প্রাবল্য (পদার্থবিজ্ঞান)

testwiki থেকে
2409:4061:2e0f:42bc::128a:c306 (আলোচনা) কর্তৃক ০২:৪০, ৬ নভেম্বর ২০২২ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (শক্তির পরিমাণ করেছি)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন

টেমপ্লেট:Other uses

পদার্থবিজ্ঞানে, বিকিরিত শক্তির প্রাবল্য বলতে প্রতি একক ক্ষেত্রফলে স্থানান্তরিত শক্তির পরিমাণ বোঝায়, যেখানে ক্ষেত্রফল পরিমাপ করা হয় শক্তি স্থানান্তরের দিকের সাথে লম্বভাবে অবস্থিত সমতল বরাবর। এস.আই পদ্ধতিতে এর একক ওয়াট প্রতি বর্গমিটার (W/m2)। বিভিন্ন তরঙ্গ, যেমন- শাব্দিক তরঙ্গ (শব্দ) অথবা তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ (আলো, বেতার তরঙ্গ), এর ক্ষেত্রে এটি বহুল ব্যবহৃত একটি পরিভাষা; যেখানে প্রাবল্য বলতে কোন তরঙ্গের একক পর্যায়কাল সময়ে গড় স্থানান্তরিত শক্তিকে নির্দেশ করে। শক্তির স্থানান্তর ঘটে এমন অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রাবল্য শব্দটি প্রয়োগ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, বাগানে পানি ছিটানোর যন্ত্র থেকে নির্গত পানির ফোঁটা কর্তৃক পরিবাহিত গতিশক্তির প্রাবল্য নির্ণয় করার কথা উল্লেখ করা যায়।

কথ্যভাষায় কখনো কখনো ব্যবহৃত হয়ে থাকলেও, এখানে ব্যবহৃত "প্রাবল্য" (intensity) শব্দটি "শক্তি" (strength), "বিস্তার" (amplitude), "মাত্রা" (magnitude), কিংবা "স্তর" (level) - শব্দগুলোর সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি।

ত্রিমাত্রিক স্থানের কোন বিন্দুতে শক্তি ঘনত্ব (energy density; একক আয়তনের শক্তি) এবং শক্তি স্থানান্তরের গতিবেগ এর গুণফল বের করে ঐ বিন্দুর প্রাবল্য নির্ণয় করা যায়। শক্তিকে ক্ষেত্রফল দিয়ে ভাগ করে প্রাপ্ত এককই এদের লব্ধি ভেক্টরের একক (অর্থাৎ, পৃষ্ঠ শক্তি ঘনত্ব)।

গাণিতিক বর্ণনা

কোন বিন্দু উৎস থেকে যদি শক্তি চারিদিকে বিকিরিত হয় (যার ফলে গোলকাকার তরঙ্গ তৈরি হয়), এবং কোন শক্তিই যদি মাধ্যম কর্তৃক শোষিত বা বিক্ষিপ্ত (scattered) না হয়, তাহলে প্রাবল্য ঐ বিন্দু থেকে দূরত্বের বর্গের সমানুপাতে হ্রাস পেতে থাকে। এটি বিপরীত-বর্গীয় সূত্রের (inverse-square law) একটি দৃষ্টান্ত।

নিট নির্গত শক্তি ধ্রুব থাকলে, শক্তির নিত্যতা সূত্র প্রয়োগ করে পাওয়া যায়:

P=𝐈d𝐀;

যেখানে,

P = নিট বিকিরিত শক্তি,

𝐈 = প্রাবল্য, অবস্থানের ফাংশন হিসেবে,

d𝐀 = উৎসকে পরিবেষ্টনকারী ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আবদ্ধ পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল

সুষম প্রাবল্য

𝐈

বিশিষ্ট কোন পৃষ্ঠ, যেমন- কোন গোলকাকার পৃষ্ঠ যার কেন্দ্রে বিন্দু উৎসটি অবস্থিত, এর সাপেক্ষে সমাকলন করলে সমীকরণটি দাঁড়ায়:

P=|I|Asurf=|I|4πr2;

যেখানে,

|I|= গোলক পৃষ্ঠের প্রাবল্যের মান,

r= গোলকের ব্যাসার্ধ,

Asurf=4πr2= গোলকের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল

𝐈

এর জন্য সমাধান করে পাওয়া যায়,

|I|=PAsurf=P4πr2

মাধ্যম যদি সিক্ত বা স্যাঁতসেঁতে হয়, তাহলে প্রাবল্য এই সমীকরণ থেকে প্রাপ্ত মানের চেয়েও দ্রুততর হারে হ্রাস পায়। শক্তি সঞ্চারণে সক্ষম এমন যেকোন কিছুর সাথে প্রাবল্য সম্পর্কিত থাকতে পারে। কোন একবর্ণী সঞ্চারণশীল তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ, যেমন একটি সমতল তরঙ্গ অথবা একটি গাউসীয় রশ্মি'র জন্য,

E

যদি তড়িৎক্ষেত্রের জটিল বিস্তার হয়, তাহলে কোন অচৌম্বক পদার্থের মধ্য দিয়ে অগ্রসরমান ঐ তরঙ্গটির, সময়ের সাথে গড়কৃত শক্তি ঘনত্ব (time-averaged energy density) হবে,

U=n2ε02|E|2;

এবং ওপরের সমীকরণটিকে তরঙ্গ বেগ,

(cn)

দ্বারা গুণ করে স্থানিক প্রাবল্য (local intensity) পাওয়া যায়:

I=cnε02|E|2

যেখানে,

n= প্রতিসরণাঙ্ক,

c= শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ, এবং

ε0= শূন্য মাধ্যমে প্রবেশ্যতা (vacuum permittivity)

একবর্ণী নয় এমন তরঙ্গের ক্ষেত্রে, তরঙ্গের ভিন্ন ভিন্ন বর্ণালীভুক্ত উপাংশগুলোকে সাধারণভাবে যোগ করলেই প্রাবল্য পাওয়া যায়। এটা অবশ্য যথেচ্ছ কোন তাড়িতচৌম্বক ক্ষেত্রের বেলায় খাটে না। যেমন- কোন বিলীয়মান তরঙ্গ (evanescent wave) কোন শক্তি স্থানান্তর না করলেও এর সসীম তাড়িতিক বিস্তার থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রাবল্যকে পোয়েন্টিং ভেক্টর (Poynting vector) এর মান দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা উচিৎ।[]

"প্রাবল্য" এর বিকল্প সংজ্ঞা

আলোকমিতি এবং রেডিওমিতিতে, প্রাবল্য এর ভিন্ন অর্থ রয়েছে: প্রতি একক ঘনকোণে দীপন বা বিকীর্ণ শক্তি। আলোকবিজ্ঞানে এটি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে প্রাবল্য বলতে বিকীর্ণ প্রাবল্য (radiant intensity), দীপন প্রাবল্য (luminous intensity), বা দেদীপ্যমানতা (irradiance), যে কোনটাই বোঝাতে পারে; সেটা নির্ভর করে ব্যবহারকারীর শাস্ত্রীয় প্রয়োগের ওপর। কখনো কখনো প্রতিভাস (Radiance) কেও প্রাবল্য হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে, বিশেষ করে জ্যোতির্বিদজ্যোতিঃপদার্থবিদগণ কর্তৃক, এবং তাপ সঞ্চালন শাস্ত্রে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র