বামার সারি

testwiki থেকে
imported>ShakilBoT কর্তৃক ১৬:১৮, ৪ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (তথ্যসূত্র সংশোধন ও পরিষ্কারকরণ)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
বামার সারির "দৃশ্যমান" হাইড্রোজেন নির্গমন বর্ণালি সারি। ডানদিকে লাল রেখাটি এইচ-আলফা। চারটি রেখা (ডান দিক থেকে গণনা করলে) সরাসরি দৃশ্যমান পরিসরে রয়েছে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ রেখাদুটি খালি চোখে দেখা যেতে পারে, তবে তাদের অতিবেগুনী হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪০০ ন্যানো মিটারের চেয়ে কম।

পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানে বামার সারি, বা বামার রেখা হল ছয়টি নামযুক্ত সারির একটি, যেটি হাইড্রোজেন পরমাণুর বর্ণালী রেখা নিঃসরণ বর্ণনা করে। বামার সূত্র ব্যবহার করে বামার সারি গণনা করা হয়, ১৮৮৫ সালে জোহান জ্যাকব বামার এই পরীক্ষালব্ধ সমীকরণটি আবিষ্কার করেছিলেন।

হাইড্রোজেনের দৃশ্যমান আলোক বর্ণালী চারটি তরঙ্গ দৈর্ঘ্য প্রদর্শন করে, সেগুলি হল ৪১০ ন্যানো মিটার, ৪৩৪ ন্যানো মিটার, ৪৮৬ ন্যানো মিটার, এবং ৬৫৬ ন্যানো মিটার। এটি উত্তেজিত অবস্থায় ইলেকট্রন থেকে ফোটন বিকিরণের অনুরূপ। এই ক্ষেত্রে ইলেকট্রনগুলি মুখ্য কোয়ান্টাম সংখ্যা n = 2 দ্বারা বর্ণিত কোয়ান্টাম স্তরে স্থানান্তরিত হয়।[] বেশ কয়েকটি লক্ষণীয় অতিবেগুনী বামার রেখা আছে, যাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪০০ ন্যানো মিটারের চেয়ে কম। অতিবেগুনীতে ৩৬৪.৬ ন্যানো মিটার তরঙ্গদৈর্ঘে সীমার কাছে পৌঁছোনোর সাথে সাথে এই রেখাগুলির সংখ্যা অসীম ধারাবাহিক।

বামারের আবিষ্কারের পরে, আরও পাঁচটি হাইড্রোজেন বর্ণালি সারি আবিষ্কৃত হয়েছিল, যেগুলিতে ইলেকট্রনের স্থানান্তরণের ক্ষেত্রে n এর জন্য ২ ছাড়া অন্য মান আছে।

সংক্ষিপ্ত বিবরণ

হাইড্রোজেন পরমাণুর সরলীকৃত রাদারফোর্ড বোর মডেলে, নিউক্লিয়াসের নিকটবর্তী দ্বিতীয় শক্তির স্তর এবং আরও দূরের স্তরগুলির মধ্যে একটি ইলেকট্রনের লাফের ফলে বামার রেখার সৃষ্টি হয়। এখানে দেখানো হয়েছে একটি ফোটন নির্গমন। এখানে দেখানো ৩→২ অবস্থান্তরে এইচ-আলফা উৎপন্ন হয়, যেটি বামার সারির প্রথম রেখা। হাইড্রোজেনের জন্য(Z = 1) এই অবস্থান্তরের ফলে যে ফোটন উৎপন্ন হয় তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৬৫৬ ন্যানো মিটার (লাল)।

বামার সিরিজকে চিন্হিত করা হয় n ≥ 3 থেকে n = 2 তে স্থানান্তরিত ইলেক্ট্রনের ভিত্তিতে। এখানে n হলো প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা। এই স্থানান্তরগুলিকে ক্রমানুসারে গ্রীক অক্ষর দ্বারা নামকরণ করা হয়। n = 3 থেকে n = 2 is হলো H- α, 4 থেক্র 2 হলো H-β, 5 থেকে 2 হলো H-γ, এবং 6 থেকে 2 হলো H-δ।

n এর অবস্থান্তর ৩→২ ৪→২ ৫→২ ৬→২ ৭→২ ৮→২ ৯→২ ∞→২
নাম H-α / Ba-α H-β / Ba-β H-γ / Ba-γ H-δ / Ba-δ H-ε / Ba-ε H-ζ / Ba-ζ H-η / Ba-η বামার বিরতি
তরঙ্গদৈর্ঘ (ন্যানো মিটার, বায়ু) ৬৫৬.২৭৯[] ৪৮৬.১৩৫[] ৪৩৪.০৪৭২[] ৪১০.১৭৩৪[] ৩৯৭.০০৭৫[] ৩৮৮.৯০৬৪[] ৩৮৩.৫৩৯৭[] ৩৬৪.৬
শক্তি পার্থক্য (ইলেকট্রন ভোল্ট) ১.৮৯ ২.৫৫ ২.৮৬ ৩.০৩ ৩.১৩ ৩.১৯ ৩.২৩ ৩.৪০
Color লাল সবুজাভ নীল নীল বেগুনী (অতিবেগুনী) (অতিবেগুনী) (অতিবেগুনী) (অতিবেগুনী)

যদিও পদার্থবিদরা ১৮৮৫ সালের আগে পারমাণবিক নির্গমন সম্পর্কে সচেতন ছিলেন, বর্ণালী রেখাগুলি কোথায় উপস্থিত হওয়া উচিত তা সঠিকভাবে অনুমান করার জন্য তাঁদের কাছে কোনও সরঞ্জাম ছিল না। বামার সমীকরণটি উচ্চ নির্ভুলতার সাথে হাইড্রোজেনের চারটি দৃশ্যমান বর্ণালী রেখার পূর্বাভাস দিয়েছিল। রিডবার্গ সমীকরণটি বামারের সমীকরণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সাধারণীকরণ করা, এবং এর ফলে পদার্থবিজ্ঞানীরা লাইম্যান, পাসচেন, এবং ব্র্যাকেট সারি সন্ধানের দিকে অগ্রসর হয়েছিলেন, যেগুলি দৃশ্যমান বর্ণালীর বাইরে পাওয়া অন্যান্য হাইড্রোজেনের বর্ণালী রেখার পূর্বাভাস দিয়েছিল।

পারমাণবিক হাইড্রোজেনের বামার সিরিজের লাল এইচ-আলফা বর্ণালী রেখা, যেটি কক্ষ n = ৩ থেকে n = ২ তে স্থানান্তরের ফলে জাত, মহাবিশ্বের অন্যতম সুস্পষ্ট রঙ। এটি কালপুরুষ নীহারিকার মত নির্গমন বা আয়নীকরণ নীহারিকা বর্ণালীতে একটি উজ্জ্বল লাল রেখার অবদান রাখে, এটি প্রায়ই H II অঞ্চলের তারা গঠন অঞ্চলে পাওয়া যায়। প্রকৃত রঙের ছবিগুলিতে, দৃশ্যমান বামার সারি, যেগুলি হাইড্রোজেন নিঃসরণ করে, তাদের সংমিশ্রণে এই নীহারিকা লালচে গোলাপী রঙ ধারণ করে।

পরে, হাইড্রোজেন বর্ণালীর বামার সারির রেখাগুলি যখন খুব উচ্চ বিশ্লেষণে (রেজোলিউশন) পরীক্ষা করা হয়েছিল, তখন আবিষ্কার করা গিয়েছিল যে তারা আসলে খুব কাছাকাছি থাকা যুগ্ম রেখা। এই বিভাজনকে সূক্ষ্ম কাঠামো বলা হয়। আরো দেখা গিয়েছিল যে, ৬ এর চেয়ে বড় মানের n এর কক্ষের উত্তেজিত ইলেকট্রন, n = ২ কক্ষে লাফ দিতে পারে, এটি করার সময় বিভিন্ন বৈচিত্রের অতিবেগুনী রশ্মি নির্গত হয়।

