ট্রাইটন (উপগ্রহ)

testwiki থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন

টেমপ্লেট:এর সাথে বিভ্রান্ত হবেন না টেমপ্লেট:Infobox planet ট্রাইটন হল নেপচুন গ্রহের বৃহত্তম তথা প্রথম আবিষ্কৃত প্রাকৃতিক উপগ্রহ। ১৮৪৬ সালের ১০ অক্টোবর ইংরেজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম লেসেল এটি আবিষ্কার করেন। এটিই সৌরজগতের একমাত্র পশ্চাদমুখী কক্ষপথ-বিশিষ্ট (গ্রহের আবর্তনের বিপরীত অভিমুখে ধাবমান) বৃহৎ প্রাকৃতিক উপগ্রহ।[][] ট্রাইটনের ব্যাস টেমপ্লেট:রূপান্তর[] এটি সৌরজগতের সপ্তম বৃহত্তম প্রাকৃতিক উপগ্রহ তথা নেপচুনের একমাত্র উপগ্রহ যেটি উদ্স্থিতি সাম্যাবস্থা বজায় রাখার উপযুক্ত ভরবিশিষ্ট। এছাড়া পৃথিবীর চাঁদের পরেই সংশ্লিষ্ট গ্রহের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহীয় উপগ্রহ। পশ্চাদমুখী কক্ষপথ এবং প্লুটোর উপাদানের সঙ্গে এটির উপাদানের সাদৃশ্য দেখে অনুমিত হয় যে, সম্ভবত সুদূর অতীতে ট্রাইটন কাইপার বেষ্টনীর একটি বামন গ্রহ ছিল, যা নেপচুনের মাধ্যাকর্ষণ বলের আকর্ষণে বাঁধা পড়ে।[]

ট্রাইটনের পৃষ্ঠভাগ প্রধানত হিমায়িত নাইট্রোজেন, প্রধানত জলীয় বরফের একটি আস্তরণ,[] একটি বরফময় গুরুমণ্ডল এবং ধাতু ও প্রস্তরগঠিত একটি সুদৃঢ় অন্তস্তল দ্বারা গঠিত। এই অন্তস্তলের ভর উপগ্রহটির মোট ভরের দুই-তৃতীয়াংশ। ট্রাইটনের গড় ঘনত্ব টেমপ্লেট:Val,[] যা উপগ্রহটির উপাদানের প্রায় ১৫-৩৫ শতাংশ জলীয় বরফের পরিচায়ক।[]

১৯৮৯ সালে ট্রাইটনের ফ্লাইবাইয়ের সময় ভয়েজার ২-এর সংগৃহীত তথ্য থেকে জানা যায় যে উপগ্রহটির পৃষ্ঠভাগের তাপমাত্রা টেমপ্লেট:Cvt এবং সেই সঙ্গে সেখানে সক্রিয় স্বতঃনিঃসারী ঊষ্ণ প্রস্ববণেরও সন্ধান মেলে। ভয়েজার ২-ই একমাত্র মহাকাশযান যেটি ট্রাইটনের কাছে পৌঁছেছে।[] ট্রাইটন হল সৌরজগতের সেই অল্প কয়েকটি প্রাকৃতিক উপগ্রহগুলির অন্যতম যেগুলি ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় (এই জাতীয় অন্যান্য উপগ্রহগুলি হল বৃহস্পতির আইয়োইউরোপা এবং শনির এনসেলাডাসটাইটান)। এই কারণে ট্রাইটনের পৃষ্ঠভাগ অপেক্ষাকৃত নবীন এবং স্পষ্টতই কয়েকটি সংঘাত গহ্বর দ্বারা মণ্ডিত। এই পৃষ্ঠভাগে জটিল হৈম আগ্নেয়ভূগাঠনিক ভূখণ্ডগুলি এই উপগ্রহের একটি জটিল ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের ইঙ্গিতবাহী। পৃষ্ঠভাগের অংশবিশেষে কয়েকটি স্বতঃনিঃসারী উষ্ণ প্রস্রবণ দেখা যায়। এগুলি উদ্গতিপ্রাপ্ত নাইট্রোজেন গ্যাস উদ্গীরণ করে, যা এই উপগ্রহের ক্ষীণ নাইট্রোজেন বায়ুমণ্ডলের কারণ। এই বায়ুমণ্ডলের চাপ সমুদ্রপৃষ্ঠে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডের চাপের তুলনায় টেমপ্লেট:Frac কম।[] ভয়েজার ২ এই উপগ্রহটির পৃষ্ঠভাগের কেবলমাত্র ৪০ শতাংশ অংশই পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল। ভবিষ্যতে ট্রাইটনের উপর বিশেষ দৃষ্টি রেখে নেপচুন মণ্ডলীতে আবার প্রেরণের জন্য কয়েকটি অভিযানের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

