আর্দ্রতা

কোনো স্থানের বায়ুতে কতটুকু জলীয়বাষ্প আছে তা যে ভৌত রাশি দ্বারা নির্দেশ করা হয় তাকে আর্দ্রতা বলে। পানির গ্যাসীয় অবস্থা তথা জলীয়বাষ্প সচরাচর মানুষের চোখে অদৃশ্য থাকে। আর কোনো নির্দিষ্ট স্থানের আর্দ্রতা হলো সেই স্থানের বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের পরিমাণ অর্থাৎ বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের ঘনমাত্রা। আর্দ্রতা নির্দিষ্ট কোনো স্থানে বৃষ্টিপাত, গুড়িগুড়ি বৃষ্টি, তুষারপাত, sleet, ice pellets, graupel, hail ইত্যাদি বর্ষণের (precipitation) এবং শিশির ও কুয়াশার উপস্থিতির কিংবা নির্দিষ্ট কোনো স্থানে এসব ঘটনা সংঘটনের সম্ভাবনা নির্দেশ করে।
কোনো নির্দিষ্ট স্থানের বা ব্যবস্থার আর্দ্রতা ঐ স্থান বা ব্যবস্থার তাপমাত্রা ও চাপের ওপর নির্ভর করে। একই পরিমাণ জলীয়বাষ্প উষ্ণ বায়ু অপেক্ষা শীতল বায়ুতে অধিক আপেক্ষিক আর্দ্রতার সৃষ্টি করে। আর্দ্রতার সাথে সম্পর্কযুক্ত একটি পরামিতি হচ্ছে শিশিরাঙ্ক বা শিশিরবিন্দু। যদি কোন স্থানের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তাহলে ঐ স্থানের বায়ুকে সম্পৃক্ত করার জন্য যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প আবশ্যক, তার পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। আবার, এক খণ্ড বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পেলে, এতে জল যুক্ত না করলেও কিংবা এটা থেকে জল অপসারণ না করলেও এটি (বায়ু) সম্পৃক্তি বিন্দুতে পৌঁছবে। এক খণ্ড বায়ুর মধ্যে ধারণকৃত জলীয়বাষ্পের পরিমাণে বিস্তর ব্যবধান ঘটতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সম্পৃক্ততার কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে এমন প্রতি ঘন মিটার বায়ু টেমপ্লেট:Cvt তাপমাত্রায় ২৮ গ্রাম পানি ধারণ করতে পারে, কিন্তু টেমপ্লেট:Cvt তাপমাত্রার ক্ষেত্রে প্রতি ঘন মিটার বায়ুতে কেবল ৮ গ্রাম পানি থাকা সম্ভব।
আর্দ্রতার তিনটি প্রাথমিক পরিমাপ ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। যথা: পরম, আপেক্ষিক এবং নির্দিষ্ট আর্দ্রতা। পরম আর্দ্রতাকে প্রতি একক আয়তনের আর্দ্র বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের ভরের আকারে (গ্রাম প্রতি ঘনমিটার এককে)[২] অথবা প্রতি একক ভরের শুষ্ক বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের ভরের আকারে (সাধারণত গ্রাম প্রতি কিলোগ্রাম এককে)[৩] প্রকাশ করা হয়। আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে সচরাচর শতকরা হিসাবে প্রকাশ করা হয়, যা একই তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ যে আর্দ্রতা পাওয়া যায়, তার সাপেক্ষে পরম আর্দ্রতার একটি তাৎক্ষণিক অবস্থা নির্দেশ করে। আর, নির্দিষ্ট আর্দ্রতা হলো উপস্থিত জলীয় বাষ্প ভরের ও আর্দ্র বায়ুর মোট ভরের অনুপাত।
আর্দ্রতা ভূপৃষ্ঠীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ এক ভূমিকা পালন করে। যেসব প্রাণী তাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ঘর্ম-নিঃসরণ প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল, সেসব প্রাণীর ক্ষেত্রে আর্দ্রতার আধিক্য এদের ত্বকের উপরিভাগ থেকে আর্দ্র-স্বতঃবাষ্পীভবনের হার কমিয়ে ফেলার মাধ্যমে এদের শরীরের তাপ বিনিময়ের (তাপ বের করে দেওয়ার) প্রক্রিয়াটির কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। এই প্রভাবটি আর্দ্রতা সূচক (humidex) নামেও পরিচিত, যা একটি তাপ-সূচক ছক ব্যবহার করে হিসাব করা যায়।