বামারের দুটি রেখা (α এবং β) একটি ডয়টেরিয়াম প্রদীপের নির্গমন বর্ণালীতে পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান

বামারের সূত্র

বামার লক্ষ্য করেছিলেন যে হাইড্রোজেন বর্ণালীতে দৃশ্যমান আলোক অঞ্চলে প্রতিটি রেখার সাথে একটি বিশেষ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সম্পর্ক আছে। সেই তরঙ্গদৈর্ঘ্যটি ছিল টেমপ্লেট:Val। যখন ২ এর চেয়ে বড় কোন পূর্ণসংখ্যার বর্গ করা হয় হয় এবং তারপরে তাকে সেই সংখ্যার বর্গ এবং ৪ এর বিয়োগফল দিয়ে ভাগ করা হয়, তারপর সেই সংখ্যাকে টেমপ্লেট:Val দিয়ে গুণ করা হয় (নীচে সমীকরণ দেখুন) তাহলে হাইড্রোজেন বর্ণালীতে অন্য একটি রেখার তরঙ্গদৈর্ঘ্য পাওয়া যায়। এই সূত্র দ্বারা, তিনি দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, বর্ণালীবীক্ষণ দ্বারা তাঁর সময়ে করা রেখার পরিমাপে কিছুটা ভুল ছিল এবং তাঁর সূত্র দিয়ে পূর্বাভাস করা রেখাগুলি পরে পাওয়া গেছে যদিও এখনও সেগুলি পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। তাঁর সংখ্যাটি সারির সীমা হিসাবেও প্রমাণিত হয়েছিল। বামার সমীকরণ শোষণ / নির্গমন রেখার তরঙ্গদৈর্ঘ্য সন্ধান করতে ব্যবহৃত হতে পারে এবং মূলত নিম্নলিখিত হিসাবে উপস্থাপিত হয়েছিল:

λ =B(n2n2m2)=B(n2n222)

যেখানে

λ হল তরঙ্গদৈর্ঘ।
B হল একটি ধ্রুবক যার মান টেমপ্লেট:Val বা টেমপ্লেট:Val
m হল ২
n হল একটি পূর্ণসংখ্যা যাতে n > m

১৮৮৮ সালে, পদার্থবিদ জোহানেস রিডবার্গ হাইড্রোজেনের সমস্ত স্থানান্তরের জন্য বামার সমীকরণের সাধারণীকরণ করেছিলেন। সাধারণভাবে বামার সিরিজ গণনা করতে সমীকরণটি রিডবার্গ সূত্রের একটি নির্দিষ্ট উদাহরণ এবং উপরের সূত্রটির একটি সহজ পারস্পরিক গাণিতিক পুনঃব্যবস্থা হিসাবে অনুসরণ করে (প্রচলিতভাবে একক অবিচ্ছেদ্য ধ্রুবক হিসাবে n এর জন্য m চিহ্ন ব্যবহার করে):

1λ=4B(1221n2)=RH(1221n2)forn=3,4,5,...

যেখানে λ হল শোষিত / নির্গত আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য এবং RH হল হাইড্রোজেনের জন্য রিডবার্গ ধ্রুবক। রিডবার্গ ধ্রুবকটি বামার সমীকরণে টেমপ্লেট:Sfrac, এবং এই মান, অসীম ভারী নিউক্লিয়াসের জন্য, টেমপ্লেট:Sfrac = টেমপ্লেট:Val[]

আরও দেখুন

টীকা

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

  1. টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
  2. ২.০ ২.১ ২.২ ২.৩ ২.৪ ২.৫ ২.৬ Kramida, A., Ralchenko, Yu., Reader, J., and NIST ASD Team (2019). NIST Atomic Spectra Database (ver. 5.7.1), [Online]. Available: https://physics.nist.gov/asd [2020, April 11]. National Institute of Standards and Technology, Gaithersburg, MD. DOI: https://doi.org/10.18434/T4W30F
  3. টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি