পি–এন সংযোগ

testwiki থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
একটি সিলিকন পি-এন সংযোগ যেখানে কোন বিভব প্রয়োগ করা হয়নি।

একটি পি–এন সংযোগ (p-n junction) গঠিত হয় একটি পি-ধরনের এবং একটি এন-ধরনের অর্ধপরিবাহীর সংযোগস্থলে। অর্ধপরিবাহীর একটি একক ক্রিস্টাল ডোপায়নের মাধ্যমে পাশাপাশি একটি পি- এবং একটি এন-ধরনের অর্ধপরিবাহী তৈরি করা হলে, এদের সংযোগস্থলে পি–এন সংযোগের সৃষ্টি হয়। দুটি বিচ্ছিন্ন পি এবং এন টুকরার মাধ্যমে পি–এন সংযোগ তৈরি করা হয় না কারণ, এক্ষেত্রে এদের সংযোগস্থলে একটা গ্রেইন অঞ্চলের তৈরি হয় যা পি–এন সংযোগের বৈশিষ্টাবলীকে বাধাগ্রস্থ করে। এজন্য পি–এন সংযোগগুলো তৈরি করা হয় একটি অর্ধপরিবাহীর একক ক্রিস্টালে ডোপিং-এর মাধ্যমে, যেমন আয়ন ইমপ্ল্যান্টেশন, ডোপেন্টের ব্যাপন, বা এপিট্যাক্সি (একধরনের ডোপায়িত ক্রিস্টালের একটি স্তরের উপর অন্যধরনের ডোপায়িত ক্রিস্টালের অারেকটি স্তর সৃষ্টি করা) দিয়ে।

প্রায় সবধরনের অর্ধপরিবাহী যন্ত্রাংশ, যেমন ডায়োড, ট্রানজিস্টর, সৌর কোষ, লাইট-এমিটিং ডায়োড এবং ইন্টিগ্রেটেড বর্তনী পি–এন সংযোগ দিয়ে তৈরি। এসব যন্ত্রাংশে পি–এন সংযোগ হলো সক্রিয় অঞ্চল যেখানে যন্ত্রের ইলেকট্রনিক কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়। যেমন, একটি সাধারণ এন–পি–এন বা পি-এন-পি বাইপোলার সংযোগ ট্রানজিস্টরে ২টি পি–এন সংযোগ সিরিজে থাকে।

আমেরিকার বেল গবেষণাগারের পদার্থবিজ্ঞানী রাসেল ওহলে পি–এন সংযোগ আবিষ্কার করেন[]

একটি পি- বা এন-ধরনের অর্ধপরিবাহীর সাথে একটি ধাতুর সংযোগস্থল হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের সংযোগ যা শটকি সংযোগ নামে পরিচিত।

প্রস্তুত প্রণালী

সাধারণত, পি–এন সংযোগ একটি একক ক্রিস্টাল থেকে প্রস্তুত করা হয়। এই ক্রিস্টাল দুটি ভিন্ন ধরনের ডোপেন্টের ব্যাপন প্রকৃয়ার মাধ্যমে পাশাপাশি একটি পি- এবং একটি এন-ধরনের অর্ধপরিবাহী তৈরি করা হলে এদের সংযোগস্থলে পি–এন সংযোগের সৃষ্টি হয়। তবে খরচ কমানোর জন্য সৌর কোষের ক্ষেত্রে পলিক্রিস্টালাইন সিলিকন প্রায়ই ব্যবহৃত হয় যদিও এর কর্মদক্ষতা কম।

বৈশিষ্ট্য

পি–এন সংযোগের কিছু অাকর্ষনীয় বৈশিষ্ট্য আছে যা আধুনিক ইলেকট্রনিক্সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি পি-ধরনের অর্ধপরিবাহীর তড়িত্ পরিবাহিতা তুলনামুলকভাবে বেশ ভালো। একইভাবে, একটি এন-ধরনের অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতাও বেশ ভাল। কিন্তু বিভব পাথ্যক্যের তারতম্যের কারণে এদের মধ্যকার সংযোগস্থলে আধান পরিবাহির শুন্যতা ও হোল বিহীন একটি অপরিবাহী অঞ্চল তৈরি হতে পারে। পি এবং এন অঞ্চলের বিভবপার্থক্য তৈরি করে এই অপরিবাহী অঞ্চলটিকে ছোট-বড় করা যায়। এভাবে অপরিবাহী অঞ্চলকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তড়িত্প্রবাহকেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই ধম্কে নিয়ন্ত্রণ করেই আসলে ডায়ড প্রস্তুত করা হয়। সারকিটে ডায়ড তড়িত্ প্রবাহ কে একমুখী করে।তড়িত্ যখন সম্মুখে প্রবাহিত হতে পারে তাকে সমুখী বায়াস বলে, আর বিপরীত দিকের প্রবাহে বাধা দেয়ার প্রক্রিয়াকে বিপরিতমুখি বায়াস বলে। এখানে বায়াস বলতে পি–এন সংযোগে বিভবের ব্যভারকে বঝানো হয়ে থাকে।

সাম্যবস্থা (শূণ্য ঝোঁক)

পি–এন সংযোগে, কোন বহিঃস্থ প্রয়োগ করা বিভব ছাড়া, একয়ি সাম্যবস্থার পরিস্থিতি এমন অবস্থাতে পৌছায় যে বিভব পার্থক্য সৃষ্টি হয় সংযোগস্থলে আড়াআড়িভাবে। এই বিভব পার্থক্যকে বলে বিল্ড ইন বিভব Vbi

