরেই শীতল হয়ে যে সকল শিলা গঠন করে, তাদেরকে অন্তঃজ শিলা বলা হয়।[]

ম্যাগমা বাইরে বেরিয়ে আসার প্রধান প্রভাব হচ্ছে, উন্মুক্ত বায়ুতে বা সমুদ্রের পানির নিচে তা আরও দ্রুততর হারে ঠাণ্ডা হয়ে শিলা গঠন করতে পারে। এতে করে কেলাস গঠনের জন্য খুব কম সময় পাওয়া যায়।[] কখনো কখনো এর ম্যাট্রিক্সের অবশিষ্ট কিছু অংশ একেবারেই কেলাসিত হয় না, বরং তা প্রাকৃতিক কাঁচ বা অবসিডিয়ান (obsidian; কেলাসমুক্ত, শক্ত, কাঁচসদৃশ আগ্নেয়শিলা বিশেষ) এ পরিণত হয়।

যদি ম্যাগমার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে উদ্বায়ী পদার্থ থাকে যা উন্মুক্ত গ্যাস হিসেবে নির্গত হয়, তাহলে তা শীতলীকরণের সময় ছোট–বড় আকারের বুদ্বুদ-সদৃশ গহ্বর (vesicles) গঠন করতে পারে, যেমন - ঝামাপাথর (pumice; পামিস), স্কোরিয়া (scoria), অথবা বুদ্বুদাকৃতির ব্যাসল্ট (vesicular basalt) । বহিঃজ শিলার অন্যান্য উদাহরণের মধ্যে রয়েছে রায়োলাইট এবং আন্দেসাইট।

গঠনবিন্যাস

বহিঃজ শিলার গাঠনিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এগুলো এমন সূক্ষ্ম-দানাদার স্ফটিক দ্বারা গঠিত হয় যে তা মানুষের চোখ তার পার্থক্য করতে পারে না; এজন্য একে বলা হয় অ্যাফানাইটিক (aphantic)। অগ্ন্যুৎপাতের সময় অতি দ্রুত গঠিত হয় বলে অ্যাফানাইটিক শিলার কেলাসগুলো ক্ষুদ্রাকৃতির হয়ে থাকে।[] মানুষের চোখে দৃশ্যমান বৃহত্তর আকারের স্ফটিককে বলা হয় ফেনোক্রিস্ট (phenocrysts), যেগুলো ম্যাগমার আধারে ধীর শীতলীকরণকালে গঠিত হয়।[] যখন কোন আগ্নেয় শিলায় ভিন্ন দুটি আকারের কণার উপস্থিতি বিদ্যমান থাকে, তাদের গঠনবিন্যাসকে বলা হয় পর্ফিরিটিক (porphyritic) এবং সূক্ষ্মতর কণাটিকে বলা হয় ভিত্তিভর (groundmass)।[] ম্যাগমায় আটকে পড়া বাষ্প-বুদ্বুদের উপস্থিতির কারণে কোন কোন বহিঃজ শিলা, যেমন- স্কোরিয়া এবং ঝামাপাথরের (পামিস) গঠনবিন্যাস কিছুটা ফুসকুঁড়ি বা বুদ্বুদ সদৃশ হয়ে থাকে।[]

বহিঃজ বস্তুসমূহ এবং শিলার ধরন

ঢাল আগ্নেয়গিরি (shield volcano) হচ্ছে বৃহদাকার ও ধীরগতিতে গঠিত আগ্নেয়গিরি[], যা হতে উদ্গীরিত প্রবাহী ব্যাসল্টপূর্ণ ম্যাগমা বেরিয়ে এসে শীতল হয়ে বহিঃজ শিলা ব্যাসল্ট গঠন করে। ভূ-পৃষ্ঠে সহজলভ্য খনিজ পদার্থ, যেমন- ফেল্ডস্পার ও পাইরক্সিন[] দ্বারা ব্যাসল্ট গঠিত হয়।

চিড় আগ্নেয়গিরি'র (fissure volcano) ফাটল বা চিড়গুলো হতে নিম্ন সান্দ্রতাবিশিষ্ট ব্যাসল্টযুক্ত ম্যাগমা নির্গত হয়ে বহিঃজ শিলা ব্যাসল্ট গঠন করে।[]

যৌগিক বা স্তরীভূত আগ্নেয়গিরি (composite or stratovolcano) হতে নির্গত ম্যাগমা প্রায়শই আন্দেসাইটযুক্ত হয়ে থাকে এবং সচরাচর আন্দেসাইট নামক বহিঃজ শিলা গঠন করে। আন্দেসাইটযুক্ত ম্যাগমা বিভিন্ন গ্যাস ও আচ্ছাদন শিলা (mantle rocks) দ্বারা গঠিত হয়।[]

সিন্ডার (cinder) বা স্কোরিয়া শঙ্কু (scoria cones) হতে উচ্চমাত্রার গ্যাসবিশিষ্ট লাভা তীব্রভাবে উদ্গীরিত হয়[], এবং এ ধরনের মাফিক লাভায় (mafic; ম্যাগনেসিয়াম ও ফেরিক (লোহা) যৌগের আধিক্যের কারণে এমন নাম দেওয়া হয়েছে) বাষ্প বুদ্বুদের উপস্থিতির কারণে, বহিঃজ শিলা স্কোরিয়া গঠিত হয়।[]

লাভা গম্বুজ তৈরি হয় উচ্চ সান্দ্রতার লাভা সঞ্চিত হয়ে গম্বুজাকৃতি ধারণের মাধ্যমে। এই গম্বুজগুলো সচরাচর কঠিনাকার ধারণ করে সিলিকা-সমৃদ্ধ বহিঃজ শিলা অবসিডিয়ান গঠন করে; আবার কখনো কখনো ডেসাইট-সমৃদ্ধ গম্বুজ থেকে বহিঃজ শিলা ডেসাইট (dacite) তৈরি হয়, যেমন - সেইন্ট হেলেন এর পর্বত এ।[]

আগ্নেয়-গহ্বর (calderas) গঠিত হয় অগ্ন্যুৎপাতের পর আগ্নেয়গিরি ধসে গিয়ে সৃষ্ট গর্ত হতে। পুনরুজ্জীবিত গহ্বর থেকে রায়োলাইট-সমৃদ্ধ ম্যাগমা উদ্গীরিত হয়ে বহিঃজ শিলা রায়োলাইট গঠন করতে পারে, যেমনটা হয়েছে ইয়োলোস্টোন আগ্নেয় গহ্বরের ক্ষেত্রে।[]

সমুদ্রগর্ভস্থ আগ্নেয়গিরি সমুদ্রতলে উদ্গীরিত হয়ে বহিঃজ শিলা ঝামাপাথর (pumice) গঠন করে। ঝামাপাথর একটি হালকা কাঁচজাতীয়, বুদ্বুদাকৃতির গঠনের পদার্থ, যার সাথে স্কোরিয়ার পার্থক্য এদের সিলিকার সংযুতিতে, এবং এ কারণে এগুলো পানিতে ভাসে।[]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Wikt