গতি

পদার্থবিজ্ঞানে গতি হলো এমন ঘটনা যেখানে সময়ের সাথে সাথে বস্তুর অবস্থান পরিবর্তিত হয়। পদার্থবিজ্ঞানে সময়ের সাথে কোন বস্তুর সরণের হারকে গতি/বেগ বলে। এখানে বেগ একটি ভেক্টর রাশি। গাণিতিকভাবে গতিকে সাধারণত সরণ, দূরত্ব, বেগ, দ্রুতি, ত্বরণ এবং সময়ের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হয়। একজন পর্যবেক্ষকের সাথে একটি প্রসঙ্গ কাঠামো যুক্ত করে সময়ের সাথে ঐ প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন নির্ণয়ের মাধ্যমে বস্তুটির গতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। পদার্থবিজ্ঞানে যে শাখায় কারণ উল্লেখ না করে কোনো বস্তুর গতি বর্ণনা করা হয় তা হলো স্থিতিবিদ্যা; এবং যে শাখায় বল ও এর প্রভাব বর্ণনা করা হয় তা হলো গতিবিদ্যা।
গতি হলো সময়ের সাথে সাথে প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে কোন কিছুর অবস্থান পরিবর্তনের ঘটনা।
যদি কোনো বস্তু প্রদত্ত প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে সময়ের সাথে অবস্থান পরিবর্তন না করে তাহলে বস্তুটিকে স্থিতিশীল, গতিহীন, নিশ্চল অথবা এর আশেপাশের সাপেক্ষে ধ্রুব অবস্থানে রয়েছে বলা হয়। যেহেতু কোনো প্রসঙ্গ কাঠামোই পরম নয়, সুতরাং পরম গতি নির্ণয় করা সম্ভব নয়।[১] তাই মহাবিশ্বের সবকিছুই গতিশীল বিবেচনা করা যেতে পারে।[২]টেমপ্লেট:Rp
বস্তু, পদার্থ কণা, পদার্থ ক্ষেত্র, বিকিরণ, বিকিরণ ক্ষেত্র, বিকিরণ কণা, বক্রতা এবং স্থান-কাল সহ বহুবিধ ক্ষেত্রে গতির প্রভাব বিদ্যমান। এসব ভৌত ব্যবস্থার ব্যাখ্যায় গতি ও গতি-উদ্ভূত বিভিন্ন ধারণার প্রয়োগ করা হয়। প্রতিচ্ছবি, আকার এবং সীমানার গতিও এ প্রসঙ্গে আলোচ্য। সুতরাং গতি শব্দটি সাধারণভাবে কোন স্থানে একটি ভৌত ব্যবস্থা বা কনফিগারেশনের অবিচ্ছিন্ন পরিবর্তনকে নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ, তরঙ্গ অথবা কোয়ান্টাম কণার গতির কথা বলা যেতে পারে, যেখানে কনফিগারেশনটির নির্দিষ্ট অবস্থান থাকার সম্ভাবনা বিদ্যমান।
কোন বস্তুর গতিকে যে প্রধান রাশিটি দ্বারা পরিমাপ করা হয় তা হল ভরবেগ, যা বস্তুটির ভর ও বেগের গুণফল। বস্তুর ভর ও বেগের বৃদ্ধিতে এর ভরবেগও বৃদ্ধি পায়। ভরবেগের নিত্যতার সূত্রানুসারে কোন ব্যবস্থার উপর প্রযুক্ত নিট বাহ্যিক বল শূন্য হলে ব্যবস্থাটির মোট ভরবেগ সংরক্ষিত বা অপরিবর্তিত থাকে। বিশদভাবে বলা যায়, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ারত একাধিক বস্তুর মধ্যে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বল ব্যতীত অন্য কোন বল কাজ না করলে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ঘটার পূর্বের মোট ভরবেগ ও পরের মোট ভরবেগ সমান হবে।গতির সাহায্যে আমরা চলাফেরা করতে পারি
গতির সূত্র
পদার্থবিজ্ঞানে যেকোনো কিছুর গতির বর্ণনার জন্য গতিবিদ্যায় দুই শ্রেণীর সূত্র রয়েছে। বৃহৎ আকৃতির এবং মহাবিশ্বে সকল পরিচিত বস্তুর (যেমন গাড়ি, প্রাস, গ্রহ, কোষ, এবং মানুষ) গতি বর্ণনার জন্য চিরায়ত বলবিদ্যার সূত্র ব্যবহার করা হয়। অতি ক্ষুদ্র পারমাণবিক এবং অতিপারমাণবিক বস্তুর গতি কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হয়। ঐতিহাসিকভাবে নিউটন এবং অয়লার চিরায়ত বলবিদ্যার তিনটি সূত্র দিয়েছিলেন:
| প্রথম সূত্র: | কোনো জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে, বাহ্যিক নিট বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু সমবেগে চলতে থাকবে। |
| দ্বিতীয় সূত্র: | জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে, সময়ের সাথে কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেদিকেই ঘটে। এই সূত্রানুযায়ী, F = ma, যেখানে F হলো প্রযুক্ত বল, m হলো বস্তুর ভর এবং a হলো বল প্রয়োগে সৃষ্ট ত্বরণ। |
| তৃতীয় সূত্র: | যখন একটি বস্তু দ্বিতীয় কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে, তখন দ্বিতীয় বস্তুটিও প্রথম বস্তুর উপর একই মানের বিপরীতমুখী বল প্রয়োগ করে। |
চিরায়ত বলবিদ্যা
টেমপ্লেট:মূল নিবন্ধ টেমপ্লেট:চিরায়ত বলবিদ্যা বিভিন্ন ম্যাক্রোস্কপিক বস্তু, যেমন প্রাস থেকে শুরু করে যন্ত্রাংশ, জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু, যেমন মহাকাশযান, গ্রহ, তারা, এবং ছায়াপথ ইত্যাদির গতি বর্ণনায় চিরায়ত বলবিদ্যা প্রয়োগ করা হয়। এসকল ক্ষেত্রে চিরায়ত বলবিদ্যা প্রয়োগে অত্যন্ত নির্ভুল ফলাফল পাওযা যায়। এছাড়া এটি বিজ্ঞান, প্রকৌশল এবং প্রযুক্তির অন্যতম প্রাচীন শাখা।
চিরায়ত বলবিদ্যা মৌলিকভাবে নিউটনের গতিসূত্রসমূহের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। সূত্রগুলো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল এবং এর ফলে সৃষ্ট গতির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। এগুলো সর্বপ্রথম স্যার আইজাক নিউটনের ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা গ্রন্থে সংকলিত এবং ৫ জুলাই ১৬৮৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। নিউটনের তিনটি সূত্র হলো:
- বাহ্যিক নিট বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু সমবেগে চলতে থাকবে।
- বাহ্যিক বল দিক পরিবর্তন না করলে গতিশীল বস্তু একই দিকে চলতে থাকবে।
- যখন কোন বস্তু দ্বিতীয় একটি বস্তুর উপর F বল প্রয়োগ করলে অপর বস্তুটি প্রথম বস্তুর উপর −F বল প্রয়োগ করবে এবং উভয় বলের মান সমান হবে। সুতরাং F বল প্রয়োগকারী বস্তুটি পিছনে সরে যাবে।[৩] নিউটনের তৃতীয় সূত্রের সারাংশ হলো, "প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে"।
