হাইড্রোজেন বর্ণালি সারি

পারমাণবিক হাইড্রোজেন এর নির্গমন বর্ণালি, রাইডবার্গ সূত্র দ্বারা প্রদত্ত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বর্ণালি সারি তে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই পর্যবেক্ষণ প্রাপ্ত বর্ণালী রেখাগুলি ইলেকট্রন পরমাণুর মধ্যে দুটি শক্তি স্তর এর মধ্যের রূপান্তর এর কারণে তৈরি হয়। রাইডবার্গ সূত্রে সারিগুলির শ্রেণিবিন্যাস কোয়ান্টাম মেকানিক্স বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। হাইড্রোজেনের উপস্থিতি সনাক্তকরণ এবং লাল সরণ এর গণনার জন্য বর্ণালি সারি জ্যোতির্বিজ্ঞান বর্ণালী তে গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থবিদ্যা

হাইড্রোজেন পরমাণুতে একটি ইলেক্ট্রন থাকে এবং সেটি তার নিউক্লিয়াসকে প্রদক্ষিণ করে। ইলেক্ট্রন এবং কেন্দ্রীয় প্রোটন এর মধ্যের তড়িৎচুম্বকীয় শক্তি ইলেক্ট্রনের জন্য একটি কোয়ান্টাম অবস্থা সৃষ্টি করে এবং প্রতিটি নিজস্ব শক্তি প্রাপ্ত হয়। হাইড্রোজেন পরমাণুতে এই অবস্থাটি নিউক্লিয়াসের চারপাশে স্বতন্ত্র কক্ষপথ হিসাবে কল্পনা করা হয়েছিল বোর মডেল এ। প্রতিটি শক্তি স্তর বা কক্ষপথ এক একটি পূর্ণসংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করা হয় এবং সেটি চিত্রটিতে টেমপ্লেট:Mvar দিয়ে দেখানো হয়েছে। বোর মডেলটি পরে কোয়ান্টাম মেকানিক্স দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হয় এবং সেখানে ইলেকট্রন একটি কক্ষপথের পরিবর্তে একটি পারমাণবিক কক্ষপথ দখল করে। তবে তাতে হাইড্রোজেন পরমাণুর অনুমোদিত শক্তি স্তর আগের তত্ত্বের মতোই বহাল থাকে।
বর্ণালী নির্গমন ঘটে যখন একটি ইলেক্ট্রনের স্থানান্তর হয় বা লাফ দিয়ে একটি উচ্চ শক্তি স্তর থেকে একটি নিম্ন শক্তি স্তরের অবস্থানে যায়। দুটি স্তরের অবস্থার পার্থক্য করার জন্য নিম্ন শক্তি স্তরকে সাধারণত টেমপ্লেট:Mvar হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং উচ্চতর শক্তি অবস্থাকে টেমপ্লেট:Mvar হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। নির্গত ফোটন এর শক্তি দুটি স্তরের অবস্থার মধ্যে পার্থক্যের শক্তির সাথে মিলে যায়। যেহেতু প্রতিটি স্তরের অবস্থার শক্তি স্থির থাকে তাই তাদের মধ্যে শক্তির পার্থক্য স্থির হয় এবং রূপান্তরটি সর্বদা একই শক্তির ফোটনের সাথে ঘটে।
বর্ণালী রেখাগুলি টেমপ্লেট:Mvar অনুযায়ী দলবদ্ধ হয়ে সারিতে বিভক্ত হয়। সারিগুলিকে ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘতম তরঙ্গদৈর্ঘ্য/সর্বনিম্ন কমাপাঙ্ক অনুসারে গ্রীক অক্ষর ব্যবহার করে নামকরণ করা হয়। যেমন টেমপ্লেট:Nowrap রেখাকে "লাইম্যান-আলফা" (Ly-α) বলা হয় এবং টেমপ্লেট:Nowrap রেখাটিকে "পাসচেন-ডেল্টা" (Pa-δ) বলা হয়।

