অনুক্রম

testwiki থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন

গণিতে অনুক্রম হল কিছু বস্তুর একটি গণনাকৃত সংগ্রহ যেখানে বস্তুর পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে বস্তুর বিন্যাস উপেক্ষা করা হয় না। এটি মূলত গাণিতিক সেটের মতো, যার উপাদান সংখ্যাকে (অসীমও হতে পারে) অনুক্রমটির দৈর্ঘ্য বলা হয়। কিন্তু সেটে পুনরাবৃত্তি বা ক্রম না থাকলেও অনুক্রমে ক্রম গুরুত্বপূর্ণ এবং একই উপাদান একাধিকবার ক্রমানুসারে বিভিন্ন অবস্থানে একাধিকবার উপস্থিত হতে পারে এবং একটি সেটের বিপরীতে, ক্রমটি গুরুত্বপূর্ণ। অনুক্রমের নির্দিষ্ট অবস্থানের উপাদানকে একটি ফাংশন দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। অনুক্রমকে স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত পরিবারের সাথে তুলনা করা যেতে পারে, যার প্রতিটি সদস্যকে তার অবস্থানের ফাংশন দ্বারা চেনা যায়।

উদাহরণস্বরূপ, (ক, ল, ম) বর্ণগুলো একটি অনুক্রম যার প্রথম সদস্য 'ক' এবং শেষ সদস্য 'ম'। এই অনুক্রমটি (ক, ম, ল) থেকে আলাদা। এছাড়া আরেকটি সঠিক অনুক্রম হলো (১, ১, ২, ৩, ৫, ৮), যেখানে দুটি ভিন্ন অবস্থানে ১ সংখ্যাটি থাকে। উদাহরণের ন্যায় অনুক্রম সসীম হতে পারে, অথবা অসীম হতে পারে, যেমন সমস্ত ধনাত্মক জোড় সংখ্যার অনুক্রম (২, ৪, ৬,...)।

অনুক্রমের কোনো উপাদানের অবস্থানকে তার র‍্যাংক হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে; প্রতিটি উপাদানের জন্য একটি পৃথক স্বাভাবিক সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়। প্রথম উপাদানটির র‍্যাংক প্রয়োজন অনুযায়ী ০ বা ১ ধরা হয়। গাণিতিক বিশ্লেষণে অনুক্রম প্রায়ই বর্ণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যেমন an, bn, cn ইত্যাদি, যেখানে সাবস্ক্রিপ্ট n অনুক্রমের n-তম উপাদানকে বোঝায়; উদাহরণস্বরূপ, ফিবোনাচ্চি অনুক্রম F এর n-তম উপাদান সাধারণত Fn দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।

কম্পিউটিং এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানে সসীম অনুক্রমগুলোকে কখনো কখনো স্ট্রিং, শব্দ বা তালিকা বলা হয়। কম্পিউটার মেমরিতে ভিন্ন ভিন্ন কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী এ নামের বিভিন্নতা দেখা যায়। অসীম অনুক্রমগুলি স্ট্রিম বলা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে খালি ক্রমকে অনুক্রম হিসেবে ধরা হয়, কিন্তু প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে বাদ দেওয়া যেতে পারে।

বাস্তব সংখ্যার অসীম অনুক্রম (নীল রঙে)। এটি ক্রমবর্ধমান, ক্রমহ্রাসমান, অভিসারী অথবা কোশি অনুক্রম নয়। এটা অবশ্য সীমিত।

উদাহরণ এবং প্রকাশপদ্ধতি

অনুক্রমকে একটি নির্দিষ্ট বিন্যাসে বিভিন্ন উপাদানের একটি তালিকা হিসাবে চিন্তা করা যেতে পারে। অনুক্রমের অভিসারী বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে ফাংশন, স্থান এবং অন্যান্য গাণিতিক কাঠামো অধ্যয়ন সুবিধাজনক। বিশেষ করে, অনুক্র‌ম ধারার ভিত্তি, যা ব্যবকলনীয় সমীকরণ এবং বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ। অনুক্রমকে প্যাটার্ন বা ধাঁধা হিসাবে অধ্যয়ন করা যেতে পারে, যেমন মৌলিক সংখ্যার অধ্যয়ন।

অনুক্রম বোঝানোর জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি নির্দিষ্ট ধরনের অনুক্রমের জন্য আরও কার্যকর। অনুক্রম নির্দিষ্ট করার একটি উপায় হল এর সমস্ত উপাদান তালিকাভুক্ত করা। উদাহরণস্বরূপ, প্রথম চারটি বিজোড় সংখ্যা (১, ৩, ৫, ৭) অনুক্রম গঠন করে। এটি অসীম অনুক্রমের জন্যও ব্যবহৃত হয়। যেমন, ধনাত্মক বিজোড় পূর্ণসংখ্যার অসীম ক্রমটি লেখা হয় (১, ৩, ৫, ৭, ...)। যেহেতু এলিপসিস (...) চিহ্নটি অসীমের দিকে পরিচালিত হওয়া বোঝায়, তাই তালিকাভুক্ত করা সুবিধাজনক। এতে প্রথম কয়েকটি উপাদান থেকে অনুক্রমটি সহজেই চেনা যায়।

উদাহরণ

বর্গাকার টালি দ্বারা সাজানো চিত্র যার বাহুর দৈর্ঘ্য পরপর ফিবোনাচ্চি সংখ্যাকে নির্দেশ করে।
  1. মৌলিক সংখ্যা হল ১ এর থেকে বড় এমন স্বাভাবিক সংখ্যা যার ১ ও নিজ ব্যতীত কোনো উৎপাদক নেই। এধরনের সংখ্যাকে মানের ঊর্ধ্বক্রমে নিলে (২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭,...) অনুক্রম পাওয়া যায়। মৌলিক সংখ্যা গণিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে সংখ্যা তত্ত্বে তাদের সাথে সম্পর্কিত অনেক ফলাফল বিদ্যমান।
  2. ফিবোনাচ্চি অনুক্রম হলো পূর্ণসংখ্যার অনুক্রম নিয়ে গঠিত যার প্রতিটি উপাদান পূর্ববর্তী দুটি উপাদানের যোগফল। প্রথম দুটি উপাদান ০ ও ১ অথবা ১ ও ১ যাতে অনুক্রমটি হয় (০, ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪,...)।[]

