সাম্য ধ্রুবক
সাম্য ধ্রুবক (Equilibrium constant) হলো একটি গাণিতিক রাশি যা স্থীর তাপমাত্রা ও চাপে, সাম্যাবস্থায় কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার উৎপাদ ও বিক্রিয়কের মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করে। অন্য ভাষায়, সাম্যাবস্থায় কোনো বিক্রিয়ার বিক্রিয়া অনুপাত (বা, বিক্রিয়া কোশেন্ট) কে সাম্য ধ্রুবক বলা হয়। সাধারণত সাম্য ধ্রুবক, বিক্রিয়ার ব্যাপ্তি বিচার, বিক্রিয়ার দিক সম্পর্কে প্রাক ধারণা সহ অন্যান্য কাজে ভূমিকা রাখে।
বিভিন্ন ধরনের সাম্য ধ্রুবক রয়েছে। এরা প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন এককে উৎপাদ ও বিক্রিয়কের মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করে। উদাহরণ হিসেবে বিয়োজন ধ্রুবকের কথা বলা যায়।
বিক্রিয়ায় সাম্য ধ্রুবক
ভর-ক্রিয়া সূত্র হতে আমরা জানি, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়, নির্দিষ্ট সময়ে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার ঐ সময়ে বিক্রিয়ায় উপস্থিত বিক্রিয়ক গুলির সক্রিয়তার (Activity) সমানুপাতিক।[১][২]
এই বিক্রিয়ায়, ভর-ক্রিয়া সূত্র অনুযায়ী, সম্মুখ বর্তী বিক্রিয়ার হার (),
বা,
এখানে, {A} ও {B} হলো সক্রিয়তা (Activity)। এদের যথাক্রমে, ও ( ও হলো বিক্রিয়ায় {A} ও {B} এর আণুপাতিক সহগ বা মোল সংখ্যা) বার গুণ করা হয়েছে। বিক্রিয়ায় {A} আছে সংখ্যক ও {B} আছে সংখ্যক। তাই, সংখ্যক {A} ও সংখ্যক {B} গুণ করলে পাওয়া যায়, । হলো সম্মুখ মুখী বিক্রিয়ায় হার ধ্রুবক।
আবার, পশ্চাৎ মুখী বিক্রিয়ার হার (),
বা,
এখানে, {S} ও {T} হলো সক্রিয়তা (Activity)। এদের যথাক্রমে, ও ( ও হলো বিক্রিয়ায় {S} ও {T} এর আণুপাতিক সহগ বা মোল সংখ্যা) বার গুণ করা হয়েছে। বিক্রিয়ায় {S} আছে সংখ্যক ও {T} আছে সংখ্যক। তাই, সংখ্যক {S} ও সংখ্যক {T} গুণ করলে পাওয়া যায়, । হলো পশ্চাৎ মুখী বিক্রিয়ায় হার ধ্রুবক।
কিন্তু, সাম্যাবস্থায় সম্মুখ মুখী ও পশ্চাৎ মুখী বিক্রিয়ায় হার সমান হয়।
সুতরাং,
বা,
বা,
এখন,
হলে,
এই ই হলো বিক্রিয়ার সাম্য ধ্রুবক।
মুক্ত শক্তির পরিবর্তন, এর সাথে সাম্য ধ্রুবকের সম্পর্ক বিদ্যমান। এটি হলো,
যেখানে, হল গ্যাস ধ্রুবক ও হল তাপমাত্রা।
মোলার সাম্য ধ্রুবক () ও আংশিক চাপ সাম্য ধ্রুবক ()
উপরোক্ত বিক্রিয়ার সাম্য ধ্রুবক,
এখানে, {AB}, {A} এবং {B} হলো থার্মোডাইনামিক অ্যাক্টিভিটি। এদের প্রত্যেককেই ঘনমাত্রা () ও অ্যাক্টিভিটি কোইফিসিয়েন্ট এর গুণফল দ্বারা প্রকাশ করা যায়। সুতরাং,
তাহলে,
এখানে, হলো মোলার সাম্য ধ্রুবক।
যদি, হয় (আদর্শ দ্রবণের ক্ষেত্রে সবসময় ) তাহলে,
যখন, কে সাম্য ধ্রুবক ধরা হয় তখন সাধারণত এমনটিই ঘটে।
একই ভাবে,
বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে,
বিক্রিয়া ঘটার জন্য সকল উপাদানকেই একত্রে উপস্থিত থাকতে হয়। যখন উপাদান গুলির ঘনমাত্রা বেশি থাকে তখন এমন হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। তাই, এদের ঘনমাত্রা গুণ করে এই সম্ভবনা বের করা হয়।
আবার, বিক্রিয়ায় উপাদান সমূহ গ্যাসীয় হলে, আদর্শ গ্যাস সূত্র অনুযায়ী[৩],
বা,
বা, ঘনমাত্রা (যেহেতু, ঘনমাত্রা ),
এখানে, হল চাপ, হল আয়তন, হল মোল এককে গ্যাসের পরিমাণ, হল গ্যাস ধ্রুবক ও হল তাপমাত্রা।
সুতরাং,
বা,
যেখানে, হলো এর আংশিক চাপ।
এখন,
হলে,
এখানে, হলো আংশিক চাপ সাম্য ধ্রুবক।
একই ভাবে,
বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে,
সুতরাং, ও এর মাঝে সম্পর্কটি হলো,
যেখানে, হলো উৎপাদের মোট মোল সংখ্যা হতে বিক্রিয়কের মোট মোল সংখার বিয়োগফল।