পি-ধরনের ও এন-ধরনের অর্ধপরিবাহীর সংযোগের পরে, পি–এন সংযোগ স্থলের কাছে অবস্থিত ইলেকট্রন পি-অঞ্চলে ব্যাপিত হতে চায়। ইলেকট্রনের ব্যাপনের সময়, তারা ত্যাগ করে ধনাত্নক ভাবে চার্জিত আয়ন এন অঞ্চলের ডোনার। একইভাবে, পি-এন অঞ্চলের কাছের হোল এন-ধরনের অঞ্চলে ব্যাপিত হতে থাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক আয়ন যা হলো ঋণাত্নক চার্জের গ্রহীতা বা অ্যাকসেপ্টর ত্যাগ করে। পি-এন অঞ্চলের কাছের অঞ্চল তাদের নিরপেক্ষতা হারায় এবং চার্জিত হয়ে পড়ে, তৈরি করে স্পেস চার্জ রিজিওন বা ডিপ্লিশন স্তর (দেখুন চিত্র এ)।

চিত্র A একটি পি-এন সংযোগ তাপীয় সাম্যবস্থাতে যেখানে শূণ্য ঝোঁকের বিভব প্রয়োগ করা হয়েছে। ইলেকট্রন ও হোলের ঘনত্বকে নীল ও লাল দাগের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে। ধূসর রংযের অঞ্চল হলো চার্জ নিরপেক্ষ। হালকা লাল অঞ্চল হলো ধনাত্নক চার্জে চার্জিত। হালকা নীল রংযের অঞ্চল হলো ঋণাত্নক ভাবে চার্জিত। তড়িৎ ক্ষেত্রকে নিচে প্রদর্শন করা হয়েছে, ইলেকট্রন ও হোলের স্থির তড়িচ্চালক বল এবং দিক যেটাতে ব্যাপন ইলেকট্রন ও হোলকে সরাতে চায়

স্পেস চার্জ অঞ্চলের মাধ্যমে সৃষ্ট বিদ্যুৎ ক্ষেত্র ইলেকট্রন এবং হোল উভয়ের জন্যই ব্যাপন প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়। এখানে ২টি পরপর সংঘটিত হওয়ার মতো ঘটনা আছে: ব্যাপন প্রক্রিয়া যা অধিক স্পেস চার্জ তৈরি করতে চায়, এবং স্পেস চার্জ দিয়ে তৈরী বিদ্যুৎ ক্ষেত্র যা ব্যাপনের বিপরীতে কাজ করে। সাম্যবস্থাতে বাহকের ঘনত্বের প্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে চিত্র এতে নীল ও লাল দাগ দিয়ে। আরও দেখানো হয়েছে দুইটি বিপরীত ভারসাম্যের ঘটনা যা সাম্যবস্থা ঘটায়।

চিত্র বি একটি পি-এন সংযোগ তাপীয় সাম্যবস্থাতে যেখানে শূণ্য ঝোঁকের বিভব প্রয়োগ করা হয়েছে। এই সংযোগের নিচে, চার্জ ঘনত্ব, তড়িৎ ক্ষেত্র এবং বিভবগুলো দেখা যাচ্ছে

দাতা এবং গ্রহিতার দেয়া আবধ্য ইলেচত্রন এবং হোল গুল অধিকাংশ খেত্রেই অপুরন্যই রয়ে যায়। সাম্যবস্থায় ঘনত্য উপরের ছবির মত ধাপ চিত্র অনুশরন করে। ধাপগুলো অধিকাংশ পরিবাহকের উপস্থিত আধানের প্রক্রিতির উপর নিরভর করে।

স্থির তড়িৎ

একটি পি–এন সংযোগের জন্য পোয়াসোঁর সমীকরণ হয় Δφ=ρε=qε(n0p0equilibrium concentrationdifference of free charges (0)+NANDconcentration differenceof acceptor and donor atoms)

যেখানে φ হলো বৈদ্যুতিক বিভব, ρ হলো চার্জ ঘনত্ব, ε হলো প্রবেশ্যতা এবং q হলো ইলেকট্রন চার্জের মান। যেহেতু মোট চার্জ ডিপ্লিশন অঞ্চলের উভয় দিকেই বাদ পড়ে যায়, তাই dpwidth of electric fieldwithin p-sideNA=dnwidth of electric fieldwithin n-sideND

এই ওপরের সমীকরণ থেকে এবং প্রাথমিক ক্যালকুলাস প্রয়োগ করে এটা দেখানো যেতে পারে যে ডিপ্লিশন অঞ্চলের মোট প্রস্থ হলো

d=dp+dn=2εqNA+NDNAND(Vbi built-in voltageVexternal appliedvoltage)

আরও দেখা যায়, আইনস্টাইনের সম্পর্কের মাধ্যমে এবং এটা ধারণা করে অর্ধপরিবাহী অধঃপতিত হয়েছে (অর্থাৎ গুণফল p0n0 হলো ফার্মী শক্তি মুক্ত যা হলো

Vbi=kTqln(NANDp0n0)

যেখানে T হলো অর্ধপরিবাহীর তাপমাত্রা এবং k হলো বোল্টজম্যানের ধ্রুবক। [] টেমপ্লেট:অসম্পূর্ণ

আরও দেখুন

টেমপ্লেট:কমন্স বিষয়শ্রেণী

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

বহিঃসংযোগ

  1. an account of Ohl's discovery is in টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
  2. হ্যান্ডবুক অব ফোটোভোল্টায়িক সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং by অ্যান্টোনিও লুক & স্টিভেন হেগেডাস, উইলি ২০০৩