এই সারি বাদ দিয়েও হাইড্রোজেন থেকে অপর নির্গমন রেখা দেখা যায়। যেমন ২১ সেমি লাইন। এই নির্গমন রেখাগুলিতে হাইপারফাইন রূপান্তরের মতো অনেক বিরল পারমাণবিক ঘটনার সাথে মিল রয়েছে দেখা যায়।[১] সূক্ষ্ম কাঠামোর ফলে অপেক্ষিক সংশোধনের কারণে একক বর্ণালীর রেখাগুলি দুটি বা আরও ঘনিষ্ঠভাবে দলবদ্ধ পাতলা রেখা হিসাবে উপস্থিত হয়।[২]
কোয়ান্টাম মেকানিকাল তত্ত্বে পারমাণবিক নির্গমনের বিচ্ছিন্ন বর্ণালীটি শ্র্রডিঞ্জার সমীকরণ এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এটি মূলত হাইড্রোজেনের মতো পরমাণুর শক্তি বর্ণনার অধ্যয়নের জন্য উৎসর্গীকৃত। আর সময়-নির্ভরশীল হাইজেনবার্গ সমতুল্য সমীকরণটি বাহ্যিক তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ দ্বারা চালিত পরমাণুর অধ্যয়নের সময় সমীচীন হয়ে থাকে।[৩]
একটি পরমাণুর দ্বারা ফোটন শোষণ বা নির্গমন প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ সূত্র পুরো বিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা যেমন একটি পরমাণু সহ একটি ফোটনের জন্য হয়ে থাকে। সুতরাং ফোটন শোষণ বা নির্গমন প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রনের গতি সর্বদা নিউক্লিয়াসের গতি সহকারে হয়। কারণ নিউক্লিয়াসের ভর সর্বদা সীমাবদ্ধ থাকে এবং হাইড্রোজেনের মতো পরমাণুর শক্তি বর্ণনালি অবশ্যই পারমাণবিক ভরের উপর নির্ভর করে। এবং যেহেতু হাইড্রোজেন পরমাণুর কেবলমাত্র একটি প্রোটনের নিউক্লিয়াস থাকে তাই হাইড্রোজেন পরমাণুর বর্ণালী শক্তি কেবল নিউক্লিয়াসের উপর নির্ভর করে (যেমন কুলম্ব ক্ষেত্রে): বাস্তবে একটি প্রোটনের ভর একটি ইলেক্ট্রনের ভরের ca গুণ যা কেবল শূন্য আনুমানিক অনুক্রম দেয়। সুতরাং এটি বিবেচনায় নেওয়া হবে না। [৩]টেমপ্লেট:Clarify
রাইডবার্গ সূত্র
টেমপ্লেট:মূল নিবন্ধ বোর মডেলের স্তরের মধ্যে শক্তি পার্থক্য এবং সে কারণে নির্গত/শোষিত ফোটনের তরঙ্গদৈর্ঘ্যসমূহ রাইডবার্গ সূত্রে দেওয়া হয়:[৪]
এখানে
- টেমপ্লেট:Mvar হল পারমাণবিক সংখ্যা,
- হল মূল কোয়ান্টাম সংখ্যার নিম্ন শক্তি স্তর,
- হল উচ্চ শক্তি স্তরের মূল কোয়ান্টাম সংখ্যা এবং
- হল রাইডবার্গ ধ্রুবক (টেমপ্লেট:Val হাইড্রোজেনের জন্য এবং টেমপ্লেট:Val ভারী ধাতুর জন্য।[৫][৬]
অর্থবোধক মানগুলি কেবল তখনই প্রদান করে যখন এর থেকে কম হয়। দ্রষ্টব্য: এই সমীকরণটি হাইড্রোজেন-জাতীয় সমস্ত প্রজাতির জন্য বৈধ অর্থাৎ কেবলমাত্র একটি একক ইলেকট্রনযুক্ত পরমাণু এবং হাইড্রোজেন বর্ণালী রেখার বিশেষ ক্ষেত্রে Z=১ প্রদান করে।
সারি
লাইম্যান সারি (টেমপ্লেট:Mvar = ১)

টেমপ্লেট:মূল নিবন্ধ বোর মডেলে বাইরের কক্ষপথের কোয়ান্টাম সংখ্যা n > ১ থেকে প্রথম কক্ষপথের কোয়ান্টাম সংখ্যা n' = ১ এর ইলেক্ট্রনের রূপান্তর দ্বারা নির্গত রেখাগুলির লাইম্যান সারি নামে পরিচিত।
এই সারিটির নামকরণ হয় তার আবিষ্কারক থিওডোর লাইম্যান এর নামানুসারে। তিনি ১৯০৬–১৯১৪ সালে এই বর্ণালী রেখা আবিষ্কার করেছিলেন। লাইম্যান সারির সমস্ত তরঙ্গদৈর্ঘ্য অতিবেগুনী ব্যান্ডে অবস্থান করে।[৭][৮]
| টেমপ্লেট:Mvar | টেমপ্লেট:Mvar, শূন্যস্থান
(nm) |
|---|---|
| ২ | ১২১.৫৭ |
| ৩ | ১০২.৫৭ |
| ৪ | ৯৭.২৫৪ |
| ৫ | ৯৪.৯৭৪ |
| ৬ | ৯৩.৭৮০ |
| ∞ | ৯১.১৭৫ |
| উৎস:[৯] | |