অনুক্রমের অন্যান্য উদাহরণের মধ্যে রয়েছে মূলদ সংখ্যা, বাস্তব সংখ্যাজটিল সংখ্যা। যেমন (০.৯, ০.৯৯, ০.৯৯৯, ০.৯৯৯৯,...) অনুক্রমটির ১ সংখ্যাটির কাছাকাছি পৌঁছায়৷ প্রকৃতপক্ষে, প্রতিটি বাস্তব সংখ্যাকে মূলদ সংখ্যার একটি অনুক্রমের সীমাস্থ মান হিসাবে লেখা যেতে পারে। আরেকটি উদাহরণ হিসাবে, [[পাই|টেমপ্লেট:পাই]] হলো (৩, ৩.১, ৩.১৪, ৩.১৪১, ৩.১৪১৫,...) অনুক্রমটির সীমাস্থ মান, যা ক্রমবর্ধমান। টেমপ্লেট:পাই এ উপস্থিত দশমিক অঙ্কের অনুক্রম হলো (৩, ১, ৪, ১, ৫, ৯,...)। আগের অনুক্রমের বিপরীতে, এই অনুক্রমে এমন কোন প্যাটার্ন নেই যা পরিদর্শন দ্বারা যেকোনো অবস্থানের সংখ্যাটি সহজেই বোঝা যায়।

অন্যান্য উদাহরণ হলো ফাংশনের অনুক্রম, যার উপাদান হিসাবে সংখ্যার পরিবর্তে ফাংশন থাকে।

অনলাইন এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইন্টিজার সিকোয়েন্স-এ পূর্ণসংখ্যার অনুক্রমের উদাহরণগুলোর একটি বড় তালিকা রয়েছে।[]

সূচিভুক্তকরণ

যেসব অনুক্রমের প্যাটার্ন সহজে অনুমান করা যায় না বা [[পাই|টেমপ্লেট:পাই]] এর অঙ্কগুলির মতো কোনো প্যাটার্ন নেই, সেগুলোর ক্ষেত্রে অন্য প্রকাশপদ্ধতি সুবিধাজনক হতে পারে। এরকম একটি প্রকাশপদ্ধতি হলো অনুক্রমের n তম উপাদানটি গণনার জন্য n এর ফাংশন নির্ণয় করা, বন্ধনীতে সীমিত করা এবং ডানদিকে ছোটো বর্ণে n সংখ্যাটি যে সেটের অন্তর্ভুক্ত তথা ডোমেইন উল্লেখ করা। উদাহরণস্বরূপ, জোড় সংখ্যার অনুক্রম (2n)n হিসাবে লেখা যেতে পারে, পূর্ণবর্গ সংখ্যার ক্রম এভাবে লেখা যেতে পারে (n2)nn চলককে নির্দেশক বলা যেতে পারে এবং এটি যে মানগুলি গ্রহণ করতে পারে তাকে নির্দেশক সেট বলা যেতে পারে।

এই প্রকাশপদ্ধতিকে অনুক্রমের উপাদানগুলোকে পৃথক চলক হিসাবে বিবেচনা করার কৌশলের সাথে একীভূত করা প্রায়শই দরকারি। ফলে (an)n, এই ধরনের রাশি পাওয়া যেতে পারে। an চলকটি কোনো অনুক্রমের n তম উপাদান নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ:

a1=an এর ১ম উপাদান
a2= ২য় উপাদান
a3= ৩য় উপাদান
an1= (n-1) তম উপাদান
an= n তম উপাদান
an+1= (n+1) তম উপাদান

বিভিন্ন চলক ব্যবহার করে একই সময়ে একাধিক অনুক্রম বিবেচনা করা যেতে পারে; যেমন (bn)n অনুক্রমটি (an)n থেকে ভিন্ন হতে পারে। আবার ((am,n)n)m আকারের অনুক্রমও হতে পারে, যা নির্দেশ করে যে m তম পদটি হলো (am,n)n অনুক্রম।

অনুক্রমের ডোমেইন লেখার একটি বিকল্প উপায় হলো নির্দেশকের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বৈধ মান উল্লেখ করে মানগুলির সীমা নির্দেশ করে দেওয়া। উদাহরণস্বরূপ, (k2)k=110 রাশিটি ১ থেকে ১০ পর্যন্ত বর্গসংখ্যার অনুক্রম (1,4,9,,100) কে নির্দেশ করে। এবং অনুমোদিত কিন্তু তারা নির্দেশকের বৈধ মানগুলিকে প্রতিনিধিত্ব করে না, গরিষ্ঠ নিম্নসীমা ও লঘিষ্ঠ ঊর্ধ্বসীমা নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ, অনুক্রম (an)n=1 এবং অনুক্রম (an)n একই। অনুক্রম (an)n= একটি দ্বি-অসীম ক্রম, এবং এটিকে (,a1,a0,a1,a2,) হিসাবে লেখা যেতে পারে।

যেক্ষেত্রে নির্দেশক সংখ্যার ডোমেইন বোধগম্য, সেক্ষেত্রে সেগুলো প্রায়ই ঊহ্য থাকে। অর্থাৎ সহজভাবে কোনো অনুক্রমকে (ak) আকারে লেখা যায়। কখনো কখনো পদসমূহ শূন্য থেকে শুরু করে সূচিত করা হয়, যেমন

(ak)k=0=(a0,a1,a2,).

কখনো কখনো অনুক্রমের উপাদানগুলি স্বাভাবিকভাবেই পূর্ণসংখ্যার একটি অনুক্রমের সাথে সম্পর্কিত যার প্যাটার্ন সহজেই অনুমান করা যায়। এই ক্ষেত্রে, নির্দেশক সেটটি প্রথম কয়েকটি উপাদানের তালিকা দ্বারা ঊহ্য হতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, বিজোড় সংখ্যার বর্গের ক্রম নিম্নলিখিত যে কোনো উপায়ে চিহ্নিত করা যেতে পারে।

  • (1,9,25,)
  • (a1,a3,a5,),ak=k2
  • (a2k1)k=1,ak=k2
  • (ak)k=1,ak=(2k1)2
  • ((2k1)2)k=1

তদুপরি, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম ক্ষেত্রে সাবস্ক্রিপ্ট এবং সুপারস্ক্রিপ্টগুলি ছেড়ে দেওয়া যেত, যদি সূচী সেটটিকে স্বাভাবিক সংখ্যা হিসাবে ধরে নেওয়া যায়। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত অনুক্রম (ak)k=1 রয়েছে, কিন্তু এটি অভিব্যক্তি দ্বারা চিহ্নিত অনুক্রমের মতো নয়।

পুনরাবৃত্তি দ্বারা একটি অনুক্রম সংজ্ঞায়িত করা

যেসব অনুক্রমের উপাদানগুলি পূর্ববর্তী উপাদানের সাথে একটি সরলভাবে সম্পর্কিত তাদের প্রায়শই পুনরাবৃত্তি ব্যবহার করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এটি তাদের অবস্থানের ফাংশন হিসাবে উপাদানগুলির অনুক্রমের সংজ্ঞার বিপরীতে।

পুনরাবৃত্তি দ্বারা একটি অনুক্রম সংজ্ঞায়িত করার জন্য একটি নিয়ম প্রয়োজন, যাকে বলা হয় পুনরাবৃত্তি সম্পর্ক। এই নিয়ম প্রতিটি উপাদানকে তার আগের উপাদানের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি করতে প্রয়োজন। উপরন্তু, পর্যাপ্ত প্রাথমিক উপাদান প্রদান করা আবশ্যক যাতে অনুক্রমের পরবর্তী উপাদানগুলি পুনরাবৃত্তি সম্পর্কের ধারাবাহিক প্রয়োগ দ্বারা গণনা করা যায়।

ফিবোনাচ্চি অনুক্রম হল একটি সাধারণ উদাহরণ, যবারা সংজ্ঞায়িত করা হয়।

an=an1+an2,

এক্ষেত্রে a0=0 এবং a1=1 ধরা হয়। এর পরে একটি সাধারণ হিসাব থেকে দেখা যায় যে এই ক্রমটির প্রথম দশটি পদ হল 0, 1, 1, 2, 3, 5, 8, 13, 21 এবং 34।

পুনরাবৃত্তি দ্বারা সংজ্ঞায়িত অনুক্রমের একটি জটিল উদাহরণ হল Recamán এর ক্রম,[] যা পুনরাবৃত্তি সম্পর্ক দ্বারা সংজ্ঞায়িত,

an=an1n যদি ফলাফল ধনাত্মক ও পূর্ববর্তী কোনো পদের সমান না হয়।

an=an1+n অন্যথায়

যেখানে প্রথম পদ a0=0.

ধ্রুবক সহগ সহ একটি সরলরৈখিক পুনরাবৃত্তি নিম্নরূপ:

an=c0+c1an1++ckank,

যেখানে c0,,ck ধ্রুবক। অনুক্রমের সাধারণ পদ an প্রকাশের সাধারণ পদ্ধতি আছে টেমপ্লেট:Mvar এর ফাংশন হিসাবে উল্লেখ করা ফিবোনাচ্চি অনুক্রমেরে ক্ষেত্রে F0=0,F1=F2=1, হলে বিনেটের সূত্র দ্বারা টেমপ্লেট:Mvar তম পদ পাওয়া যায়।

Fn=φn(φ)n5

যেখানে φ=1+52

হলোনমিক অনুক্রম হল একটি অনুক্রম যা নিম্নের পুনরাবৃত্তি সম্পর্ক দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়

an=c1an1++ckank,

যেখানে c1,,ck n ঘাতের বহুপদী। বেশিরভাগ হলোনমিক অনুক্রম প্রকাশ করার জন্য কোন সুস্পষ্ট সূত্র নেই। তা সত্ত্বেও গণিতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে হলোনমিক ক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ, অনেক বিশেষ ফাংশনের টেলর ধারা রয়েছে যার সহগগুলির অনুক্রম হলোনমিক। পুনরাবৃত্তি সম্পর্কের ব্যবহারের ফলে এই ধরনের বিশেষ ফাংশনগুলির মান দ্রুত গণনা করা যায়।

সব অনুক্রম একটি পুনরাবৃত্তি সম্পর্ক দ্বারা নির্দিষ্ট করা যায় না। মৌলিক সংখ্যার অনুক্রম একটি সাধারণ উদাহরণ (২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭,...)।

সংজ্ঞা এবং সাধারণ বৈশিষ্ট্য

গণিতে অনুক্রমের বিভিন্ন ধারণা রয়েছে, যার মধ্যে কিছু অনুক্রমের ধারণা নিচের সংজ্ঞা এবং রাশিমালা থেকে পাওয়া যায় না।

সংজ্ঞা

এই নিবন্ধে, একটি ক্রম প্রকৃতপক্ষে একটি ফাংশন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যার ডোমেইন হলো পূর্ণসংখ্যার একটি পরিসীমা। এই সংজ্ঞাটি "অনুক্রম" শব্দের অনেক রকম ব্যবহারকে নির্দিষ্ট করে, যার মধ্যে রয়েছে অসীম অনুক্রম, দ্বি-অসীম অনুক্রম এবং সসীম অনুক্রম (এই ধরনের অনুক্রমগুলির সংজ্ঞার জন্য নিচে দেখুন)। তবে অনেকে মনে করেন অনুক্রমের ডোমেইন হবে কেবল স্বাভাবিক সংখ্যার সেট। এই ধারণার অসুবিধা হলো যে এটি সসীম অনুক্রম এবং দ্বি-অসীম অনুক্রমকে স্বীকৃতি দেয় না, যদিও উভয়েই সাধারণত গাণিতিক অনুশীলনে অনুক্রম হিসাবে বিবেচিত। আরেকটি অসুবিধা হল, যদি কেউ একটি অনুক্রমের প্রথম পদগুলিকে সরিয়ে দেয়, তবে এই সংজ্ঞাটি মানানসই করার জন্য বাকি পদগুলিকে পুনঃসূচীকরণ করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে, এক্সপোজিশন সংক্ষিপ্ত করার জন্য, অনুক্রমের কোডোমেনটি প্রসঙ্গ দ্বারা স্থির করা হয়, উদাহরণস্বরূপ এটিকে বাস্তব সংখ্যার সেট R,[] জটিল সংখ্যার সেট C,[] বা একটি টপোলজিক্যাল স্পেস হতে হবে।[]

যদিও অনুক্রম এক ধরনের ফাংশন, সেগুলি সাধারণত ফাংশন থেকে আলাদা ধরা হয়। এক্ষেত্রে ইনপুটটি বন্ধনীর পরিবর্তে একটি সাবস্ক্রিপ্ট হিসাবে লেখা হয়, অর্থাৎ টেমপ্লেট:Math এর পরিবর্তে টেমপ্লেট:Math লেখা হয়। এছাড়াও এদের মধ্যে পরিভাষাগত পার্থক্য রয়েছে: সর্বনিম্ন ইনপুট (প্রায়ই 1) প্রদানে প্রাপ্ত মানকে অনুক্রমটির "প্রথম উপাদান" বলা হয়, এরপর পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় উপাদান, তৃতীয় উপাদান প্রভৃতি আসে। এছাড়া ফাংশনকে সাধারণত একটি বর্ণের দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়, যেমন f। অন্যদিকে অনুক্রমকে (an)nA, বা (an) দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়। এখানে টেমপ্লেট:Math হল অনুক্রমের ডোমেইন বা নির্দেশক সেট।

অনুক্রম এবং তাদের সীমাস্থ মান (নিচে দেখুন) টপোলজিকাল স্পেস অধ্যয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। অনুক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাধারণীকরণ হল নেটের ধারণা। একটি নেট হল টপোলজিক্যাল স্পেসে নির্দেশিত সেটের (সম্ভবত অগণনাযোগ্য) একটি ফাংশন। অনুক্রমের জন্য নোটেশনাল কনভেনশনগুলি সাধারণত নেটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

সসীম এবং অসীম

অনুক্রমের পদের সংখ্যাকে অনুক্রমের দৈর্ঘ্য বলে।

একটি সসীম দৈর্ঘ্য n এর একটি অনুক্রমকে n -টুপলও বলা হয়। খালি অনুক্রম () অর্থাৎ যার কোন উপাদান নেই, এরাও সসীম অনুক্রমের অন্তর্ভুক্ত।

সাধারণত, অসীম অনুক্রম শব্দটি এমন একটি অনুক্রমকে বোঝায় যা এক দিকে অসীম এবং অন্য দিকে সসীম—অর্থাৎ অনুক্রমটির প্রথম উপাদান আছে, কিন্তু কোন চূড়ান্ত উপাদান নেই। এই ধরনের ক্রমকে এককভাবে অসীম ক্রম বা একতরফা অসীম ক্রম বলা যেতে পারে। অন্যদিকে যে অনুক্রম উভয় দিকেই অসীম—অর্থাৎ যার কোনো প্রথম বা চূড়ান্ত উপাদান নেই—তাকে দ্বি-অসীম অনুক্রম, দ্বিমুখী অসীম অনুক্রম বা দ্বিগুণ অসীম অনুক্রম বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ সকল জোড় পূর্ণসংখ্যার অনুক্রম ( ...,−৪, −২, ০, ২, ৪, ৬, ৮,...), হল দ্বি-অসীম অনুক্রম যা (2n)n= দ্বারা নির্দেশ করা যেতে পারে।

ক্রমবর্ধমান ও ক্রমহ্রাসমান

একটি অনুক্রমকে ক্রমবর্ধমান বলা হয় যদি প্রতিটি পদ তার আগেরটির চেয়ে বড় বা সমান হয়। উদাহরণস্বরূপ, অনুক্রম (an)n=1 ক্রমবর্ধমান হবে যদি এবং কেবল যদি an+1 an হয়। যদি প্রতিটি পদ পূর্ববর্তী পদের (>) থেকে কঠোরভাবে বেশি হয় তবে অনুক্রমটিকে বলা হয় কঠোর ক্রমবর্ধমান। একটি অনুক্রম ক্রমহ্রাসমান হবে যদি প্রতিটি পদ আগেরটির থেকে কম বা সমান হয় এবং প্রতিটি পদ আগেরটির থেকে কঠোরভাবে কম হলে কঠোর ক্রমহ্রাসমান হবে।

কঠোর ক্রমবর্ধমানকঠোর ক্রমহ্রাসমানের সাথে কোন সম্ভাব্য বিভ্রান্তি এড়াতে অ-ক্রমহাসমানঅ-ক্রমবর্ধমান শব্দগুলি প্রায়শই ক্রমবর্ধমানক্রমহ্রা‌সমানের বদলে ব্যবহৃত হয়।

সীমিত

যদি বাস্তব সংখ্যার অনুক্রম (an) এমন হয় যে সকল পদ কিছু বাস্তব সংখ্যা M থেকে কম হয়, তাহলে অনুক্রমটিকে ঊর্ধ্বসীমিত বলা হয়। অন্য কথায়, এর মানে হল M এমনভাবে বিদ্যমান যেন সকল n এর জন্য anM এই ধরনের যেকোনো সংখ্যা M কে বলা হয় ঊর্ধ্বসীমা। একইভাবে, যদি সকল n জন্য anM হয়, তাহলে অনুক্রমটি নিম্নসীমিত হয় এবং এই জাতীয় যে কোনো M কে নিম্নসীমা বলা হয়। যদি একটি ক্রম ঊর্ধ্বসীমিত ও নিম্নসীমিত হয় হয়, তাহলে অনুক্রমটিকে সীমিত বলা হয়।

উপ-অনুক্রম

উপ-অনুক্রম হল প্রদত্ত অনুক্রমের উপাদানগুলির আপেক্ষিক অবস্থানের পরিবর্তন না করে কিছু উপাদান মুছে ফেলার মাধ্যমে গঠিত অনুক্রম। উদাহরণস্বরূপ, ধনাত্মক জোড় পূর্ণসংখ্যার অনুক্রম (২, ৪, ৬,...) হলো ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার (১, ২, ৩,...) উপ-অনুক্রম। যখন অন্যান্য উপাদান মুছে ফেলা হয়, তখন কিছু উপাদানের অবস্থান পরিবর্তিত হয়, তবে আপেক্ষিক অবস্থান ঠিক থাকে।

মূলত, (an)n আকারের অনুক্রমের উপ-অনুক্রম হলো (ank)k আকারের যেকোনো অনুক্রম, যেখানে (nk)k হলো ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার একটি কঠোর ক্রমবর্ধমান ক্রম।

অন্যান্য ধরনের অনুক্রম

সংজ্ঞায়িত করা সহজ এমন কিছু অন্যান্য ধরনের অনুক্রম নিম্নরূপ:

  • একটি পূর্ণসংখ্যা অনুক্রম হল একটি অনুক্রম যার পদগুলি পূর্ণসংখ্যা।
  • একটি বহুপদী অনুক্রম হল একটি ক্রম যার পদগুলি বহুপদী।
  • একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা অনুক্রমকে কখনও কখনও গুণক বলা হয়, যদি সকল জোড়া n, m পরস্পর সহমৌলিক হয় এবং anm = a n a m যেমন n এবং m হয়।[] সকল n এর জন্য an = na1 হলেও তাকে গুণক বলা হয়। অধিকন্তু, একটি গুণক ফিবোনাচ্চি অনুক্রম[] a n = a n −1 a n −2.
  • একটি বাইনারি অনুক্রম হল এমন একটি অনুক্রম যার পদগুলি দুটি মানের যেকোনো একটি হতে পারে। যেমন বাইনারি সংখ্যাপদ্ধতির অঙ্কগুলো নিয়ে গঠিত অনুক্রম (০,১,১,০,...), মুদ্রা নিক্ষেপের অনুক্রম (হেডস/টেইলস) (H,T,H,H, T,...), সত্য বা মিথ্যা প্রশ্নের একটি সেটের উত্তরের অনুক্রম (T, F, T, T, ...) ইত্যাদি।

সীমাস্থ মান এবং অভিসৃতি

টেমপ্লেট:মূল নিবন্ধ

একটি অভিসারী অনুক্রম ( a n ) এর লেখচিত্র নীল রঙে দেখানো হয়েছে। লেখ থেকে দেখা যাচ্ছে যে অনুক্রমটি n এর মান বৃদ্ধির সাথে সাথে সীমাস্থ মান শূন্যের কাছাকাছি হচ্ছে।

অনুক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল কনভারজেন্স বা অভিসৃতি। অনুক্রম অভিসারী হয় যদি তার পদসমূহ ক্রমান্বয়ে একটি নির্দিষ্ট মান তথা সীমাস্থ মানের কাছাকাছি হয়। যে অনুক্রম নির্দিষ্ট মানের দিকে অভিসারী হয় না তাকে অপসারী বলে।

সহজভাবে বললে অনুক্রমের সীমাস্থ মান থাকে যদি অনুক্রমের উপাদানগুলি বাড়তে বাড়তে কোনো L মানের কাছাকাছি হয়, কিন্তু তার সমান হয় না।

উদাহরণস্বরূপ, অনুক্রম an=n+12n2n এর মান বৃদ্ধির সাথে সাথে উপাদানগুলোর মান ০ এর কাছাকাছি হয়। অন্যদিকে, অনুক্রম bn=n3 (1, 8, 27,...) এবং cn=(1)n (−1, 1, −1, 1,...) উভয়েই অপসারী।

অনুক্রমের উপাদানগুলো যে মানের দিকে অভিসারী হয় তাক অনুক্রমের সীমাস্থ মান বলা হয়। অভিসারী অনুক্রমের (an) সীমাস্থ মান সাধারণত limnan দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যদি (an) অপসারী অনুক্রম হয়, তাহলে limnan অভিব্যক্তিটি অর্থহীন।

অভিসৃতির প্রকৃত সংজ্ঞা

বাস্তব সংখ্যার একটি অনুক্রম (an) L মানের দিকে অভিসারী হবে যদি, প্রতি ε>0 এর জন্য, একটি স্বাভাবিক সংখ্যা N বিদ্যমান যেন প্রতি nN এর জন্য নিম্নের গাণিতিক বাক্যটি সত্য হয়।[]

|anL|<ε.

যদি (an) বাস্তব সংখ্যার অনুক্রমের বদলে জটিল সংখ্যার অনুক্রম হয়, তাহলে সূত্রটি অভিসৃতিকে সংজ্ঞায়িত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যদি || প্রতীকটি জটিল সংখ্যার মডুলাস বা পরমমান বোঝায়, অর্থাৎ |z|=z*z . যদি (an) একটি মেট্রিক স্পেসে বিন্দুগুলির অনুক্রম বোঝায়, তাহলে সূত্রটি অভিসারকে সংজ্ঞায়িত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যদি |anL| অভিব্যক্তিটি dist(an,L) অভিব্যক্তি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। এই অভিব্যক্তি an এবং L এর মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্দেশ করে।

প্রয়োগ এবং গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল

যদি (an) এবং (bn) অভিসারী অনুক্রম হয়, তবে নিম্নলিখিত লিমিট তথা সীমাস্থ মান বিদ্যমান, এবং নিম্নলিখিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী হিসাবে করা যেতে পারে:[][]

  • limn(an±bn)=limnan±limnbn
  • limncan=climnan সকল বাস্তব সংখ্যা c এর জন্য
  • limn(anbn)=(limnan)(limnbn)
  • limnanbn=lim\limits nanlim\limits nbn, এই শর্তে যে limnbn0
  • limnanp=(limnan)p সবার জন্য p>0 এবং an>0

তাছাড়া:

  • যদি কোনো N থেকে বড় সকল n এর জন্য anbn হয়, তাহলে limnanlimnbnহবে।টেমপ্লেট:ইএফএন
  • (স্কুইজ থিওরেম)
    যদি (cn) একটি অনুক্রম হয় যেন সকল n>N এর জন্য ancnbn টেমপ্লেট:Nowrap তাহলে (cn) অভিসারী, এবং limncn=L .
  • যদি একটি অনুক্রম সীমিত এবং মনোটনিক হয় তবে এটি অভিসারী।
  • একটি অনুক্রম অভিসারী হয় যদি ও কেবল যদি এর সমস্ত উপ-অনুক্রম অভিসারী হয়।

কোশি অনুক্রম

একটি কচি সিকোয়েন্সের প্লট ( X n ), নীল রঙে দেখানো হয়েছে, X n বনাম n হিসাবে। গ্রাফে অনুক্রমটি একটি সীমাতে রূপান্তরিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে কারণ ক্রমটির পরপর পদগুলির মধ্যে দূরত্ব n বাড়ার সাথে সাথে ছোট হয়ে যায়। বাস্তব সংখ্যায় প্রতিটি Cauchy ক্রম কিছু সীমাতে রূপান্তরিত হয়।

কোশি অনুক্রম হল এমন একটি ক্রম যার পদগুলির মান n খুব বড় হওয়ার সাথে সাথে অনির্দিষ্টভাবে কাছাকাছি হয়ে যায়। কোশি অনুক্রমের ধারণা মেট্রিক স্পেসে অনুক্রম অধ্যয়নের ক্ষেত্রে এবং বাস্তব বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তব বিশ্লেষণে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল অনুক্রমের জন্য অভিসৃতির কোশি চরিত্রায়ন:

বাস্তব সংখ্যার একটি অনুক্রম বাস্তব সংখ্যায় অভিসারী হবে যদি ও কেবল যদি এটি কোশি হয়।

বিপরীতে, মূলদ সংখ্যার কোশি অনুক্রম রয়েছে যা মূলদ সংখ্যায় অভিসারী নয়, যেমন x 1 = 1 এবং xn +1 = টেমপ্লেট:Sfrac দ্বারা সংজ্ঞায়িত অনুক্রম, যা কোশি হলেও কোনো মূলদ সীমা নেই। সাধারণভাবে, মূলদ সংখ্যার যে কোনো অনুক্রম যা একটি অমূলদ সংখ্যার কাছাকাছি হয়, তা হলো কোশি অনুক্রম, কিন্তু মূলদ সংখ্যার সেটে একটি অনুক্রম হিসাবে ব্যাখ্যা করা হলে অভিসারী নয়।

যে মেট্রিক স্পেস অনুক্রমের জন্য অভিসৃতির কোশি বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে তাকে সম্পূর্ণ মেট্রিক স্পেস বলা হয়।

অসীম সীমা

ক্যালকুলাসের ক্ষেত্রে অপসারী অনুক্রমের ক্ষেত্রে সীমাস্থ মানের ব্যাপারে আলোচনা একটি সাধারণ ঘটনা। যদি an, n এর জন্য সীমাহীনভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে তাকে

limnan=.

লেখা যায়।

এই ক্ষেত্রে বলা হয় যে অনুক্রমটি অপসারী, বা অসীমের দিকে অভিসারী। এই ধরনের একটি অনুক্রমের উদাহরণ হল টেমপ্লেট:Nowrap

যদি an সীমাহীনভাবে ঋণাত্মক হতে থাকে n শর্তে,

limnan=

লেখা যায়।

এবং বলা যায় যে অনুক্রমটি অপসারী বা ঋণাত্মক অসীমের দিকে অভিসারী।

ধারা

ধারা বলতে সাধারণত অনুক্রমের পদগুলির সমষ্টিকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ একে n=1an বা a1+a2+ হিসাবে লেখা যেতে পারে, যেখানে (an) বাস্তব বা জটিল সংখ্যার একটি অনুক্রম। একটি ধারার আংশিক সমষ্টি হলো অসীম চিহ্নটিকে একটি সসীম সংখ্যা দিয়ে প্রতিস্থাপন করার ফলে প্রাপ্ত রাশি, অর্থাৎ ধারার N তম আংশিক সমষ্টি n=1an হলো

SN=n=1Nan=a1+a2++aN.

ধারার আংশিক সমষ্টি নিজেই একটি অনুক্রম (SN)N গঠন করতে পারে, যাকে n=1an ধারার আংশিক সমষ্টির অনুক্রম বলা হয়। যদি আংশিক সমষ্টির অনুক্রম অভিসৃত হয়, তাহলে বলা যায় যে n=1an অভিসারী, এবং সীমাস্থ মান limNSN কে ধারাটির মান বলা হয়। n=1an=limNSN চিহ্ন দ্বারা ধারা ও এর মান উভয়েই বোঝাতে পারে।

গণিতের অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার

টপোলজি

অনুক্রম টপোলজিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে মেট্রিক স্পেস অধ্যয়নে। যেমন:

  • মেট্রিক স্পেস ঠিক তখনই কম্প্যাক্ট হয় যখন এটি ক্রমান্বয়ে কম্প্যাক্ট হয়।
  • একটি মেট্রিক স্পেস থেকে অন্য মেট্রিক স্পেসে একটি ফাংশন অবিচ্ছিন্ন থাকে ঠিক যখন এটি অভিসারী অনুক্রমকে অভিসারী অনুক্রমে নেওয়া হয়।
  • মেট্রিক স্পেস একটি সংযুক্ত স্থান হবে যদি ও কেবল যদি, যখনই স্পেসটিকে দুটি সেটে বিভক্ত করা হয়, দুটি সেটের একটির অনুক্রম থাকে যা অন্য সেটের একটি বিন্দুতে অভিসৃত হয়।
  • একটি টপোলজিক্যাল স্পেস ঠিক তখনই বিভাজ্য হয় যখন বিন্দুর অনুঘন ক্রম থাকে।

অনুক্রমগুলিকে নেট বা ফিল্টারে সাধারণীকরণ করা যেতে পারে। এই সাধারণীকরণের ফলে উপরের কিছু উপপাদ্যকে মেট্রিক্স ছাড়াই সম্প্রসারিত করা যায়।

গুণন টপোলজি

টপোলজিকাল স্পেসের অনুক্রমের টপোলজিকাল পণ্য হল সেই স্থানগুলির কার্টেসিয়ান গুণ, গুণন টপোলজি নামে একটি প্রাকৃতিক টপোলজি দিয়ে সজ্জিত।

আরও বিশেষভাবে, স্থানের একটি অনুক্রম (Xi)i দেওয়া হয়েছে,

X:=iXi,

সব অনুক্রমের সেট হিসেবে গুণন স্পেসকে (xi)i দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় যেন যেমন প্রতিটি i এর জন্য, xi এর একটি উপাদান Xiক্যানোনিকাল প্রজেকশন হল ম্যাপ pi : XXi, pi((xj)j)=xi সমীকরণ দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়। তারপর X- এর গুণন টপোলজিকে কোরসেস্ট টপোলজি (অর্থাৎ সবচেয়ে কম খোলা সেট সহ টপোলজি) বলা হয় যেখানে যার জন্য সকল pi এর অভিক্ষেপ অবিচ্ছিন্ন। গুণন টপোলজিকে কখনও কখনও টাইকোনফ টপোলজি বলা হয়।

বিশ্লেষণ

বিশ্লেষণে অনুক্রম আলোচনা করার সময়, সাধারণত নিম্নোক্ত আকারের অনুক্রম বিবেচনা করা হয়,

(x1,x2,x3,) or (x0,x1,x2,)

যা হলো, স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা সূচীকৃত উপাদানের অসীম অনুক্রম।

একটি অনুক্রম ১ বা ০ ছাড়া ভিন্ন একটি সংখ্যা দিয়ে শুরু হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ xn=1log(n) দ্বারা সংজ্ঞায়িত অনুক্রমটি শুধুমাত্র n ≥ 2 শর্তে সংজ্ঞায়িত হবে। এই ধরনের অসীম ক্রম সম্পর্কে আলোচনার সময়, এটি সাধারণত যথেষ্ট (এবং বেশিরভাগ বিবেচনার জন্য খুব বেশি পরিবর্তিত হয় না) অনুমান করা যায় যে অনুক্রমের সদস্যগুলি অন্তত যথেষ্ট বড় সমস্ত সূচকের জন্য সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, অর্থাৎ, প্রদত্ত কিছু N থেকে বড়।

সর্বাধিক প্রাথমিক ধরনের অনুক্রম হল সংখ্যাসূচক, অর্থাৎ বাস্তব বা জটিল সংখ্যার ক্রম। এই ধরনের কিছু ভেক্টর স্পেস উপাদানের অনুক্রম সাধারণীকরণ করা যেতে পারে। বিশ্লেষণে, ভেক্টর স্পেসগুলি প্রায়শই ফাংশন স্পেস হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এমনকি আরও সাধারণভাবে, একজন টপোলজিক্যাল স্পেসের উপাদানগুলির সাথে অনুক্রমগুলি অধ্যয়ন করতে পারে।

অনুক্রম স্পেস

একটি অনুক্রম স্পেস হল একটি ভেক্টর স্পেস যার উপাদানগুলি বাস্তব বা জটিল সংখ্যার অসীম ক্রম। একইভাবে, এটি একটি ফাংশন স্পেস যার উপাদানগুলি স্বাভাবিক সংখ্যা থেকে K ক্ষেত্র পর্যন্ত, যেখানে K হল বাস্তব সংখ্যার ক্ষেত্র বা জটিল সংখ্যার ক্ষেত্র। এই ধরনের সমস্ত ফাংশনের সেট স্বাভাবিকভাবেই K এর উপাদানগুলির সাথে সকল সম্ভাব্য অসীম ক্রমগুলির সেট দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং ফাংশনগুলির পয়েন্টওয়াইজ যোগ এবং পয়েন্টওয়াইজ স্কেলার গুণনের ক্রিয়াকলাপের অধীনে একটি ভেক্টর স্পেসে পরিণত করা যেতে পারে। সমস্ত অনুক্রমের স্পেস এই স্পেসের রৈখিক সাবস্পেস। অনুক্রম স্পেসগুলি সাধারণত একটি আদর্শ, বা অন্তত একটি টপোলজিক্যাল ভেক্টর স্পেসের কাঠামো দিয়ে সজ্জিত থাকে।

বিশ্লেষণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুক্রম স্পেস হল ℓp স্পেস, p -power যোগযোগ্য সিকোয়েন্সগুলি নিয়ে গঠিত, p -norm সহ। এগুলি প্রাকৃতিক সংখ্যার সেটে গণনা পরিমাপের জন্য L<sup id="mwAo0"><i id="mwAo4">p</i></sup> স্পেসগুলির বিশেষ ক্ষেত্র। অনুক্রমের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণি যেমন অভিসারী অনুক্রম বা খালি অনুক্রম অনুক্রমের স্পেস গঠন করে, যথাক্রমে c এবং c 0 নির্দেশিত, sup আদর্শের সাথে। যেকোনো অভিসারী স্পেসকে পয়েন্টওয়াইজ অভিসৃতির টপোলজি দিয়েও সজ্জিত করা যেতে পারে, যার অধীনে এটি FK-স্পেস নামে একটি বিশেষ ধরনের ফ্রেচেট স্পেস হয়ে যায়।

রৈখিক বীজগণিত

একটি ক্ষেত্রের উপর অনুক্রমগুলিকে একটি ভেক্টর স্থানের ভেক্টর হিসাবেও দেখা যেতে পারে। বিশেষভাবে, F -valued অনুক্রমগুলির সেট (যেখানে F হল একটি ক্ষেত্র) হলো স্বাভাবিক সংখ্যার সেটের উপর F -valued ফাংশনের একটি ফাংশন স্পেস (আসলে, একটি গুণন স্পেস )।

বিমূর্ত বীজগণিত

বিমূর্ত বীজগণিতে বিভিন্ন ধরনের অনুক্রম থাকে, যার মধ্যে গোষ্ঠী বা রিংয়ের মতো গাণিতিক বস্তুর অনুক্রম অন্তর্ভুক্ত।

মুক্ত মনোয়েড

যদি A একটি সেট হয়, A এর উপর মুক্ত মনোয়েড ( A* চিহ্নিত করা হয়, A এর ক্লিন তারকাও বলা হয়) হলো একটি মনোয়েড যাতে সংযুক্তির বাইনারি অপারেশনের দ্বারা A এর শূন্য বা তার বেশি উপাদানের সকল সসীম অনুক্রম (বা স্ট্রিং) থাকে। মুক্ত সেমিগ্রুপ A+ হল A* এর সাব-সেমিগ্রুপ যাতে খালি অনুক্রম ব্যতীত সমস্ত উপাদান রয়েছে।

এক্সাক্ট অনুক্রম

গ্রুপ তত্ত্বের প্রসঙ্গে, কিছু গ্রুপ ও গ্রুপ হোমোমরফিজমের একটি অনুক্রম

G0f1G1f2G2f3fnGn

কে এক্সাক্ট বলা হবে, যদি প্রতিটি হোমোমর্ফিজমের চিত্র (বা পরিসর) পরবর্তীটির কার্নেলের সমান হয়:

im(fk)=ker(fk+1)

গ্রুপ এবং হোমোমরফিজমের অনুক্রম সসীম বা অসীম হতে পারে।

কিছু অন্যান্য বীজগণিতীয় কাঠামোর জন্য একটি অনুরূপ সংজ্ঞা দেওয়া যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ভেক্টর স্পেস এবং রৈখিক ম্যাপ বা মডিউল এবং মডিউল হোমোমর্ফিজমের একটি এক্সাক্ট অনুক্রম থাকতে পারে।

বর্ণালি অনুক্রম

হোমোলজিকাল বীজগণিত এবং বীজগণিত টপোলজিতে, একটি বর্ণালি অনুক্রম হল ধারাবাহিক অনুমান গ্রহণের মাধ্যমে হোমোলজি গ্রুপগুলি হিসাব করার একটি উপায়। বর্ণালি অনুক্রম হল এক্সাক্ট অনুক্রমের একটি সাধারণীকরণ, এবং যেহেতু তাদের প্রবর্তন জিন লিরে (১৯৪৬) করেছেন, বিশেষ করে সেগুলো হোমোটোপি তত্ত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

সেটতত্ত্ব

একটি অর্ডিনাল-ইনডেক্সড অনুক্রম হল একটি সিকোয়েন্সের সাধারণীকরণ। যদি α একটি লিমিট অর্ডিনাল হয় এবং X যদি একটি সেট হয়, তাহলে X- এর উপাদানসমূহের একটি α-সূচীকৃত ক্রম হল α থেকে X পর্যন্ত একটি ফাংশন। এই পরিভাষায় একটি ω-সূচিত অনুক্রম হল একটি অর্ডিনারি অনুক্রম।

কম্পিউটিং

কম্পিউটার বিজ্ঞানে, সসীম অনুক্রমকে তালিকা বলা হয় এবং অসীম অনুক্রমকে স্ট্রিম বলা হয়। অক্ষর বা অঙ্কের সসীম অনুক্রমকে স্ট্রিং বলা হয়।

স্ট্রিম

অঙ্ক বা অক্ষরের অসীম অনুক্রম তাত্ত্বিক কম্পিউটার বিজ্ঞানে বিশেষ আগ্রহের বিষয়। সসীম স্ট্রিংয়ের বিপরীতে এদের প্রায়শই অনুক্রম বা স্ট্রিম হিসাবে উল্লেখ করা হয়। অসীম বাইনারি অনুক্রম, উদাহরণস্বরূপ, বিটের অসীম অনুক্রম ({0, 1} দ্বারা গঠিত)। সকল অসীম বাইনারি অনুক্রমের C = {0, 1} সেটটিকে কখনও কখনও ক্যান্টর স্পেস বলা হয়।

একটি অসীম বাইনারি অনুক্রম তার n তম বিটকে 1 ঠিক করে একটি আনুষ্ঠানিক ভাষা (স্ট্রিংগুলির একটি সেট) উপস্থাপন করতে পারে যদি ও কেবল যদি n তম স্ট্রিং (শর্টলেক্স ক্রমে) সেই ভাষাতে থাকে। এটি প্রমাণের জন্য কর্ণ পদ্ধতি কার্যকর।[১০]

আরও দেখুন

পাদটীকা

টেমপ্লেট:টীকা তালিকা

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:সূত্র তালিকা

বহিঃসংযোগ