নিউটনের তিনটি সুত্রই সর্বপ্রথম মহাশূন্যে প্রদক্ষিণরত বস্তুসমূহের গাণিতিক মডেল সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছিল। এই ব্যাখ্যা মহাকাশীয় বস্তুসমূহের গতির সাথে পৃথিবীর বস্তুসমূহের গতির মাঝে সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।
সমবেগ
যখন একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে কোনো বস্তু ধ্রুব বেগে একটি নির্দিষ্ট দিকে গতিশীল থাকে, তখন তার গতিকে সমবেগ বলে। উদাহরণস্বরূপ, সরলরেখা বরাবর ধ্রুব বেগে চলমান গাড়ির গতি।
সমবেগের সমীকরণ:
যদি = আদি ও শেষবেগ, = সময়, এবং = সরণ হয়, তাহলে:
- পার্স করতে ব্যর্থ (রূপান্তর ত্রুটি। সার্ভার ("https://wikimedia.org/api/rest_") জানাচ্ছে: "Class "Wikibase\Client\WikibaseClient" not found"): {\displaystyle \mathbf {s} =\mathbf {v} t}
আপেক্ষিক বলবিজ্ঞান
তড়িচ্চুম্বকত্বের সাথে আধুনিক সৃতিবিদ্যা বিকশিত হয়েছে যেখানে বেগ v দ্বারা এর সাথে আলোর বেগ c এর অনুপাতকে নির্দেশ করা হয়। এরপর বেগকে ক্ষিপ্রতা, হিসেবে ব্যাখ্যা করা যেখানে অধিবৃত্তীয় কোণ φ এর জন্য অধিবৃত্তীয় ট্যানজেন্ট ফাংশন tanh φ = v/c. ত্বরণ বা বেগ পরিবর্তনের হার, লরেঞ্জ রুপান্তর অনুযায়ী ক্ষিপ্রতা পরিবর্তন করে। বলবিজ্ঞানের এই অংশই হলো বিশেষ আপেক্ষিকতা। উইলিয়াম কিংডন ক্লিফোর্ড এবং আলবার্ট আইনস্টাইন মহাকর্ষকে আপেক্ষিক বলবিজ্ঞানের আওতায় আনার প্রয়াস করেছিলেন। এক্ষেত্রে মহাকর্ষ দিয়ে বক্র বিশ্বের ব্যাখ্যা দিতে ব্যবকলনীয় জ্যামিতি ব্যবহার করা হয়েছিল। এই চর্চা সাধারণ আপেক্ষিকতা নামে পরিচিত।
কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান
টেমপ্লেট:মূল নিবন্ধ টেমপ্লেট:Sidebar with collapsible lists কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান হলো পারমাণবিক (অণু এবং পরমাণু) এবং অতিপারমাণবিক (ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন এবং আরও ক্ষুদ্র মৌলিক কণা যেমন কোয়ার্ক) স্তরে ভৌত বাস্তবতাকে বর্ণনা করার জন্য নির্দিষ্ট নিতিমালা। এর মধ্যে পদার্থ এবং বিকিরণের একই সাথে কণাধর্মী এবং তরঙ্গধর্মী আচরনের বর্ণনাও রয়েছে যা তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।[৪]
চিরায়ত বলবিদ্যায় কোন বস্তুর অবস্থান এবং গতিবেগ সম্পর্কে নির্ভুল পরিমাপ এবং ভবিষ্যদ্বাণী গণনা করা সম্ভব। কিন্তু হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতির কারণে কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় কোনো কণার সম্পূর্ণ অবস্থা, যেমন এর অবস্থা, বেগ একইসাথে বের করা সম্ভব নয়।টেমপ্লেট:Citation needed
পারমাণবিক স্তরের ঘটনা ছাড়াও বৃহৎ-স্কেলের ঘটনা যেমন অতিতারল্য, অতিপরিবাহিতা এবং জৈবিক ব্যবস্থাসহ ঘ্রান রিসেপ্টর এবং প্রোটিনের গঠন বর্ণনা করতেও কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান খুবই কার্যকর।টেমপ্লেট:Citation needed
মানুষের "অপ্রত্যক্ষ" গতির তালিকা
মহাবিশ্বের সকল বস্তুর মত মানুষও সর্বদা গতিশীল; দেহের বিভিন্ন বাহ্যিক অংশের সুস্পষ্ট গতিবিধি ছাড়াও মানুষ বিভিন্ন উপায়ে গতিশীল যা উপলব্ধি করা আরও কঠিন। এই "অপ্রত্যক্ষ গতি "গুলির মধ্যে অনেকগুলি কেবল বিশেষ সরঞ্জাম এবং সতর্ক পর্যবেক্ষণের সাহায্যে উপলব্ধিযোগ্য। বৃহত আকারের অপ্রত্যক্ষ গতি দুটি কারণে মানুষের পক্ষে বুঝতে অসুবিধা হয়: প্রথমটি হলো নিউটনের গতিসূত্রসমূহ (বিশেষত তৃতীয় সূত্রটি) যা পর্যবেক্ষক সংযুক্ত রয়েছে এমন ভরের উপর গতির অনুভূতিকে বাঁধা দেয়, এবং দ্বিতীয়টি হলো প্রসঙ্গ কাঠামোর অভাব যার সাহায্যে ব্যক্তিরা সহজেই দেখতে পাবে যে তারা চলাচল করছে।[৫] এরকম ছোট আকারের গতিগুলির আকার খুবই ছোট, যা সাধারণত মানব ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে শনাক্ত করা যায় না।
মহাবিশ্ব
স্থান-কাল (মহাবিশ্বের চাঁদর) প্রসারিত হচ্ছে যার অর্থ মহাবিশ্বের সমস্ত কিছুই রাবার ব্যান্ডের মতো প্রসারিত হচ্ছে। এই গতি সবচেয়ে বেশি অস্পষ্ট কারণ এটি কোনও ভৌত গতি নয়, বরং মহাবিশ্বের প্রকৃতিতে পরিবর্তন। এই সম্প্রসারণ যাচাইয়ের প্রাথমিক উৎস সরবরাহ করেছিলেন এডউইন হাবল, এবং তিনি দেখিয়েছিলেন যে সমস্ত ছায়াপথ এবং দূরবর্তী জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল। এটি হাবলের সূত্র হিসেবে পরিচিত, যা মহাবিশ্বের বিস্তারের পূর্বাভাস দিয়েছিল।[৬]
ছায়াপথ
আকাশগঙ্গা ছায়াপথ মহাকাশের মধ্যে গতিশীল অবস্থায় রয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী অন্যান্য ছায়াপথগুলির পর্যবেক্ষিত স্থানের তুলনায় অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে এই গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার (১,৩৪০,০০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা)। আরেকটি প্রসঙ্গ কাঠামো সরবরাহ করেছে মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ। এই প্রসঙ্গ কাঠামোটি ইঙ্গিত দেয় যে আকাশগঙ্গা প্রায় টেমপ্লেট:রূপান্তর বেগে গতিশীল রয়েছে।[৭]টেমপ্লেট:Failed verification
সূর্য এবং সৌরজগৎ
আকাশগঙ্গা তার ঘন গ্যালাকটিক সেন্টারের চারদিকে ঘুরছে, একারণে সূর্য ছায়াপথের মহাকর্ষের ফলে একটি বৃত্তাকার পথে চলেছে। কেন্দ্রীয় বাল্জ বা বাইরের রিম থেকে দূরে অবস্থিত তারার আদর্শ দ্রুতি টেমপ্লেট:রূপান্তর এর মধ্যে।[৮] সমস্ত গ্রহ এবং তাদের চাঁদ সূর্যের সাথে চলাফেরা করে। সুতরাং সৌরজগত গতিশীল।
পৃথিবী
পৃথিবী তার অক্ষের চারদিকে ঘুরছে বা আবর্তিত হচ্ছে। এটি দিন এবং রাত দ্বারা প্রমাণিত। নিরক্ষরেখায় পৃথিবীর পূর্বমুখী গতিবেগ টেমপ্লেট:রূপান্তর।[৯] একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবী সূর্যের চারদিকেও প্রদক্ষিণ করছে। সূর্যের চারপাশে একটি সম্পূর্ণ পরিভ্রমণে এক বছর বা প্রায় ৩৬৫ দিন সময় নেয়; এবং কক্ষপথ বরাবর গড় দ্রুতি টেমপ্লেট:রূপান্তর।[১০]
মহাদেশ
ভূত্বকীয় পাত সংস্থান তত্ত্ব অনুযায়ী মহাদেশগুলি মেন্টলের মধ্যে পরিচলন স্রোতের ফলে প্রায় ২.৫৪ সেন্টিমিটার (১ ইঞ্চি) প্রতিবছর এর ধীর গতিতে গ্রহের পৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।[১১][১২] যদিও পাতগুলির গতি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। দ্রুততম চলমান পাতগুলি হলো সমুদ্রীয় পাতগুলি, যা মধ্যে কোকোস পাতটি প্রতি বছর টেমপ্লেট:রূপান্তর অগ্রসর হচ্ছে [১৩] এবং প্রশান্ত পাতটি প্রতিবছর টেমপ্লেট:রূপান্তর চলাচল করছে। সবচেয়ে ধীরে চলমান হলো ইউরেশীয় পাতটি, যা প্রতিবছর প্রায় টেমপ্লেট:রূপান্তর অগ্রসর হচ্ছে।
শরীরের অভ্যন্তর
সারা শরীরে রক্ত সরবরাহের জন্য মানুষের হৃৎপিণ্ড ক্রমাগত সংকোচন প্রসারন করে চলেছে। দেহের বৃহৎ শিরা এবং ধমনীর মধ্য দিয়ে রক্ত প্রায় ০.৩৩ মিটার প্রতি সেকেন্ড দ্রুতিতে চলাচল করে। যদিও এই মানে যথেষ্ট বৈচিত্র রয়েছে এবং ভ্যানাকাভায় রক্তের সর্বোচ্চ গতি টেমপ্লেট:রূপান্তর পাওয়া গেছে।[১৪] এছাড়া অভ্যন্তরীণ ফাঁপা অঙ্গগুলির মসৃণ পেশীগুলিও চলমান। এর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত হলো পেরিস্টালসিস সংঘটিত হওয়া যেখানে হজমকৃৎ খাদ্য পরিপাক নালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। যদিও বিভিন্ন খাবার শরীরের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন হারে চলাচল করে তবে মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্য দিয়ে গড় গতি টেমপ্লেট:রূপান্তর।[১৫] মানব লসিকাতন্ত্র অবিচ্ছিন্নভাবে শরীরের অতিরিক্ত তরল, লিপিড এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বস্তুসমূহের চলাচল ঘটাচ্ছে। ত্বকের একটি লসিকা কৈশিকের মধ্য দিয়ে লসিকা প্রায় ০.০০০০০৯৭ মিটার প্রতি সেকেন্ড বেগে চলাচল করতে দেখা গেছে।[১৬]
কোষ
মানব দেহের কোষে অনেক কাঠামো থাকে যা কোষজুড়ে চলাচল করে। সাইটোপ্লাজমীয় প্রবাহ এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে কোষগুলি সাইটোপ্লাজমের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন আণবিক পদার্থ পরিবহন করে,[১৭] বিভিন্ন মোটর প্রোটিন একটি কোষের মধ্যে আণবিক মোটর হিসাবে কাজ করে এবং বিভিন্ন কোষীয় স্তর যেমন মাইক্রোটিউবিউল পৃষ্ঠের সাথে চলাচল করায় এবং মোটর প্রোটিনগুলি সাধারণত অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেটের (এটিপি) হাইড্রোলাইসিস দ্বারা চালিত হয় এবং রাসায়নিক শক্তিকে যান্ত্রিক কাজে রূপান্তরিত করে।[১৮] মোটর প্রোটিন দ্বারা চালিত ভেসিকলগুলির বেগ প্রায় ০.০০০০০১৫২ মিটার প্রতি সেকেন্ড।[১৯]
কণা
তাপগতিবিদ্যার সূত্রানুসারে, যতক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা পরম শূন্যের উপরে থাকে পদার্থের সমস্ত কণাগুলি নিরবচ্ছিন্ন এলোমেলো গতিতে থাকে চলতে থাকে। একইভাবে মানব দেহের গাঠনিক অণু এবং পরমাণুগুলি স্পন্দিত হচ্ছে, সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে এবং চলমান অবস্থায় রয়েছে। এই গতি তাপমাত্রা হিসাবে শনাক্ত করা যেতে পারে; উচ্চতর তাপমাত্রা, যা কণাগুলিতে বৃহত্তর গতিশক্তির প্রতিনিধিত্ব করে, স্পর্শ করলে তাপীয় শক্তি স্নায়ুতে স্থানান্তরিত হয় এবং মানুশ গরম অনুভব করে। একইভাবে যখন নিম্ন তাপমাত্রার বস্তু স্পর্শ করা হয় তখন শরীর থেকে তাপ বস্তুতে স্থানান্তরিত হয় এবং ঠান্ডা অনুভূত হয়।[২০]
অতিপারমাণবিক কণা
প্রতিটি পরমাণুর মধ্যেই নিউক্লিয়াসের আশেপাশের একটি অঞ্চলে ইলেকট্রন বিদ্যমান থাকে। এই অঞ্চলটিকে ইলেকট্রন মেঘ বলা হয়। পরমাণুর বোর মডেল অনুযায়ী, ইলেকট্রনগুলি উচ্চ গতিগতিসম্পন্ন এবং নিউক্লিয়াস যত বড় হয় তারা তত দ্রুত গতিতে ঘুরতে থাকে। যদি ইলেকট্রনগুলি ইলেকট্রন মেঘের মধ্য দিয়ে সূর্যের চারপাশে গ্রহগুলির নির্দিষ্ট কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করার মতো একইভাবে কক্ষপথে চলাচল করে, তবে ইলেকট্রনের বেগ আলোর বেগকে ছাড়িয়ে যাবে। যাদিও এমন কোনও কারণ নেই যে এই ধারণার মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হবে যে ইলেক্ট্রনগুলি বৃহৎ বস্তুর মতো একইভাবে পথে চলাচল করে। এমন ধারণা করা যেতে পারে যে ইলেকট্রনগুলি এমন 'কণা' যা ইলেকট্রন মেঘের সীমার মধ্যে খেয়ালখুশিমত অবস্থান করতে পারে।[২১] পারমাণবিক নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে প্রোটনগুলির বৈদ্যুতিক বিকর্ষণ এবং উভয় কণার কৌণিক ভরবেগের কারণে প্রোটন এবং নিউট্রনগুলিও সম্ভবত চলাচল করছে।[২২]
আলো
টেমপ্লেট:মূল নিবন্ধ শূন্যে আলোর বেগ ২৯৯,০০০,০০০ মিটার প্রতি সেকেন্ড বা টেমপ্লেট:রূপান্তর। শূন্যস্থানে আলোর বেগই (বা c) হলো সমস্ত ভরবিহীন কণা এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলির গতি এবং শক্তি, পদার্থ, তথ্য বা কার্যকারণ যে গতিতে ভ্রমণ করতে পারে তার সর্বোচ্চ সীমা। শূন্যস্থানে আলোর গতিই হলো সমস্ত ভৌত ব্যবস্থার গতির সর্বোচ্চ সীমা।
এছাড়া আলোর গতি একটি অপরিবর্তনীয় পরিমাণ: এটি পর্যালোকের অবস্থান বা গতি নির্বিশেষের উপর নির্ভরশীল নয়। এই বৈশিষ্ট আলোর গতিকে একটি মৌলিক ধ্রুবক এবং প্রাকৃতিক পরিমাপের এককে পরিণত করেছে।
ত্বরণ
ত্বরণ হলো একক সময়ে বেগ বৃদ্ধির হার। অর্থাৎ একক সময়ে যতটুকু বেগ বৃদ্ধি পায় তাই হলো ত্বরণ।
যেখানে a হলো ত্বরণ,v হলো শেষ বেগ,u হলো আদিবেগ এবং t দ্বারা সময় বুঝায়।
বিভিন্ন প্রকর গতি
- সরল স্পন্দন গতি – (যেমন, সরল দোলকের গতি)
- রৈখিক গতি – এই গতি সরলরেখা বরাবর সম্পাদিত হয় যেখানে বস্তুটির সরণ তার ভ্রমণপথকে অনুসরণ করে।
- প্রত্যাগমনী গতি – কোন বস্তু একটি রেখা বরাবর সামনে-পিছনে (up-down) যাওয়া আসা করলে এ গতিকে প্রত্যাগমনী গতি বলা হয়। যেমন, পিস্টনের গতি।
- ব্রাউনীয় গতি – (যেমন, কণার বিক্ষিপ্ত গতি)
- বৃত্তীয় গতি – (যেমন, গ্রহসমূহের আবর্তন গতি)
- বক্ররৈখিক গতি – একে বক্ররেখা বরাবর গতি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যা সমতলীয় বা ত্রিমাত্রিক হতে পারে।
- ঘূর্ণন গতি - (যেমন - ঘড়ির কাটার গতি)
- চলন গতি – (যেমন– রাস্তায় উপর কোন চাকার গতি)
- স্পন্দন গতি – পর্যাবৃত্ত গতি সম্পন্ন কোন বস্তুকণা যদি এর পর্যায়কালের অর্ধেক সময় একটি নির্দিষ্ট দিকে এবং বাকি অর্ধেক সময় পূর্বগতির বিপরীত দিকে চলে তবে এটি হবে স্পন্দন গতি। যেমন: একটি স্প্রিংকে স্বল্প ব্যবধানে টেনে ছেড়ে দিলে এর গতি স্পন্দন গতি হবে।
- কম্পন গতি
- সমন্বিত বা যুগপৎ গতি – এ ধরনের গতি উপরে বর্ণিত একাধিক গতির সমন্বিত রূপ
- প্রাসের গতি – (যেমন– অনুভূমিকের সাথে তির্যকভাবে নিক্ষিপ্ত বস্তুর গতি; এখানে বস্তুর অনুভূমিক বরাবর সমবেগ ও উলম্ব বরাবর ত্বরিত গতি থাকে)
- পরমাণুর কক্ষপথে ইলেকট্রনের গতি। বলা যায় যে, এটা ঘূর্ণন গতি। কিন্তু পরমাণুতে উপবৃত্তাকার কক্ষপথ ও রয়েছে।
মৌলিক গতি
- রৈখিক গতি
- বৃত্তীয় গতি
- স্পন্দন গতি
- তরঙ্গ
- ভরবেগ
- আপেক্ষিক বেগ
- মৌলিক গতি
- সরল স্পন্দন গতি
আরও দেখুন
- সৃতিবিদ্যা
- সরল যন্ত্র
- সৃতিবিদ্যা শিকল
- ক্ষমতা
- যন্ত্র
- গতি (জ্যামিতি)
- নড়াচড়া ধারণ
- সরণ
- অনূদিত গতি
- বেগ
- স্থিতি
- দ্রুতি
- বল
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ Newton's "Axioms or Laws of Motion" can be found in the "Principia" on p. 19 of volume 1 of the 1729 translation.
- ↑ টেমপ্লেট:বই উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ Ask an Astrophysicist. NASA Goodard Space Flight Center.
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:সাময়িকী উদ্ধৃতি
- ↑ Temperature and BEC. টেমপ্লেট:ওয়েব আর্কাইভ Physics 2000: Colorado State University Physics Department
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি
- ↑ টেমপ্লেট:ওয়েব উদ্ধৃতি