বায়ুর জলীয়বাষ্প "ধারণের" কিংবা এর "সম্পৃক্ত" হওয়ার ধারণাটিকে প্রায়শই আপেক্ষিক আর্দ্রতার ধারণাজনিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়। সে যাই হোক, এই বিষয়টি বিভ্রান্তিকর যে, একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট কোনো স্থানে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প প্রবেশ করে (কিংবা প্রবেশ করতে পারে), তা ঐ স্থানে উপস্থিত বায়ুর (নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ইত্যাদির) পরিমাণের থেকে আলাদা। প্রকৃতপক্ষে, বায়ু দ্বারা পরিপূর্ণ নির্দিষ্ট আয়তনের একটি স্থানের জলীয়বাষ্প ধারণের ক্ষেত্রে সাম্যাবস্থার যে সক্ষমতা (সাম্যাবস্থার-ধারণক্ষমতা বা equilibrium capacity) থাকে, একই আয়তনের শূন্যস্থানের জলীয়বাষ্প ধারণের ক্ষেত্রেও প্রায় একই সাম্য-ধারণক্ষমতা থাকে। এখানে, শূন্যস্থান ও বায়ু দ্বারা পরিপূর্ণ স্থান উভয় ক্ষেত্রেই সাম্যাবস্থাকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পানির সাম্যাবস্থার-বাষ্প-চাপের (equilibrium vapor pressure) মাধ্যমে বিবেচনা করা হয়েছে।[৪][৫] আর্দ্রতার সাথে জড়িত একটি পুনরাবৃত্তিক পরামিতি হলো "বিবর্ধন গুণক", যা জলীয়বাষ্পের সম্পৃক্তি-চাপের ওপর বায়ু কী প্রভাব ফেলে তা অন্তর্ভুক্ত করে।[৬] এই বিবর্ধন গুণকের অধীনে আর্দ্রতাকে আলোচনার ক্ষেত্রে খুব সামান্যই পার্থক্য পাওয়া যায়, বড় মাপের কোনো সূক্ষ্মতার প্রয়োজন না পড়লে অনেক হিসাব বা গাণিতিক সমস্যায় যা অগ্রাহ্য করা করা যায়।
সংজ্ঞা ও কিছু পরিভাষা

সম্পৃক্ততা
বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পৃক্ততা শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আলোচনাধীন প্রসঙ্গে বায়ুর সম্পৃক্ততা হলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বায়ুর সেই অবস্থা যে অবস্থায় ঐ তাপমাত্রায় এটি সর্বোচ্চ পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে এবং তাপমাত্রা ও চাপের পরিবর্তন ব্যতিত কোনক্রমেই এর অধিক জলীয়বাষ্প ধারণ করা সম্ভব নয়। নির্দিষ্ট উষ্ণতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ুতে সর্বোচ্চ যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প উপস্থিত থাকা সম্ভব, সেই পরিমাণ জলীয়বাষ্পই যদি ওই বায়ুতে উপস্থিত থাকে তাহলে ঐ বায়ুকে সম্পৃক্ত বায়ু বলা হয় এবং ধারণক্ষমতার কম পরিমাণে জলীয়বাষ্প উপস্থিত থাকলে একে অসম্পৃক্ত বায়ু বলা হয়।
শিশিরাঙ্ক
শিশিরাঙ্ক হলো সেই তাপমাত্রা যে তাপমাত্রায় পৌছালে বায়ু এতে উপস্থিত জলীয়বাষ্প দ্বারাই সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে অর্থাৎ ঐ তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ জলীয়বাষ্প ধারণক্ষমতায় পৌঁছায়। বায়ুকে এর অধিক শীতল করা হলে এর ধারণকৃত জলীয়বাষ্পের কিছু অংশ কিংবা এই তাপমাত্রা স্থির রেখেই এতে অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প যোগ করা হলে সেই অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে তরল জল তথা শিশির সৃষ্টি করে।
পরম আর্দ্রতা
নির্দিষ্ট ভরের বা আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের মোট ভরই পরম আর্দ্রতা। অন্যভাবে বলা যায়,কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের বায়ুর প্রতি একক আয়তনে বা ভরে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের ভরই ঐ স্থানের পরম আর্দ্রতা। পরম আর্দ্রতায় তাপমাত্রাকে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। বায়ুমণ্ডলের পরম আর্দ্রতা প্রতি ঘনমিটারে শূন্যের কাছাকাছি থেকে প্রায় 30g পর্যন্ত হয়, যেখানে বায়ু সম্পৃক্ত হয় টেমপ্লেট:Cvt তাপমাত্রায়।[৮][৯]
পরম আর্দ্রতা হলো জলীয়বাষ্পের ভর কে বায়ু এবং জলীয়বাষ্পের মিশ্রণের আয়তন দিয়ে ভাগের ফল, যাকে নিচের রাশিমালার আকারে প্রকাশ করা যায়:
যদি আয়তন স্থির না থাকে তাহলে বায়ুর তাপমাত্রা বা চাপ পরিবর্তনের সাথে সাথে পরম আর্দ্রতাও পরিবর্তিত হয়। এই ব্যাপারটির কারণে রাসায়নিক প্রকৌশলের গণনা কার্যে এটিকে অসুবিধাজনক, যেমনটা হয় কোনো কিছুর শুকানোর ক্ষেত্রে। এখানে তাপমাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই, রাসায়নিক প্রকৌশলে পরম আর্দ্রতা বলতে প্রতি একক ভরের শুষ্ক বাতাসে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের ভরকে বোঝানো হতে পারে, যা তাপ এবং ভরের ভারসাম্যের গণনার জন্য আরও উপযুক্ত। এটি আর্দ্রতা অনুপাত বা ভর মিশ্রণ অনুপাত হিসেবেও পরিচিত (নিচে "নির্দিষ্ট আর্দ্রতা" দেখুন)। উপরের সমীকরণের মতো প্রতি একক আয়তনে জলের ভরকে আয়তনিক আর্দ্রতা হিসেবেও সংজ্ঞায়িত করা হয়। সম্ভাব্য বিভ্রান্তির কারণে ব্রিটিশ আদর্শ বিএস ১৩৩৯[১০] অনুসারে "পরম আর্দ্রতা" পরিভাষাটি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর্দ্রতার একক সবসময় সতর্কতার সাথে যাচাই করা উচিত। আর্দ্রতার অনেক তালিকাতেই একে g/kg বা kg/kg আকারে দেওয়া হলেও ভরের অন্যান্য এককও ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিজ্ঞানের যে ক্ষেত্রটি গ্যাস-বাষ্প মিশ্রণের ভৌত ও তাপগতীয় ধর্ম সংশ্লিষ্ট অধ্যয়ন নিয়ে আলোচনা করে তা সাইক্রোমিতি (psychrometrics) নামে পরিচিত।
আপেক্ষিক আর্দ্রতা
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বায়ু ও পানির একটি মিশ্রণের আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে বা ঐ তাপমাত্রায় মিশ্রণে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের আংশিক চাপ এবং একই তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ পানির পৃষ্ঠতলের উপর[১১] সমতূল্য বাষ্প চাপের অনুপাত হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।[৪][১২][১৩] রাশিমালায় প্রকাশ করলে যা হবে:
অন্য কথায়, আপেক্ষিক আর্দ্রতা হলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ুতে কতটুকু জলীয় বাষ্প আছে এবং একই তাপমাত্রায় ঐ বায়ু সম্ভাব্য (সর্বোচ্চ) কতটুকু জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে তার অনুপাত। জলীয়বাষ্পের সম্পৃক্ততার ধর্ম ব্যবহার করে এই সংজ্ঞাটিকে অন্য আরেকভাবে কহা যায়, আপেক্ষিক আর্দ্রতা হলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণ কোনো বায়ুতে বিদ্যমান জলীয় বাষ্পের পরিমাণের এবং একই তাপমাত্রায় একই পরিমাণ বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় জলীয় বাষ্পের পরিমাণের অনুপাত। বায়ুর তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে এর আর্দ্রতাও পরিবর্তিত হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেলে সেই ক্ষমতাও হ্রায় পায়। ফলে, শীতল বায়ু অপেক্ষা উষ্ণ বায়ু বেশি জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। তাই, কখনও পরম আর্দ্রতা স্থির থাকলেও বায়ুর তাপমাত্রার পরিবর্তন আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
ফলতঃ আপেক্ষিক আর্দ্রতার সংজ্ঞা থেকে দেখা যায়, কোনো নির্দিষ্ট বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকলে উষ্ণ অবস্থায় এর আপেক্ষিক আর্দ্রতা যত হবে, ঐ বায়ুকে শীতলীকরণ করা হলে আপেক্ষিক আর্দ্রতা সেটা থেকে আরও বৃদ্ধি পাবে। উপরন্তু, বায়ুকে শীতল করতে করতে যদি এর আপেক্ষিক আর্দ্রতা ১০০% ছাড়িয়ে যায় তথা বায়ু তার সম্পৃক্তি বিন্দুতে পৌঁছায় তাহলে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হওয়া শুরু করবে। একই প্রসঙ্গানুসারে বিপরীতক্রমে বায়ুর উষ্ণায়নের ফলে এর আপেক্ষিক আর্দ্রতা হ্রাস পাবে। কুয়াশাচ্ছন্ন বায়ুকে উষ্ণ করা হলে সেই কুয়াশার স্বতঃবাষ্পীভবন ঘটতে পারে, কারণ জলের ফোঁটার মধ্যবর্তী বায়ু জলীয়বাষ্প ধরে রাখার ক্ষেত্রে অধিকতর সক্ষম হয়।টেমপ্লেট:Clarify
আপেক্ষিক আর্দ্রতায় কেবল দৃষ্টির অগোচরে থাকা জলীয়বাষ্পকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। কুয়াশা, মেঘ, মিস্ট (mist) এবং জলের অ্যারোসলকে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা পরিমাপের ক্ষেত্রে গণ্য করা হয় না, যদিও এদের উপস্থিতি এক খণ্ড বায়ুর শিশির বিন্দুর নৈকট্যের সম্ভাবনার একটি ইঙ্গিত দেয়।
আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে সাধারণত একটি শতাংশের আকারে প্রকাশ করা হয়। শতকরার মান বড় হওয়ার অর্থ হচ্ছে বায়ু ও জলের মিশ্রণটি আরও আর্দ্র। ১০০% আপেক্ষিক আর্দ্রতায় বায়ু সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে আর বায়ুর অবস্থান হয় এর শিশির বিন্দুতে। ফোঁটা বা স্ফটিকের নিউক্লিয়েশন ঘটাতে পারে এমন কোনো বাহ্যিক উপাদান উপস্থিত না থাকলে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ১০০% ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে বায়ু অতিসম্পৃক্ত হবে বলা হয়। ১০০% এর অধিক আপেক্ষিক আর্দ্রতায় এক খণ্ড বায়ুতে কিছু কণা অথবা একটি পৃষ্ঠতল যোগ করা হলে সেই নিউক্লিয়াসগুলোকে ঘিরে জলীয়বাষ্পের ঘনীভবন হবে অথবা বরফ তৈরি হবে, যার ফলে কিছু বাষ্প অপসারিত হবে এবং আর্দ্রতা হ্রাস পাবে।
আপেক্ষিক আর্দ্রতা বর্ষণ, শিশির বা কুয়াশার সম্ভাবনার একটি সূচক বা নির্দেশক হওয়ায় এটি আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং প্রতিবেদনে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ মেট্রিক বা ব্যবধান ফাংশন।
উষ্ণ গ্রীষ্মের আবহাওয়ায় আপেক্ষিক আর্দ্রতার বৃদ্ধি মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর ত্বক থেকে ঘর্ম-নিঃসরণ প্রক্রিয়ার স্বতঃবাষ্পীভবনে বিঘ্ন ঘটিয়ে এই সব জীবের ক্ষেত্রে আপাত তাপমাত্রার বৃদ্ধি ঘটায়। উদাহরণস্বরূপ, তাপ সূচক অনুযায়ী, বাযুর টেমপ্লেট:রূপান্তর তাপমাত্রায় ৭৫% আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৮৩.৬ °ফা ±১.৩ °ফা (২৮.৭ °সে ±০.৭ °সে) তাপমাত্রার মতো অনুভূত হবে।[১৪][১৫]
পরম ও আপেক্ষিক আর্দ্রতার সাথে তাপমাত্রার সম্পর্ক
সমুদ্র পৃষ্ঠে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপাত্তের ভিত্তিতে:
নির্দিষ্ট আর্দ্রতা
নির্দিষ্ট আর্দ্রতা হলো এক খণ্ড বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের ভরের এবং ঐ বায়ুর মোট ভরের অনুপাত।[১৮] নির্দিষ্ট আর্দ্রতা মিশ্রায়ন অনুপাতের প্রায় সমান। মিশ্রায়ন অনুপাতকে কোন বায়ুতে বিদ্যমান জলীয়বাষ্পের ভরের এবং ঐ বায়ু থেকে জলীয়বাষ্প অপসারণ করে যে শুষ্ক বায়ু পাওয়া যায় তার ভরের অনুপাত হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। যদি কোন স্থানের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তাহলে ঐ স্থানের বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ জলীয়বাষ্প পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে এবং বিপরীতক্রমে, তাপমাত্রা হ্রাস পেলে ঐ স্থানের বায়ুকে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় জলীয়বাষ্প পরিমাণও হ্রাস পাবে। তাই প্রাসঙ্গিকভাবেই বলা যায়, এক খণ্ড বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পেলে, এতে জল যুক্ত না করলেও কিংবা এটা থেকে জল অপসারণ না করলেও এটি (বায়ু) সম্পৃক্তি বিন্দুতে পৌঁছবে।
প্রাসঙ্গিক ধারণাসমূহ
"আপেক্ষিক আর্দ্রতা" পরিভাষাটি জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ুর সিস্টেমের জন্য সংরক্ষিত। বায়ু ব্যতিত অন্যান্য ঘনীভবন-অযোগ্য-দশার ক্ষেত্রে ঘনীভবনের যোগ্য তবে পানি ব্যতীত অন্য কোন পদার্থের সিস্টেমের জন্য "আপেক্ষিক সম্পৃক্ততা" শব্দটি ব্যবহার করা হয়, যা আপেক্ষিক আর্দ্রতার অনুরূপ একটি ধারণা।[১৯]টেমপ্লেট:Clarify
আর্দ্রতার প্রভাব
- বায়ুর উষ্ণতা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতার সম্পর্ক ব্যাস্তানুপাতিক হওয়ায় বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে এবং বায়ুর উষ্ণতা কমলে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বাড়ে।
- আপেক্ষিক আর্দ্রতা কোনো স্থানের বায়ুর আপেক্ষিক স্যাঁতস্যাঁতে ভাবের পূর্বাভাস দেয়।
- কোনো স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা জানা থাকলে সেই স্থানে পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপ বিকিরণের হার, বর্ষণ, ঝড়বৃষ্টি, কুয়াশা শিশিরের সম্ভাবনা প্রভৃতির পূর্বাভাস পাওয়া যায়।
- বায়ুর আর্দ্রতার সঙ্গে আবহাওয়া ও জলবায়ুর অন্যান্য উপাদান যেমনঃ বায়ুর তাপমাত্রা ও চাপের, বায়ুপ্রবাহের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান।
- কোনো স্থানীয় আবহাওয়া বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্পের পরিমাণের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
- কোনো স্থানের বায়ুতে দীর্ঘকাল ধরে জলীয়বাষ্পের অভাব তথা স্বল্প আর্দ্রতা সেখানে মরুভূমির সৃষ্টি করে।
- কোনো স্থানের বায়ুতে দীর্ঘসময় ধরে জলীয়বাষ্পের তথা আর্দ্রতার আধিক্য সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে সেখানকার পরিবেশ উদ্ভিদ-বৈচিত্রময়করে তোলে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
টেমপ্লেট:Wiktionary টেমপ্লেট:NIE Poster
টেমপ্লেট:Meteorological variables টেমপ্লেট:HVAC
টেমপ্লেট:পদার্থবিজ্ঞান-অসম্পূর্ণ
- ↑ Brun, P., Zimmermann, N.E., Hari, C., Pellissier, L., Karger, D.N. (preprint): Global climate-related predictors at kilometre resolution for the past and future. Earth Syst. Sci. Data Discuss. https://doi.org/10.5194/essd-2022-212
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ Perry, R.H. and Green, D.W, (2007) Perry's Chemical Engineers' Handbook (8th Edition), Section 12, Psychrometry, Evaporative Cooling and Solids Drying McGraw-Hill, টেমপ্লেট:ISBN
- ↑ ৪.০ ৪.১ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;umd.eduনামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>ট্যাগ বৈধ নয়;psu.eduনামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সংবাদ উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ British Standard BS 1339 (revised), Humidity and Dewpoint, Parts 1-3 (2002-2007)
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ Perry, R.H. and Green, D.W, Perry's Chemical Engineers' Handbook (7th Edition), McGraw-Hill, টেমপ্লেট:ISBN, Eqn 12-7
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ Lans P. Rothfusz. "The Heat Index 'Equation' (or, More Than You Ever Wanted to Know About Heat Index)", Scientific Services Division (NWS Southern Region Headquarters), 1 July 1990 টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি