সদিক রাশির বীজগণিত

testwiki থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
ভেক্টর বীজগণিতের প্রাথমিক আলোচনা

স্কেলার রাশির শুধু মান থাকায় তাদের যোগ, বিয়োগ, গুণ ইত্যাদি বীজগণিতের সাধারণ নিয়মানুসারে হয়ে থাকে। কিন্তু ভেক্টর রাশির মানের সাথে দিক জড়িত থাকায় তাদের যোগ, বিয়োগ, গুণ ইত্যাদি বীজগণিতের সাধারণ নিয়মানুসারে করা যায় না। এর জন্য আলাদা নিয়মের প্রয়োজন হয়। দুটি স্কেলার রাশির যোগ সাধারণ বীজগণিতের সূত্রানুসারে করা যায়, যেমন: ৬ + ৮ = ১৪। কিন্তু দুটি ভেক্টর রাশির যোগফল এভাবে বের করা যায় না, কেননা দুটি ভেক্টর রাশির যোগফল শুধু রাশিগুলোর মানের উপর নির্ভর করে না, প্রত্যেকের দিক এবং মধ্যবর্তী কোণের উপরও নির্ভর করে।

ধরা যাক, একটি কণা P থেকে ৬ মি. সরে Q-তে গেল। এরপর QR বরাবর সেটি ৮ মি. দূরত্ব অতিক্রম করে। তাহলে কণাটির সরণ হল PR। আর কণাটি যদি PQ-এর QR বরাবর না গিয়ে QS বরাবর ৮ মি. দূরত্ব অতিক্রম করে, তাহলে এর সরণ হবে PS। চিত্র থেকে দেখা যাচ্ছে PRPS সমান নয়, অর্থাৎ এখানে রাশিদুটির মানের সাথে দিক জড়িত থাকায় তাদের যোগ সাধারণ গাণিতিক নিয়মে ৬ মি. + ৮ মি. = ১৪ মি. হল না। দুটি ভেক্টর রাশির মান যদি যথাক্রমে ৬ মি. ও ৮ মি. হয় তবে তাদের মধ্যবর্তী কোণের উপর নির্ভর করে যোগফলের মান ২ মি. থেকে ১৪ মি. পর্যন্ত যে কোন সংখ্যা। কাজেই ভেক্টর রাশির যোগ সাধারণ বীজগাণিতিক নিয়মে করা যায় না, তা জ্যামিতিক উপায়ে করতে হয়। ভেক্টরের যোগ, বিয়োগ, গুণ ইত্যাদি সংবলিত গণিতের শাখাকে ভেক্টর বীজগণিত বলা হয়। গণিতের এই শাখায় ভেক্টর রাশিসমূহের যোগ, বিয়োগ, গুণ প্রভৃতির বিভিন্ন সূত্র ও নিয়ম-কানুন আলোচনা করা হয়।

ইতিহাস

আজকের দিনে আমরা ভেক্টর বলতে যা বুঝে থাকি তা দুশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিকশিত হয়ে এসেছে। প্রায় ডজন খানেক মানুষ এর পিছনে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখেন।[]

ইটালিয়ান গণিতবিদ জিউস্টো বেলাভিটিস ১৮৩৫ খ্রীস্টাব্দে সমানতার ধারণা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ভেক্টরের মৌলিক ধারণার সূত্রপাত করেন। ইউক্লিডীয় সমতল নিয়ে কাজ করে তিনি একই দৈর্ঘ্য ও দিক বিশিষ্ট যে কোন এক জোড়া রেখাংশের সমানতার প্রণয়ন করেন। কার্যত তিনি সমতলীয় বিন্দু যুগলের (bipoints) সমতুল্যতার অন্বয় নিরূপণ করেন এবং এভাবে তিনি সমতলীয় ভেক্টরের আদি বিষয়-বস্তু খাড়া করেন।[]টেমপ্লেট:Rp

আইরিশ গণিতবিদ উইলিয়াম রোয়ান হ্যামিল্টন ভেক্টরকে চৌঠায়ন বা চার-সমষ্টির অংশ হিসেবে উপস্থাপন করেন।

ভেক্টরের দৈর্ঘ্য নির্ণয়

যদি একটি ত্রিমাত্রিক ইউক্লিডীয় স্পেস এ একটি ভেক্টর 𝐚 = a1e1 + a2e2+ a3e3 হয় (যেখানে e1, e2, e3 লম্ব একক ভেক্টর), তবে ভেক্টরটির মান নিম্নরূপভাবে নির্ণয় করা সম্ভবঃ

𝐚=a12+a22+a32

উপরের সূত্রটি পিথাগোরাসের উপপাদ্যের ভিত্তিতে কোন ভেক্টর এর মান নির্ণয়ের একটি পদ্ধতি। যেহেতু e1, e2, e3 তিনটি লম্ব একক ভেক্টর, সুতরাং এক্ষেত্রে উপরের সূত্রটি প্রয়োগ করা সম্ভব হয়েছে।

এছাড়া কোন ভেক্টরের ডট গুণন এর বর্গমূল নিয়েও ভেক্টর রাশির মান নির্ণয় করা যায়।

𝐚=𝐚𝐚

ভেক্টর যোগের নিয়ম

ধরা যাক 𝐚=a1e1 + a2e2 + a3e3 এবং 𝐛=b1e1 + b2e2 + b3e3, যেখানে e1, e2, e3 লম্ব একক ভেক্টর।

সুতরাং 𝐚 এবং 𝐛 এর যোগফল হবেঃ

𝐚+𝐛=(a1+b1)𝐞𝟏+(a2+b2)𝐞𝟐+(a3+b3)𝐞𝟑

দুইটি ভেক্টরের যোগ

ভেক্টর বীজগণিত সাধারণ বীজগণিত থেকে ভিন্ন।এর মান ভেক্টর দুটির মান ও এদের মধ্যবর্তী কোনের উপর নির্ভর করে।ভেক্টর যোগে দুই বা ততোধিক ভেক্টর রাশি যোগ করা হয়।দুইটি ভেক্টর রাশির যোগের ক্ষেত্রে:একটি ভেক্টর রাশির শীর্ষবিন্দুতে অপর একটি ভেক্টর রাশির পাদবিন্দু স্থাপন করি। প্রথম ভেক্টর এর পাদবিন্দু এবং দ্বিতীয় ভেক্টর এর শীর্ষবিন্দু যোগ করলে যে সরলরেখা পাওয়া যাবে এর দৈর্ঘ্য দ্বারা ভেক্টর দুটির যোগফল নির্দেশ করা হয়, এবং এদের দিক হয় প্রথম ভেক্টর এর পাদ বিন্দু থেকে শেষ ভেক্টর এর শীর্ষবিন্দু এর দিকে।

দুইয়ের অধিক ভেক্টরের যোগ

ভেক্টর বিয়োগের নিয়ম

যদি

𝐚=a1e1 + a2e2 + a3e3 এবং
𝐛=b1e1 + b2e2 + b3e3 হয় তবে-

দুটি ভেক্টর 𝐚 এবং 𝐛 এর বিয়োগফল লেখা যায় এভাবেঃ

𝐚𝐛=(a1b1)𝐞𝟏+(a2b2)𝐞𝟐+(a3b3)𝐞𝟑

ভেক্টর গুণন

ডট গুণন/স্কেলার গুণন

একটি ভেক্টরকে একটি স্কেলার রাশি দ্বারাও গুণ করা যায়,তবে এক্ষেত্রে গুণফলটিও একটি স্কেলার রাশি হয়। যেমনঃ একটি ভেক্টর 𝐚 কে যদি একটি স্কেলার r দ্বারা গুণ করা হয় তবে গুণফলটিকে এভাবে লিখা যায়ঃ

r𝐚=(ra1)𝐞𝟏+(ra2)𝐞𝟐+(ra3)𝐞𝟑

আবার দুটি ভেক্টরের মধ্যে ডট গুণন করলেও গুণফলটি একটি স্কেলার রাশি হয়।দুটি ভেক্টরের ডটগুণফলকে এভাবে লেখা যায়ঃ

𝐚𝐛=a1,a2,,anb1,b2,,bn=a1b1+a2b2++anbn

এখানে 𝐚 এবং 𝐛 হলো n ডাইমেনসনের ভেতর অবস্থিত দুটি ভেক্টর; a1, a2,... ......, an হলো 𝐚এর স্থানাঙ্ক; এবং b1, b2, ........., bn হলো 𝐛 এর স্থানাঙ্ক.

ক্রস গুণন

ভেক্টর বীজগণিতের সূত্র সমূহ

ত্রিভুজ সূত্র

কোন ত্রিভুজের দুটি সন্নিহিত বাহু যদি একই ক্রমে দুটি একই ধরনের ভেক্টরকে নির্দেশ করে, তাহলে ত্রিভুজের তৃতীয় বাহুটি বিপরীত ক্রমে ভেক্টরদ্বয়ের লব্ধির মান ও দিক নির্দেশ করবে।

বহুভুজ সূত্র

দুইয়ের অধিক ভেক্টরের ক্ষেত্রে ভেক্টরগুলোকে যদি এমন ভাবে একই ক্রমে সাজানো হয় যেন প্রথম ভেক্টরের পাদবিন্দু ও শেষ ভেক্টর রাশির শীর্ষবিন্দু যোগ করলে একটি বহুভুজ তৈরি হয় তবে-ঐ বহুভুজের শেষ বাহুটি বিপরীত ক্রমে ভেক্টর রাশিগুলোর লব্ধি নির্দেশ করে।

সামান্তরিক সূত্র

যদি একটি সামান্তরিকের কোন কৌণিক বিন্দু থেকে অঙ্কিত পরস্পর সন্নিহিত দুটি বাহুদ্বারা কোন বিন্দুতে ক্রিয়াশীল একই ধরনের দুটি ভেক্টরের মান ও দিক প্রকাশ করা যায় তবে ঐ বিন্দু থেকে অঙ্কিত সামান্তরিকের কর্ণদ্বারা ভেক্টরদ্বয়ের মান ও দিক প্রকাশ করা যাবে।

বিনিময় সূত্র

A+B=B+A

বণ্টন সূত্র

m(A+B)=mA+mB

সংযোগ সূত্র

(A+B)+C=A+(B+C)

আরও দেখুন

সদিক রাশি অদিক রাশি

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা টেমপ্লেট:গণিত-অসম্পূর্ণ