আবিষ্কার ও নামকরণ

উইলিয়াম ল্যাসেল, ট্রাইটন উপগ্রহের আবিষ্কর্তা

অক্টোবর ১০, ১৮৪৬ সালে ব্রিটিশ জোতির্বিদ উইলিয়াম ল্যাসেল এই উপগ্রহ আবিষ্কার করেন। মাত্র ১৭ দিন আগে জার্মান জোতির্বিদ জোহান গটফ্রাইড গ্যালে এবং হেনরিচ লুইস ডি অ্যারেস্ট এই উপগ্রহ আবিষ্কার করেন। ফরাসী জোতির্বিদ ও গণিতবিদ আরবাইন লে ভেরিয়ার-এর শুরুকরা কাজ তারা শেষ করেন।

শোনা যায়, ১৮২০ সালের দিকে ল্যাসেল তার টেলিস্কোপকে আরো উন্নত করার জন্য সেখানে আয়না বসাচ্ছিলেন। নেপচুনের আবিষ্কারের সংবাদ শুনে জন হার্শেল ল্যাসেলকে চিঠি লেখেন এই পরামর্শ দিয়ে যে তিনি যেন বিভিন্ন উপগ্রহের খোঁজ করেন। এ কথা শুনে ল্যাসেল তাই করেন এবং এরই মাত্র আটদিনের মাথায় তিনি ট্রাইটন উপগ্রহ আবিষ্কার করেন।

ট্রাইটন উপগ্রহের নামকরণ করা হয় গ্রীসের পৌরাণিক চরিত্র পসেইডন-এর ছেলে গ্রীসের সমুদ্রদেবতা ট্রাইটন (Τρίτων)-এর নামানুসারে। ১৮৮০ সালে এই নামের পরামর্শ দেন ক্যামিলে ফ্ল্যামিরন-তার Astronomie Populaire গ্রন্থে। তবে এই নামকরণ করা হয় দ্বিতীয় উপগ্রহ নিরেইড-এর নামকরণের পর, ১৯৪৯ সালে। এর আগে এই উপগ্রহকে নেপচুনের উপগ্রহ নামানুসারে। ল্যাসেল তার নিজের উপগ্রহের নামকরণ করেননি। তবে কিছু বছর পর তিনি তার আবিষ্কৃত উপগ্রহের নামের পরামর্শ দেন। এরই মধ্যে তিনি শনির অষ্টম উপগ্রহ হাইপেরিয়ন, ইউরেনাস-এর ৩য় ও ৪র্থ উপগ্রহ (যথাক্রমে এরিয়েলআম্ব্রিয়েল) আবিষ্কার করেন। ইউরেনাসের উপগ্রহের নামকরণ করেন জন হার্শেল, ১৮৫১ সালে।

কক্ষপথ ও আবর্তন

ট্রাইটন তার সমগোত্রীয় অন্যান্য উপগ্রহের মধ্যে অনন্য এ কারণে, যে এই উপগ্রহ নিজের গ্রহের সাথে বিপরীত দিক মুখ করে ঘোরে। শনিবৃহস্পতির এবং ইউরেনাসের কিছু অনিয়মিত উপগ্রহ এই কাজ করলেও তারা খুবই ছোট ট্রাইটনের সাপেক্ষে। এদের মধ্যে বৃহত্তম উপগ্রহ ফিয়োবের ব্যাস, ট্রাইটনের ৮% ও এর ভর ট্রাইটনের ০.০৩%।

ট্রাইটনের কক্ষপথ নেপচুন-এর ঘূর্ণনের সাথে ৩০° এবং নেপচুনের কক্ষপথ ট্রাইটনের ঘূর্ণনের সাথে ১৫৭° কোণ উৎপন্ন করে। ট্রাইটন নেপচুনের কক্ষপথ ৬৭৮ বছরে (৪.১ নেপচুন বছর) একবার অতিক্রম করে, এর কক্ষপথকে নেপচুনের কক্ষপথের সাথে ১২৭° থেকে ১৭৩° কোণে আনতকরে। বর্তমানে ট্রাইটনের কক্ষপথ নেপচুনের কক্ষপথের সাথে সর্বোচ্চ সমতলীয় দূরত্বে রয়েছে, ১৩০° কোণে আনত হয়ে।

ট্রাইটন নেপচুনের সাথে আপেক্ষিক ঘূর্ণনে (Synchronous rotation আবদ্ধ। এই উপগ্রহ এর একদিক সর্বদা নেপচুনের একদিকের সাথে মুখ করে রাখে। বর্তমানে ট্রাইটনের ঘূর্ণন অক্ষ নেপচুনের কক্ষপথের সাথে প্রায় ৪০° কোণে যুক্ত। যেহেতু নেপচুন সূর্য-এর চারপাশে পরিভ্রমণ করে, একপর্যায়ে ট্রাইটনের মেরুঅঞ্চল সূর্যের দিকে ঘোরে। ফলে এর একদিকে ঋতু পরিবর্তন হয় এবং অন্যদিক তখন সূর্যের দিকে এগিয়ে আসে। এই আবিষ্কার অতি সম্প্রতি হয়েছে।

ট্রাইটনের পরিভ্রমণ প্রায় সম্পূর্ণ বৃত্তাকার এবং এর কেন্দ্রীয় উৎকেন্দ্রীকতা প্রায় শূণ্য। নেপচুনের মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও এরজন্য দায়ী। ধারণা করা হয় এর কারণে প্রায় ৩.৬ বিলিয়ন বছর পরে ট্রাইটন নেপচুনের রচে লিমিট (Roche limit)-এ পৌছবে, যার ফলে হয় এটি নেপচুনের বায়ুমন্ডলের সাথে সংঘর্ষ সৃষ্টি করবে, নাহয় ধ্বংস হয়ে নেপচুনের বলয় তৈরী করবে।

ট্রাইটনকে বলা হয় সৌরজগতের এতিম উপগ্রহ

ট্রাইটনের কিছু বৈশিষ্ট্য থেকে এটা ধারণা করা হয় যে একসময় ট্রাইটন স্বাধীনভাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতো বা অন্য কোন এক গ্রহের উপগ্রহ ছিল। কিন্তু কোন এক মহাজাগতিক ঘটনার ফলে অথবা হয়ত এটি নেপচুনের অন্য কোন উপগ্রহের সাথে ধাক্কা খেয়ে নেপচুনের মহাকর্ষ বলে বন্দী পড়েছে। তখন থেকে এটি নেপচুনকেই প্রদক্ষিণ করে। এজন্য একে এতিম গ্রহ বলা হয়। এসব ধারনার মূলে রয়েছে, এটি এমন একটি উপগ্রহ যা নেপচুনের ঘূর্ণন দিকের বিপরীত দিকে ঘোরে এবং মাতৃগ্রহ নেপচুনের সাথে এর কক্ষপথ প্রায় ১৫৭° বাঁকা।

পর্যবেক্ষণ ও আবিষ্কার

ট্রাইটনের সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান বিজ্ঞানী্দের খুব বেশি হয়নি, যদ্দিন না ভয়েজার ২ নেপচুনের পাশ দিয়ে যায়, বিংশ শতাব্দির শেষভাগে। এর পর্যবেক্ষণ ১৯৩০ সালের আগে সম্ভব হয়নি এবং ভয়েজার ২-এর যাওয়ার আগে বিজ্ঞানীদের এর সম্পর্কে খুবই ভাসাভাসা জ্ঞান ছিল।

ভয়েজার ২ যাওয়ার আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল ট্রাইটনে তরল নাইট্রোজেন থাকতে পারে, এবং নাইট্রোজেন/মিথেন-এর ঘনত্ব পৃথিবীর ৩০% হতে পারে। মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে সেই বিখ্যাত অনুমান, যা পরে সত্যি হয়, তার মত ঘটনা এবার ঘটে না। এই প্রকল্প সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হয়।

ট্রাইটনের ব্যাস মাপার প্রথম চেষ্টা করেন জেরার্ড কুইপার, ১৯৫৪ সালে। তার করা পরীক্ষায় ফলাফল আসে ৩৮০০ কি.মি.। অন্যান্য বিজ্ঞানীদের চেষ্টায় এর পরিমাপ আসে ২৫০০-৬০০০ কি.মি.। ধারণা করা হয় এই উপগ্রহের পরিমাপ আমাদের পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদের সমান বা পৃথিবীর অর্ধেক হবে। কিন্তু ভয়েজার ২ ২৫শে আগস্ট, ১৯৮৯ সালে আরো সূক্ষ্ণ পরিমাপ দেয় (২৭০৬ কি.মি.)।

নেপচুনের প্রতি নতুন যাত্রার সিদ্ধান্ত ও প্রকল্প হাতে নেয়া হয় ২০১০ সালে, নাসার মা্ধ্যমে। বিজ্ঞানীদের মতে ট্রাইটন অভিযানের একটা অন্যতম লক্ষ্য। তবে বর্তমান পর্যন্ত তেমন উল্লেখযোগ্য কোন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি শনি বা ট্রাইটনের উদ্দেশ্যে।

আরও দেখুন

টেমপ্লেট:প্রবেশদ্বার

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

বিশেষ দ্রষ্টব্য

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:কমন্স বিষয়শ্রেণী

টেমপ্লেট:নেপচুনের প্রাকৃতিক উপগ্রহ টেমপ্লেট:নেপচুন টেমপ্লেট:সৌরজগতের প্রাকৃতিক উপগ্রহসমূহ (সুসংবদ্ধ) টেমপ্লেট:বামন গ্রহ

টেমপ্লেট:কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ

  1. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; NYT-20141105-DO নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  2. টেমপ্লেট:সংবাদ উদ্ধৃতি
  3. ৩.০ ৩.১ উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; JPL-SSD-sat_phys নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Agnor06 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Prockter নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  6. ৬.০ ৬.১ উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; EncycSolSys-Triton নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  7. টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি