চেরেনকভ বিকিরণ

testwiki থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরীর হাই ফ্লাস্ক আইসোটোপ রিঅ্যাক্টরে চেরেনকভ রেডিয়েশন
মারিয়া রিঅ্যাক্টরে চেরেনকভ রেডিয়েশন

চেরেনকভ রেডিয়েশন, চেরেনকভ বিকিরণ বা ভ্যাভিলভ-চেরেনকভ বিকিরণ[] (টেমপ্লেট:IPAc-en;[] রুশ: Черенков) হলো একধরনের তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ। যখন কোনাে অস্তরক মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে আধানযুক্ত কোনাে কণা (যেমন ইলেক্ট্রন) সেই মাধ্যমে আলাের যে দশাবেগ (ফেজ গতিবেগ বা ফেজ ভেলসিটি) তার থেকে বেশি বেগে চলতে থাকে (এক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতার নিয়ম ভঙ্গ হয় না। যাহেতু, প্রতিসরাঙ্কের কারণে সেই মাধ্যমে আলোর বেগ c এর চেয়ে কম হয়। তাই সেই আহিত কণাকে আর c এর চেয়ে বেশি বেগে যেতে হয় না) তাহলে এক ধরনের তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ নির্গত হয়। একেই চেরেনকভ রেডিয়েশন বলে।[] সোভিয়েত পদার্থবিজ্ঞানী পাভেল আলেক্সেইয়েভিচ চেরেংকভ এর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৩৪ সালে তিনি সার্গে ভ্যাভিলভ এর অবেক্ষণে এর আবিষ্কার করেন এবং ১৯৩৭ সালে ইলিয়া ফ্রাংকইগর তাম এর ব্যাখ্যা দেন। এই কাজের জন্য তারা যৌথভাবে ১৯৫৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান।[]

উৎপত্তি

পানির ওপর কোনো কিছু পানির ঢেউয়ের থেকে বেশি বেগে চললে সৃষ্ট বো ওয়েভ বা শব্দোত্তর গতিবেগের জন্য সৃষ্ট সনিক বুমের সাথে চেরেনকভ রেডিয়েশনের সাদৃশ্য রয়েছে।[]

পানিতে সৃষ্ট বো ওয়েভ
সনিক বুম ক্লাউড
সনিক বুমের সৃষ্টি

বায়ুমন্ডলে যখন কোনো স্পেসক্রাফ্ট চলে, তখন চতুর্দিকে শব্দের নির্গমন হয় (প্রেশার ওয়েভের সৃষ্টি হয়)। যেহেতু বিমান শব্দ উৎপন্ন করতে করতে সামনের দিকে (আপনার দিকে) এগিয়ে যায়, সেহেতু  বাতাসের সঙ্কোচনগুলো আরও চেপে যায়। যখন প্লেনের বেগ শব্দের বেগের সমান হয়ে যায় তখন এই প্রেশার ওয়েভ গুলি একত্রে মিসে একটি শক ওয়েভের সৃষ্টি হয়। শব্দের বেগ বাড়তে থাকলে সেই শক ওয়েভটি কোণ বা শঙ্কু আকারে প্লেনের পেছন দিক থেকে ছড়িয়ে পড়ে যাকে আমরা সনিক বুম হিসেবে শুনি।[] একই ভাবে পানিতে পানির ঢেউয়ের থেকে বেশি বেগে চললে সৃষ্ট হয় বো ওয়েভ।[] চেরেনকভ রেডিয়েশনের ক্ষেত্রেও এরকমই ঘটনা ঘটে কিন্তু সেটা হয় আলোর জন্য।[][]

চেরেনকভ রেডিয়েশন

যখন কোনো আহিত কণা প্রচন্ড গতিতে কোনো অস্তরক মাধ্যমের মধ্যদিয়ে ধাবিত হয় তখন সেই আহিত কণা এর পথে থাকা কিছু পরমাণুর কিছু ইলেক্ট্রনকে উত্তেজিত করে এবং সেই ইলেকট্রনগুলি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার সময় তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গ নিঃসারিত করে। হাইগেনের নীতি অনুযায়ী সেই তরঙ্গ গোলকাকারে (sphericaly) সেই মাধ্যমে ফেজ ভেলসিটিতে ছড়িয়ে পড়ে।[১০][১১] এখন যেহেতু সেই মাধ্যমে সেই আহিত কণার বেগ আলোর বেগের চেয়ে বেশি তাই সেখানে সনিক বুমের মতো একই ঘটনা ঘটে। ইলেকট্রনের দ্রুত গতি এবং আলোর অপেক্ষাকৃত ধীর গতির কারণে এখানেও তরঙ্গ উৎপন্নকারী বস্তুকণা তরঙ্গের থেকে দ্রুত গতি লাভ করে এবং সনিক বুমের শব্দ তরঙ্গের মতই এখানে আলোক তরঙ্গ সেই কণার সাপেক্ষে θ (ধরি) কোণে শঙ্কু বা কোণের মত করে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে যেটাকে আমরা চেরেনকভ রেডিয়েশন হিসেবে দেখি।[১২]

নিঃসরণ কোণ

আদর্শ চেরেনকভ রেডিয়েশনের স্থির চিত্র
আদর্শ চেরেনকভ রেডিয়েশনের স্থির চিত্র

প্রথম চিত্রানুসারে নিঃসরণ কোণ

উপরের প্রথম চিত্রে একটি আহিত কণা (লাল রঙ)

c/n<vp<c শর্তাধীনে vp বেগে ছোটে।

আলোর বেগ ও কণার বেগের অনুপাত

β=vp/c

এই মাধ্যমে আলোর বেগ (n হলো প্রতিসরাঙ্ক)

vem=c/n

চিত্রে বাম দিক হলো আদি বিন্দু (t = 0) ও ডানদিক হলো t সময় পরের অবস্থা।

এখন t সময়ে কণাটির অতিক্রান্ত দূরত্ব

xp=vpt=βct

এবং আলোক তরঙ্গের অতিক্রান্ত দূরত্ব

xem=vemt=cnt

সূতরাং নিঃসরণ কোণ (সাধারণ ত্রিকোণমিতি অনুসারে)

cosθ=1nβ

একই ভাবে দ্বিতীয় চিত্র হতেও নিঃসরণ কোণ নির্ণয় করা যায়।

আরও দেখুন

টেমপ্লেট:কমন্স বিষয়শ্রেণী

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

বহিঃসংযোহ